আন্তর্জাতিক
‘২,০০০ নারী ও বালিকাকে অপহরণ করেছে বোকো হারাম’
২০১৪ সালের বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত বোকো হারাম জঙ্গিরা অন্ততপক্ষে ২,০০০ নারী ও বালিকাকে অপহরণ করেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। অপহৃত এসব বালিকা ও নারীকে বাবুর্চি, যৌনদাসী ও যোদ্ধায় পরিণত করা হয়। আর যারা এসবে সম্মত হয়নি তাদের মেরে ফেলা হয়েছে বলে মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে। নাইজেরিয়ার চিবোক থেকে ২০০ স্কুল ছাত্রীকে অপহরণের এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর প্রতিবেদনটি প্রকাশ করল মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি। ৯০ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদনটি প্রত্যক্ষদর্শী ও বোকো হারামের কবল থেকে পালিয়ে আসা অপহৃতদের সাক্ষাতকারের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। অপহৃতদের উদ্ধারে পশ্চিমাদের সহায়তার প্রতিশ্র“তি ও অপহৃতদের মুক্তিতে চাদের মধ্যস্থতা করার উদ্যোগ সত্ত্বেও অধিকাংশকে উদ্ধার বা মুক্ত করা সম্ভব হয়নি। বোকো হারাম নেতা আবুবকর শেকাউ দাবি করেছেন, ওই বালিকারা তার যোদ্ধাদের “বিয়ে করে নিয়েছে”। অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনো শহরের দখল নিলেই বোকো হারাম সেখানকার মেয়ে ও নারীদের জড়ো করে তারপর বাড়িতে বা কারাগারে আটক করে রাখে। সাক্ষাৎকারে বোকো হারামের কবল থেকে পালিয়ে আসা ১৯ বছরের এক তরুণী জানিয়েছে, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে একটি বিয়ের আসর থেকে কনে, কনের বোনসহ তাকে অপহরণ করেছিল বোকো জঙ্গিরা। তাদের মাদাগালির একটি প্রশিক্ষণ শিবিরে নিয়ে আটক রাখা হয়। ওই শিবিরে কয়েকশত নারী যোদ্ধা ছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি। “যে মেয়েদের গুলি করার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল আমি তাদের একজন ছিলাম। কীভাবে বোমা ব্যবহার করতে হয় ও কী কায়দায় একটি গ্রামে হামলা চালাতে হয়, সেই প্রশিক্ষণও পেয়েছিলাম আমি,” বলেন ওই তরুণী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই তরুণী জানিয়েছেন, তাকে অনেকবার দলগতভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে, আর যারা ইসলামধর্ম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে অথবা বোকো হারামের হয়ে লড়াই করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তাদের মেরে গণকবরে পুঁতে ফেলা হয়েছে। প্রতিবেদনের লেখক দানিয়েল আইরি বলেছেন, “এইসব ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ, যৌন সহিংসতা, শিশুসেনা সংগ্রহ, এগুলো যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ। এসবের তদন্ত হওয়ার দরকার।”