কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি সামান্য হ্রাস; সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত
শাহ্ আলম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি সামান্য হ্রাস পেলেও ধরলা নদীর পানি এখনও বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বসতভিটা থেকে পানি নেমে না যাওয়ায় জেলার ৯ উপজেলার প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ ঘরে ফিরতে পারেনি। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাসীদের। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। অনেক পরিবার পাকা সড়ক ও বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধে আশ্রয় নিয়ে গবাদি পশুসহ মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। বন্যার পানির প্রবল ¯্রােতে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধ ও কাচা-পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ঠগের বাজার এলাকার মল্লিকা বেগম জানান, বাড়ীতে পানি, রান্না করে খাবো তার উপায় নাই। না খেয়ে আর কতক্ষন থাকি। এজন্য কলাগাছের ভেলায় রান্না করতেছি।
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের শুকিরপাড় গ্রামের কুদ্দুস আলী জানান, ছেলে-মেয়ে, গরু-ছাগল, হাস-মুরগী নিয়ে গত ৫ দিন ধরে বাধের ওপর আছি। এখন পর্যন্ত কোন সাহায্য পাই নাই। খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে। রৌমারী উপজেলার রৌমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক জানান, আমার ইউনিয়নের পুরোটাই বন্যার পানিতে তুলিয়ে গেছে। প্রায় ৩০ হাজার পানিবন্দি মানুষের জন্য মাত্র ১ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পেয়েছি। যা বিতরন করা হয়েছে। ত্রানের জন্য হাজার হাজার মানুষ বাড়ীতে ভীড় করছে। জেলা প্রশাসন থেকে বন্যার্তদের জন্য ৮০ মেট্রিক টন চাল ও ২ লাখ টাকা বিতরন করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। পর্যাপ্ত ত্রান তৎপরতা না থাকায় অনেক পরিবার খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে।
জেলা প্রশাসক খান মোঃ নুরুল আমীন জানান, বন্যার্তদের জন্য নতুন করে আরো ১০০ মেট্রিক টন চাল ও ২ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যা দ্রুত বিতরন করা হবে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি ১৩ সেন্টিমিটার হ্রাস পেলেও এখনও বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ১২ সেন্টিমিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশেরপত্র/এডি/আর