আন্তর্জাতিক
জাতিসংঘে ভোটে ইয়েমেনে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাব
ইয়েমেনের অধিকাংশ এলাকা দখল করে নেয়া শিয়া হুতি বিদ্রোহীদের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের একটি প্রস্তাবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভোট নেয়া হবে। প্রস্তাবিত এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্টের ছেলে, শিয়া হুতি আন্দোলনের এক নেতাও রয়েছেন। মঙ্গলবার এই ভোটভুটির কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কূটনীতিকরা। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশ জর্দান ও উপসাগরীয় আরব দেশগুলো খসড়া ওই প্রস্তাবটি পেশ করেছে। প্রস্তাবের বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের অন্যতম স্থায়ী সদস্য রাশিয়া কীভাবে সাড়া দেবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এরআগে আশু অস্ত্রবিরতি ও ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আব্দ-রাব্বু মনসুর হাদির সরকারসহ দেশটির সবপক্ষের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার প্রস্তাব করেছিল রাশিয়া। কিন্তু তা সফল হয়নি। প্রস্তাবটির প্রতি রাশিয়া সমর্থন দেবে, না ভোটাভুটির সময় অনুপস্থিত থাকবে, না প্রস্তাবটিতে ভেটো দেবে, সোমবার এমন প্রশ্নে রুশ মিশন কোনো মন্তব্য করেনি। খসড়া প্রস্তাবটিতে ইয়েমেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আলি আব্দুল্লাহ সালেহর পুত্র ও ইয়েমেনের অভিজাত রিপাবলিকান গার্ডের সাবেক প্রধান আহমেদ সালেহ ও হুতি আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা আব্দুলমালিক আল-হুতির প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান করা হয়েছে। ওই দুজনের প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি হলে বিশ্বব্যাপী এ দুজনের সম্পদ জব্দ করা হবে এবং এদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। নভেম্বরে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট সালেহ ও অপর দুজন শীর্ষ হুতি নেতা, আব্দ আল খালিক আল-হুতি ও আব্দুল্লাহ ইয়াহিয়া আল হাকিমকে কালোতালিকাভুক্ত করেছিল নিরাপত্তা পরিষদ। এবারের প্রস্তাবে এই পাঁচজনের ওপর ও “ইয়েমেনে তাদের হয়ে যারা কাজ করছেন বা তাদের নির্দেশে যারা পরিচালিত হচ্ছেন” তাদের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কথা বলা হয়েছে। যেহেতু ইয়েমেন সেনাবাহিনীর বৃহত্তর অংশটি সাবেক প্রেসিডেন্ট সালেহর অনুগত এবং তারা হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে লড়াইয়ের নেমেছে, তাই এ প্রস্তাব পাস হলে এই ব্যক্তিদের সঙ্গে তাদের অনুগত হিসেবে সেনাবাহিনীর বৃহত্তর অংশ ও হুতি বিদ্রোহীদের ওপরও অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে যাবে। প্রস্তাবে “সদস্য দেশগুলোর প্রতি, নির্দিষ্টভাবে ইয়েমেনের প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতি, ইয়েমেনের দিকে যাওয়া সব কার্গো পরীক্ষা করার” আহ্বান জানানো হয়েছে, বিশেষভাবে আরব উপদ্বীপের দরিদ্র ওই দেশটিতে অস্ত্র নেয়া হচ্ছে বলে সন্দেহ দেখা দিলে। প্রস্তাবে হুতিদের লড়াই বন্ধ করে রাজধানী সানাসহ তাদের দখলকৃত এলাকা ছেড়ে যাওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। এতে সাবেক প্রেসিডেন্ট সালেহর “হুতিদের বিদ্রোহ সমর্থন করা” সহ দেশটিকে “অস্থিতিশীল করার প্রচেষ্টায়” উদ্বেগ জানানো হয়েছে। ২৬ মার্চ থেকে প্রতিবেশী ইয়েমেনের ইরানপন্থি শিয়া হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করে সৌদি আরব ও তার মিত্র সুন্নি উপসাগরীয় আরব দেশগুলো। ইয়েমেন হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটে অস্ত্র সরবরাহের গতি বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে গেল সপ্তাহে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলা সমর্থন করে পরোক্ষ সহযোগিতা দিচ্ছে দেশটি। ইয়েমেনে নতুন সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়ে সোমবার দেশটির রাজনৈতিক পরিবর্তনে সহায়তা করার প্রস্তাব দিয়েছে ইরান।
জাতিসংঘে ভোটে ইয়েমেনে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাব