Connect with us

জাতীয়

রক্তাক্ত পিলখানা হত্যাকাণ্ড দিবস আজ

Avatar photo

Published

on

bgbনিজস্ব প্রতিবেদক:
আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবার। পিলখানা হত্যাকাণ্ডপিলখানা ট্রাজেডির সাত বছর পার হলো আজ। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর-এর (বর্তমানে বিজিবি- বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) বিপথগামী সদস্যরা পিলখানায় নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। এই দু’দিনে তারা ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। বিদ্রোহী সদস্যদের হাতে বিডিআর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদও নিহত হন। বিদ্রোহীদের হাত থেকে রেহাই পাননি ডিজির স্ত্রী,বাসার কাজের মেয়ে ও বেড়াতে আসা আত্মীয়স্বজনও।
নৃশংস এই ঘটনার পর বিডিআর আইনে মোট ৫৭টি মামলা দায়ের হয়। এই মামলার রায় ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। অভিযুক্তদের অনেকে ইতোমধ্যে সাজাভোগ করে বের হয়েও গেছে। নিম্ন আদালতেও হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন হয়েছে ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। সাজাপ্রাপ্তরা উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন।অপরদিকে, বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়েরকৃত মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। যাদের মধ্যে বিডিআরের (বর্তমান বিজিবি) তৎকালীন ডিজি মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদও ছিলেন। সেই দিন উচ্ছৃঙ্খল কিছু জওয়ান তৎকালীন ডিজ’র স্ত্রীসহ সামরিক-বেসামরিক আরও ১৭ জন মানুষকে হত্যা করে। ইতোমধ্যে সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন হয়েছে। শেষ হয়েছে বিদ্রোহের বিচারও। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা মামলার বিচার প্রক্রিয়াও সামনে এগুচ্ছে।
কিন্তু সেদিনের ক্ষত শুকায়নি এখনো। ভয়াল সেই তাণ্ডবের কথা মনে পড়লে আজো আঁতকে ওঠেন মানুষ। ভারী অস্ত্র ও গুলির শব্দে সেদিন যেভাবে প্রকম্পিত হয়েছিলো পিলখানা; সে কথা মনে পড়লে মানুষের অন্তরাত্মা আজো কাঁপে ওঠে।বিডিআর বিদ্রোহের বিচার হয়েছে। বিচার হয়েছে ওইদিনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের। কিন্তু মানুষ সেই দিনের নির্মমতা আজো ভুলতে পারেনি। সেই বীভৎস দৃশ্য, মাটিচাপা লাশ, সেনা কর্মকর্তাদের ক্ষতবিক্ষত দেহ-চোখেন সামনে ভেসে উঠতেই আঁতকে ওঠে মানুষ। এখনো বাতাসে ভাসছে স্বজনহারাদের কান্না। শুধু হত্যা করেই নরপশুরা খান্ত হয়নি। অফিসারদের স্ত্রী-সন্তান এবং বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজনকে আটকে রেখে নির্মম নির্যাতনও চালায় তারা।তাদের বাড়ি-গাড়ী, আসবাবপত্র এবং অন্যান্য সম্পদে আগুন ধরিয়ে দেয় বিপথগামী জওয়ানরা।
আলামত নষ্ট করতে প্রথমে লাশগুলো পুড়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়। ব্যর্থ হয়ে লাশগুলো মাটিচাপা এবং ম্যানহোলের মধ্যে ফেলে দেয় তারা। উচ্ছৃঙ্খল জওয়ানরা অস্ত্রাগার লুট করে সেই অস্ত্র দিয়েই সেনা অফিসারদের হত্যা করে। ২৫ তারিখ বিভিন্ন সেক্টরের কর্মকর্তা ও জওয়ানরা বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) সপ্তাহ উপলক্ষে এসেছিলেন ঢাকার পিলখানায়। আগের দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিলখানায় বিডিআর সপ্তাহ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজে অংশ নেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত সদস্যদের মাঝে ভালো কাজের জন্য পদক প্রদানের কথা ছিলো।
দরবার হলের সেই অনুষ্ঠানে প্রায় আড়াই হাজার বিডিআর সদস্য উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত শেষে বাংলা অনুবাদ যখন শেষ হয়, ঠিক তখনই সিপাহী মইন দরবার হলের রান্না ঘরের পাশ দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে মেজর জেনারেল শাকিলের দিকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে।
অতিরিক্ত ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বারিসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা মইনকে আটক করেন। মইনকে আটকের সঙ্গে সঙ্গে ‘জাগো’ বলে বিডিআর জওয়ানরা দরবার হল ত্যাগ শুরু করে। ডিজি তখন তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, তাদের দাবি দাওয়া শুনবেন তিনি। কিন্তু মুহুর্তেই দরবার হল শূন্য হয়ে যায়। এক পর্যায়ে জওয়ানদের সবাই যখন দরবার হল ত্যাগ করে তখন বাইরে থেকে এলোপাতারি গুলি শুরু হয়। কর্মকর্তারা বিভিন্নভাবে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন।
অনেকেই হলরুমের ভেতরে গোপন স্থানে অবস্থান নেন। সেসব স্থান থেকে তাদেরকে খুঁজে বের করে জওয়ানরা হত্যা করে। বিডিআর ঢাকা সেক্টরের তৎকালীন কমান্ডার কর্ণেল মজিবুল হককে ৩৬ রাইফেল ব্যাটালিয়নের চার তলার এক কক্ষে হত্যা করে তার লাশ ফেলে দেয় নিচে। এভাবে একে একে হত্যা করা হয় সেনা কর্মকর্তাদের।
লুটপাট অগ্নিসংযোগসহ নানা অপকর্মে মেতে ওঠে বিডিআর জওয়ানরা। এসবই করেছে অস্ত্রাগার থেকে লুন্ঠিত অস্ত্র ও গোলাবারুদ ব্যবহার করে। শুরুতেই তারা কোত ভেঙ্গে অস্ত্র এবং ম্যাগজিন ভেঙ্গে গুলি তাদের হেফাজতে নিয়ে নেয়। ভারী আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। আতংকে আশপাশের কয়েক কিলোমিটারের বাসিন্দারা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন।
তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনসহ অনেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সামরিক-বেসামরিক বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। কিন্তু ভারী আগ্নেয়াস্ত্রের সামনে তারা ছিলেন পুরোপুরি অসহায়। বিদ্রোহীদের তাণ্ডবে প্রাণের ভয়ে পিলখানার আশপাশেও কেউ যেতে পারেননি। বিকেলে দূর থেকে হ্যান্ডমাইকে বিদ্রোহীদের সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা দেন তৎকালীন এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক। মাইকে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিদ্রোহীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করবেন। তিনি সবাইকে অস্ত্র সমর্পন করতে বলেছেন।
সন্ধ্যার দিকে ডিএডি তৌহিদের নেতৃত্বে বিডিআরের ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবনে গিয়ে সাক্ষাত করেন। দুই ঘন্টারও বেশী সময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা ও তাদের দাবি দাওয়া পূরণের আশ্বাস নিয়ে তারা পিলখানায় ফিরে যান। এরপরও তারা অস্ত্র সমর্পন ও বন্দীদের মুক্তি দেয়নি। মধ্যরাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের সঙ্গে বৈঠক করে বিদ্রোহীরা অস্ত্র সমর্পণ শুরু করে। কিন্তু পরদিনও থেমে থেমে গুলির শব্দ আসতে থাকে।
২৬ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টায় তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেন, পরিস্থিতি শান্ত, সবাই অস্ত্র সমর্পণ করেছে। এদিকে, ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় লাশ উদ্ধার। একের পর এক উদ্ধার হতে থাকে সেনা কর্মকর্তাদের লাশ। ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১২ টা পর্যন্ত উদ্ধার হয় ১৫ টি লাশ। এভাবে উদ্ধার হয় ৫৭ সেনা কর্মকর্তা ও সামরিক-বেসামরিকসহ মোট ৭৪ জনের লাশ।
বিদ্রোহের বিচার ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। নিম্ন আদালতে হত্যা মামলারও বিচার শেষ হয়েছে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ওই বছরের ৬এপ্রিল নিউমার্কেট থানায় দায়ের করা মামলায় ২০১১ সালের ১২ ও ২৭ জুলাই বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন পিন্টুসহ ৮২৪ জনকে অভিযুক্ত করে হত্যাকাণ্ড ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পৃথক দু’টি চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি। এদের মধ্যে বিডিআরের বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত বেসামরিক আসামি ছিলেন ৪০ জন।
২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি এই দু’টি চার্জশিট আদালত আমলে নেন। ৩ ফেব্রুয়ারি মামলার চার্জ গঠনের দিন ধার্য ছিলো। ওইদিন সরকার পক্ষের আইনজীবীরা আদালতে মামলার অধিকতর তদন্তের আবেদন করেন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে ৩ মার্চ পরবর্তী দিন ধার্য করেন এবং এরমধ্যে অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে ২১ মার্চ এই মামলায় আরো ২৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর এই মামলার বিচার কার্য সম্পন্ন হয় বকশিবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের বিশেষ আদালতে।
এতে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন ও ২৬২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। আর খালাস দেয়া হয় ২৭১ জনকে। ৮৫০ জন আসামির মধ্যে ৪ জন বিচার শেষ হওয়ার আগেই মৃত্যুবরণ করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করেন সাজাপ্রাপ্তরা। উচ্চ আদালতে ওই মামলা এখন বিচারাধীন। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। এই পর্যন্ত ২৭ জন ওই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, বিদ্রোহের পর বিডিআর আইনে মোট ৫৭টি মামলা হয়। ৫৭টি মামলায় মোট আসামি ৬ হাজার ৪১ জন। ২০১২ সালের ২০ অক্টোবর সদর ব্যাটালিয়নের বিচার কার্যের মধ্যদিয়ে বিদ্রোহের বিচার শেষ হয়। আসামিদের মধ্যে মোট ৫ হাজার ৯২৫ জনের শাস্তি হয়েছে। খালাস পেয়েছেন ১১৫ জন জওয়ান। অব্যাহতি পেয়েছে ৫ জন। অব্যাহতি প্রাপ্তদের অনেকেই বিচার চলাকালীন সময়ে মারা গেছেন। মোট ১১টি আদালতে বিদ্রোহের বিচার চলে। ঢাকায় ছিলো মোট ১১টি মামলা। ঢাকায় আসামির সংখ্যা ছিলো ৪ হাজার ৮৯ জন। এর মধ্যে সাজা হয়েছে ৪ হাজার ৩৩ জনের।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Highlights

ফরিদপুরে হেযবুত তওহীদের নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত

Avatar photo

Published

on

“জড়তা, অন্ধত্ব, সংকীর্ণতা, ধর্মব্যবসা, বাড়াবাড়ির বিরুদ্ধে নারীকেই জাগতে হবে, জাগাতে হবে” শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে ফরিদপুর জেলা হেযবুত তওহীদ।

রবিবার সকাল ১০ টায় ফরিদপুর সদর, ঝিলটুলি, অম্বিকা মেমোরিয়াল হলরুমে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বরিশাল মহানগর নারী বিষয়ক সম্পাদক অনামিকা হক এর সঞ্চালনায় ও ফরিদপুর জেলা নারী সম্পাদক সুস্মিতা জামান এর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় নারী সম্পাদক রূফায়দাহ পন্নী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ফরিদপুর পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা আসনের ১৫,২০,২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ফরিদপুর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও টি এন সি সি এর সদস্য নাহার যুবায়ের কণা, হেযবুত তওহীদের বরিশাল বিভাগীয় আমির মোঃ আল আমিন সবুজ, বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব মিয়া, হেযবুত তওহীদের বরিশাল বিভাগীয় নারী সম্পাদক আসমা আক্তার, হেযবুত তওহীদের ঢাকা বিভাগীয় নারী সম্পাদক তাসলিমা ইসলাম এবং ফরিদপুর জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মাহবুবুল আলম নিক্কন প্রমূখ।

প্রধান অতিথি বলেন, নারীরা একটি জাতির অর্ধেক জনসংখ্যা। সেই নারীদেরকে পশ্চাৎপদ রেখে জাতির উন্নতি, প্রগতি সম্ভব নয়। জাতির কাক্সিক্ষত উন্নতি পেতে হলে নারীদেরকে যথাযথ যোগ্যতা ও মেধানুযায়ী সমাজে সকল ক্ষেত্রে অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে হবে। উগ্রবাদ, ধর্মব্যবসা,অপরাজনীতি, হুজুগ, গুজব, ধর্মান্ধতা, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাসহ সকল অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা ও আদর্শ মানবজাতির কাছে তুলে ধরে আসছে হেযবুত তওহীদ। আর এ মহান কাজে পুরুষদের পাশাপাশি হেযবুত তওহীদের নারীরাও নিজেদের যোগ্যতা ও মেধা অনুযায়ী অংশগ্রহণ করে নিঃস্বার্থভাবে দেশ ও জাতির কল্যানে অবদান রেখে যাচ্ছে। হেযবুত তওহীদের নারীদেরকে মনে রাখতে হবে, ধর্মের নামে যাবতীয় জড়তা, অন্ধত্ব, সংকীর্ণতা, ধর্মব্যবসা, বাড়াবাড়ির বিরুদ্ধে নারীকেই জাগতে হবে, জাগাতে হবে।

Continue Reading

Highlights

রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিদেশী শক্তির হস্তক্ষেপ থেকে জাতিকে নিরাপদ রাখার শপথ কুমিল্লা হেযবুত তওহীদের

Avatar photo

Published

on

‘রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিদেশী শক্তির হস্তক্ষেপ থেকে জাতিকে নিরাপদ রাখতে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা করেছে অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদের কুমিল্লা জেলা শাখা। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার আগমন ফুড পার্ক এন্ড কমিউনিটি সেন্টারে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

কুমিল্লা জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য প্রকৌশলী রাকীব আল হাসান। বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন।

সাবেক কুমিল্লা জেলা সভাপতি ওমর ফারুকের সঞ্চালনায় এবং জেলা সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল কবির ও লাকসাম উপজেলা সভাপতি মো. সুজন, লালমাই উপজেলা সভাপতি আবু রায়হানসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যম কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা প্রকৌশলী রাকীব আল হাসান বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিদেশী শক্তির অপতৎপরতা বেড়েই চলছে। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র এই দেশে বিদেশী শক্তির হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই দেশের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না। এ পর্যন্ত পশ্চিমা পরাশক্তি দেশগুলো ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া, লিবিয়াসহ যেসব দেশে হস্তক্ষেপ করেছে সবগুলো দেশকে তারা মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। আরেক দিকে রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতার লড়াই দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। কাজেই আমাদের যাবতীয় সহিংসতা ও বিদেশী শক্তির হস্তক্ষেপ থেকে মাতৃভূমি বাংলাদেশকে নিরাপদ রাখার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ আলোচক নিজাম উদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন, যে কোনো সংকটের সমাধান ইসলাম দিয়েই সম্ভব কিন্তু ইসলামের সেই প্রকৃত রূপ কারও কাছে নেই। মহান আল্লাহ দয়া করে সেটা হেযবুত তওহীদকে দান করেছেন। আমরা প্রকৃত ইসলামের আদর্শ দিয়ে একটা নোয়াখালীতে একটা শান্তিপূর্ণ সমাজ নির্মাণ করে দেখিয়েছি। যে আদর্শ একটা ছোট্ট সমাজকে শান্তিপূর্ণ করতে পারে ইনশাআল্লাহ সেই আদর্শ দিয়ে শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ে তোলাও সম্ভব হবে। এই মহতী কাজে সকলকে আমরা সাথে চাই।

এরআগে এদিন সকালে অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন হাফেজ মাওলানা জসিম উদ্দিন শাকিল। অনুষ্ঠানে লাকসাম উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিপুল সংখ্যক মানুষ আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে চাষীরহাট উন্নয়ন প্রকল্পের উপর একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

Continue Reading

Highlights

‘দেশের অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে উগ্রবাদের মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান’

Avatar photo

Published

on

স্টাফ রিপোর্টার:
দেশের অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে উগ্রবাদের মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হেযবুত তওহীদের শীর্ষ নেতা ও ইমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। শনিবার দিনব্যাপী ময়মনসিংহে টাউনহল মোড়স্থ এ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত হেযবুত তওহীদের ময়মনসিংহ বিভাগীয় কর্মী সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি। “বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও অস্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য উগ্রবাদ মোকাবেলায় করণীয় শীর্ষক” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এ কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করে ময়মনসিংহ জেলা হেযবুত তওহীদ।

ময়মনসিংহ বিভাগীয় সভাপতি রহমত উল্লাহ রানার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, হেযবুত তওহীদের শীর্ষনেতা হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় কমিটির নারী বিষয়ক সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, ময়মনসিংহ বিভাগীয় নারী সম্পাদিকা রোজিনা আক্তার, ময়মনসিংহ জেলা সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান হাবিব, শেরপুর জেলা সভাপতি মোমিনুর রহমান পান্না, জামালপুর জেলা সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন, নেত্রকোনা জেলা সভাপতি আব্দুল কায়ইয়ুম প্রমুখ।

ভায় হেযবুত তওহীদের ইমাম বাংলাদেশকে অস্থিতিশীলতা ও সাম্রাজ্যবাদীদের কড়াল থাবা থেকে কোটি বাঙ্গালীকে রক্ষার জন্য দল-মত-নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, চলমান রাজনৈতিক সংঘাতের সুযোগ নিয়ে সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তিধর রাষ্ট্রগুলো যারা সাম্রাজ্য বিস্তারের নেশায় মত্ত, তারা বাংলাদেশের মানচিত্র খাবলে খাওয়ার জন্য শকুনের মত থাবা বিস্তারের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে জাতিকে রক্ষা করার জন্য তিনি দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে একটি মহান আদর্শের ভিত্তিতে ইস্পাত কঠিন ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “বর্তমান সমাজ, অন্যায়-অশান্তি, মিথ্যা, প্রতারণা, মাদক ইত্যাদিতে পরিপূর্ণ। সমাজের এই অধঃপতনের মূল কারণ আল্লাহকে ইলাহ বা হুকুমদাতা হিসেবে না মানা। সমাজের এই দূরাবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হলে মানবজাতিকে আবার আল্লাহকে ইলাহ এর আসনে বসাতে হবে। এককভাবে এই কাজ কখনোই সম্ভব নয়। তাই ঐক্যবদ্ধভাবে এই কাজে অংশগ্রহণের জন্য সকলকে আহ্বান জানান।”

দেশের বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য যারা দায়ী তাদের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, জাতিকে বাঁচাতে হলে অবিলম্বে কামড়াকামড়ির এই রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। কাঁদা ছোঁড়াছুড়ির এই রাজনীতি বন্ধ না হলে জাতির ধ্বংস অনিবার্য। বিশ্বজুড়ে চলমান এই ভোগবাদী শাসন ব্যবস্থা, বৈষম্যমূলক অর্থ ব্যবস্থার কড়া সমালোচনা করে বিশ্বময় চলমান যুদ্ধাবস্থা ও এর কারণে সৃষ্ট সঙ্কটময় পরিস্থিতির জন্য জাতিকে সতর্ক সচেনত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, লেবাসধারী এক শ্রেণির ভণ্ডআলেমদের স্বার্থবাদী উগ্র কর্মকাণ্ডের কারণে ইসলামের গায়ে আজ কালিমা লিপ্ত হয়েছে। আর এদের মুখোশ উন্মোচন করায় তারা হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে ওয়াজ মাহফিলে মিথ্যাচার, অপপ্রচার, প্রোপাগান্ডা চালিয়ে আসছে। তিনি উগ্রবাদী ধর্মব্যবসায়ীদের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে কোনো লাভ হবে না। হেযবুত তওহীদ সত্য নিয়ে এসেছে। মিথ্যার ধ্বংস এবার অনিবার্য। এসময় ধর্মব্যবসায়ীদের বিভিন্ন অপপ্রচারের কড়া জাবাব দেন হেযবুত তওহীদের এই নেতা।

ইসলামের স্বর্ণযুগে নারীদের অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, রসুলের যুগে নারীরা মসজিদ থেকে শুরু করে যুদ্ধের ময়দান পর্যন্ত গিয়েছেন। তারা শালীনতার সাথে সামাজিক, রাষ্ট্রীয় সকল কাজে অংশগ্রহণ করেছেন। পরবর্তীতে এক শ্রেণির ধর্মব্যবসায়ীরা ফতোয়াবাজি করে নারীদের ঘরবন্দী করেছে। ইসলাম নারীদের যে অধিকার মর্যাদা দিয়েছে তা হরণ করেছে। সকল মজলুম, অত্যাচারিত, নিপীড়িতদের প্রকৃত অধিকার ফিরিয়ে দিতে হেযবুত তওহীদের আগমন হয়েছে বলে মন্তব্য করেন এই বক্তা। এসময় তিনি সমস্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান এবং হেযবুত তওহীদের সদস্যদের আরও অগ্রগামী হওয়ার নির্দেশ দেন।

বিভাগীয় কর্মী সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, হেযবুত তওহীদের ময়মনসিংহ জেলা নারী সম্পাদিকা সাথী আক্তার পলি, নুসরাত জাহান পলি, পাপিয়া আক্তার, সুরমা আক্তারসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীবৃন্দ।

Continue Reading