চট্রগ্রাম
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলনে তরুণরাসহ সকলকে সামিল হতে হবে
চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) ও এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক কবির বিন আনোয়ার বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরে দিন বদলের সনদ ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে। এগুলো হচ্ছে- দেশের সকল শিশুকে স্কুলে ভর্তি নিশ্চিত করা, সকলের জন্য নিরাপদ সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করে কলকারখানাগুলোতে কর্মস্থান বৃদ্ধি করা, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা, অস¤প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ দূর করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমরা এসব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করে যাচ্ছি। সেবা মানুষের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে সারাদেশে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) স্থাপন করা হয়েছে। গ্রামের মানুষকে ইউডিসি থেকে ২০-২৫ ধরনের সেবা এখনই দেয়া হচ্ছে। দেশের ৩৯টি জেলা ইতোমধ্যে অনলাইনের আওতায় এসেছে এবং ২৭ হাজার বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য পুত্র ও আইটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্প ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে সরকারের সকল প্রকার সেবা সহজীকরণসহ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলনে তরুণরাসহ সকলকে সামিল হতে হবে। এর মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়ে যারা শহীদ হয়েছিল এবং অজানা স্বপ্ন দেখেছিল একটি সুখী সমৃদ্ধশালী স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়া। তাঁদের সে সোনার বাংলা বাস্তবায়ন হবে। আজ ২৭ ফেব্র“য়ারি ২০১৬ ইং শনিবার বিকেল ৫টায় নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠে অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা-২০১৬ এর পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাংলাদেশের মানুষের জন্য প্রথমবারের একটি দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা জাতি হিসেবে কোথায় যেতে চাই, কি করতে চাই, তা নিয়ে জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ২০২১ সালে স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী পালনকালে বাংলাদেশ হবে একটি ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা, কুসংস্কার, সা¤প্রদায়িক হানাহানি মুক্ত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভিত্তিক, উদার গণতান্ত্রিক ও একটি মধ্যম আয়ের দেশ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সে সোনার বাংলাদেশ বাস্তবায়নের আমরা এখন আত্মনিয়োগ করেছি। তাই ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) দেবময় দেওয়ানের সভাপতিত্বে ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুরাইয়া আক্তার সুইটির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার পুরস্কার ও সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চুয়েটের কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মীর মু. সাক্বী কাওসার ও সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী। আলোচনা সভা শেষে মেলা আগত মোট ৮টি ক্যাটাগরিতে ১৪টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত ও সনদপত্র দেয়া হয়। এগুলো হচ্ছে- শ্রেষ্ঠ ডিজিটাল সেন্টার ২টি, শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৩টি, শ্রেষ্ঠ জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা ২ জন, শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ১ জন, শ্রেষ্ঠ তরুণ উদ্ভাবক ৩ জন, শ্রেষ্ঠ স্টল ১টি, শ্রেষ্ঠ ই-সেবা প্রদানকারী দপ্তর ১টি এবং শ্রেষ্ঠ পোর্টালের দপ্তর ১টি। একইসাথে ডিজিটাল মেলা উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়। তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় যেসব প্রতিষ্ঠান/ কর্মকর্তা শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেন সেগুলো হচ্ছে- শ্রেষ্ঠ জেলা পর্যায়ে কর্মকর্তা সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী, শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সনজিদা শরমিন (চন্দনাইশ), শ্রেষ্ঠ তরুণ উদ্ভাবক কৃষি অফিসার মো. শাহ আলম (মিরসরাই), যুব উন্নয়ন অফিসার শাকিলা খাতুন (হাটহাজারী), উদ্যেক্তা মো. বেলাল হোসেন (ইউডিসি সাতকানিয়া), শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেন্ট প্ল্যাসিডস স্কুল এন্ড কলেজ, আগ্রাবাদ সরকারি কলোনী উচ্চ বিদ্যালয় (বালক শাখা), বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনী উচ্চ বিদ্যালয়, শ্রেষ্ঠ ই-সেবা প্রদানকারী দপ্তর, মহানগর ভূমি অফিস (চান্দগাঁও সার্কেল), শ্রেষ্ঠ পোর্টালের দপ্তর জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, শ্রেষ্ঠ স্টল চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং শ্রেষ্ঠ ইউডিসি মো. শাহজাহান (লোহাগাড়া) এবং সোমা রানী দত্ত (রাঙ্গুনিয়া)। এছাড়া সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর আয়োজনে ‘রূপকল্প-২০২১: আমাদের অগ্রযাত্রা’ বিষয়ক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথি ও অন্যান্য অতিথিরা মেলায় আগত বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্টল গুলো পরিদর্শন করেন। সবশেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।