Connect with us

কবিতা

”তবুও বৃষ্টি আসুক” …..শফিকুল ইসলাম

Avatar photo

Published

on

tobu-x300

‘তবুও বৃষ্টি আসুক’ কবি শফিকুল ইসলামের তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ। গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে আগামী প্রকাশনী। তার কবিতা  আমি ইতিপূর্বে  পড়েছি । ভাষা বর্ণনা প্রাঞ্জল এবং তীব্র  নির্বাচনী। ‘তবুও  বৃষ্টি  আসুক’ গ্রন্থে  মোট ৪১ টি কবিতা  রচিত হয়েছে। প্রথম  থেকে শেষ  পর্যন্ত এ গ্রন্থ  পাঠ  করে  পূর্বেই  বলেছি, মন অনাবিল তৃপ্তিতে ভরে যায়। – ডঃ আশরাফ সিদ্দিকী, সাবেক মহাপরিচালক, বাংলা একাডেমী।

বইটির প্রথম কবিতায় মানবতাহীন এই হিংস্র পৃথিবীতে কবির চাওয়া বিশ্ব মানবের সার্বজনীন আকাংখা হয়ে ধরা দিয়েছে। কবি বলেছেন–

‘তারও আগে বৃষ্টি নামুক
আমাদের বিবেকের মরুভূমিতে-
সেখানে মানবতা ফুল হয়ে ফুটুক,
আর পরিশুদ্ধ হোক ধরা,হৃদয়ের গ্লানি…

                 (কবিতা:তবুও  বৃষ্টি  আসুক’)

প্রকৃতি, প্রেম, নারী, মুক্তিযোদ্ধা, মা এবং  সুলতা নামের এক  নারী  তার হৃদয়  ভরে রেখেছে। তাকে  কিছুতেই  ভোলা যায় না। মা তার  কাছে  অত্যন্ত  আদরের ধন। মাকে তার বারবার  মনে পড়ে।

মনে পড়ে  সুন্দরী  সুলতাকে, যে তার হৃদয়ে  দোলা দিয়েছিল। বেচারা তার জীবন, মৃত্যুহীন মৃত্যু  । তাই  তিনি  এখন ও  সুলতাকে  খুঁজেন । যার জন্য তিনি  অনন্তকাল  প্রতীক্ষায়  আছেন।  এই  প্রিয়তমা  তার হৃদয়-মন ভরে  আছে।  নদীর জল ও  তীরের মত  এক  হয়ে  মিশে  আছে । এই  প্রেম  বড়ই  স্বর্গীয়, বড়ই  সুন্দর । একে ভোলা যায় না। প্রকৃতি  আর  সুলতা  কখন   একাকার  হয়ে  যায়  হৃদয়ে।

কাব্যগ্রন্থটি পড়ে আমার খুব ভাল লেগেছে। বইটির ছাপা অত্যন্ত সুন্দর। ধ্রুব এষের প্রচছদ  চিত্রটি  অত্যন্ত  প্রশংসনীয়।

[গ্রন্থের নাম তবুও বৃষ্টি আসুক, লেখক শফিকুল ইসলাম। প্রচ্ছদ ধ্রুব এষ। প্রকাশকআগামী প্রকাশনী, ৩৬ বাংলাবাজার, ঢাকা১১০০ ফোন ৭১১১৩৩২, ৭১১০০২১ মোবাইল ০১৮১৯২১৯০২৪]

তবুও বৃষ্টি আসুক…শফিকুল ইসলাম

বহুদিন পর আজ
বাতাসে বৃষ্টির আভাস,
সোঁদা মাটির অমৃত গন্ধ-
এখনই বুঝি বৃষ্টি আসবে
সবারই মনে উদ্বেগ-
তাড়াতাড়ি ঘরে ফেরার ব্যস্ততা।
তবু আমার মনে নেই বৃষ্টি ভেজার উদ্বেগ
আমার চলায় নেই কোনো লক্ষণীয় ব্যস্ততা।

দীর্ঘ নিদাঘের পর
আকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির সম্ভাবনা
অলক্ষ্য আনন্দ ছড়ায় আমার তপ্ত মনে –
আর আমি উন্মুখ হয়ে থাকি
বৃষ্টির প্রতীক্ষায় –
এখনই বৃষ্টি নামুক
বহুদিন পর আজ বৃষ্টি আসুক।

দীর্ঘ পথে না থাকে না থাকুক বর্ষাতি –
বৃষ্টির জলে যদি ভিজে যায় আমার সর্বাঙ্গ
পরিধেয় পোশাক-আশাক-
তবুও বৃষ্টি আসুক –
সমস্ত আকাশ জুড়ে বৃষ্টি নামুক
বৃষ্টি নামুক মাঠ-প্রান্তর ডুবিয়ে।
সে অমিতব্যয়ী বৃষ্টিজলের বন্যাধারায়
তলিয়ে যায় যদি আমার ভিটেমাটি
তলিয়ে যাই যদি আমি
ক্ষতি নেই।

তবুও বৃষ্টি নামুক
ইথিওপিয়ায়, সুদানে
খরা কবলিত, দুর্ভিক্ষ-পীড়িত
দুর্ভাগ্য জর্জরিত আফ্রিকায়-
সবুজ ফসল সম্ভারে ছেয়ে যাক
আফ্রিকার উদার বিরান প্রান্তর।

তার ও আগে বৃষ্টি নামুক
আমাদের বিবেকের মরুভূমিতে
সেখানে মানবতা ফুল হয়ে ফুটুক,
আর পরিশুদ্ধ হোক ধরা, হৃদয়ের গ্লানি।

মানুষের জন্য মানুষের মমতা
ঝর্ণাধারা হয়ে যাক
বৃষ্টির সাথে মিলেমিশে –
সব পিপাসার্ত প্রাণ ছুঁয়ে ছুঁয়ে
বয়ে যাক অনন্ত ধারাজল হয়ে।

বহুদিন পর আজ
অজস্র ধারায় অঝোরে বৃষ্টি নামুক
আজ আমাদের ধূলি ধূসরিত
মলিন হৃদয়ের মাঠ-প্রান্তর জুড়ে ॥

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কবিতা

কবিতা: ছুটে এসে মিশে যাও

Avatar photo

Published

on

ছুটে এসে মিশে যাও
প্রকাশ চন্দ্র রায়

ক্যামন করে তোমার হস্তগত হলাম,
ক্যামন করে পৌঁছলাম এসে যৌবনের ঘাটে,
কোনদিকে পালালো বাল্য-কৈশোর আমার
জানি না তা! জানি না সঠিকভাবে!
যৌবনের ডালে ফুল ফুটেছে,
বসন্ত এসে ভর করেছে দেহ-মনে;
ক্ষণে ক্ষণে এখন মনে জাগে কেবল
তোমাকে কাছে পাওয়ার অতল আকুলতা।
সুস্মিতা! সামান্য ক্ষণের ছোঁয়া-ছুঁয়িতে
আর অনধিক কালের আলিঙ্গনে,
তুমি আমাকে উন্মাদিত এক প্রেমিক বানালে।
প্রাসঙ্গিক ভাবনার ব্যূহ ভেদ করে
তোমার ভাবনারা’ই এখন উঁকিঝুঁকি মারে
অপ্রাসঙ্গিকভাবে মস্তিস্কের মণিকোটরে।
এভাবে কতদিন!কতক্ষণ আর সহ্যের সীমানায়
পুষে রাখা যায় অম্লমধুর স্বাদের অমলিন যাতনাকে।
যমযাতনা’র অবসান কল্পে তুমি আসছ না কেন ছুটে?
আমি তো বুক পেতে রেখেছিই অহর্নিশি
তোমাকে আপনার করে রেখে দেবার ছলে।
কেন যে হারালো বাল্য-কৈশোর!
কেন যে আসলো উন্মত্ত যৌবন!
কেন যে তোমার সান্নিধ্য-সুখ পেলাম যৌবনের ঘাটে!
এখন আর দিন কাটে না-রাত কাটে না!
অচেনা আতঙ্কে বয়ে চলছে অস্থির সময়।
সুস্মিতা!তুমি ছুটে এসে মিশে যাও আমার আত্মায়-সত্ত্বায়;
নইলে আমার প্রাণ যায় প্রাণ যায়।

রচনাকাল- ৭ আগস্ট ২০২১, শনিবার।

Continue Reading

কবিতা

পান্ডুলিপির কবিতা- সাইফ সাত্তার

Avatar photo

Published

on

পান্ডুলিপির কবিতা
সাইফ সাত্তার

আসুন, এই চক্রান্তকারী সন্ধ্যায় চায়ের লিকারের মতো
ব্যক্তিগত ব্যার্থতায় চুমুক দিই।

সিগ্রেটে আগুন দেবার আগে মনে করার চেষ্টা করি-
আমাদের প্রত্যেকের ভিতরে অসহ্য অগ্নিঝড়।
আর রাতেই আমরা ঘরে ফিরবো।

দরজায় অপেক্ষমান অন্ধকারের মুখোশ পরে আমাদের স্ত্রীগণ জেগে থাকবেন-
আগামী বছরের প্রতিশ্রুতি পূরণের আশায় এক সাথে ঘুমিয়ে পড়বেন দুজন।

শ্রবনবিদ্ধ শব্দের ভেতর তবুও জেগে থেকে আমি (যেহেতু পুরুষ)
সেহেতু ঘরের মধ্যে আমিই দন্ডিত বৃক্ষ।
আমার সক্ষম ছায়ায় বেড়ে উঠবে আমার ভবিষ্যত

রমনীময় হয়ে উঠবে আগামী বছর।
একটা সূক্ষ্ণ লিলেনের জামা
বাবুটার স্কুলের টিফিনে একটা অরেঞ্জকেক
একজোড়া সিটি গোল্ডের রিং
বাতাসে আমাদের স্ত্রীগণের হাসির মতো দুলে উঠবে।

আমি জানি, এই দেশ তাঁর সর্বস্হটুকু হারিয়ে ফেলেছে রাজনীতির মধ্যে-
রাষ্ট্রযন্ত্রের মধ্যে।

প্রথম প্রেমিকের জন্য স্ত্রীরা যা হারিয়েছে
তা তাদের অলৌকিক বিস্ময়।

আসুন, এসব ব্যক্তিগত আগামী বছরগুলো
আমরা বিনিময় করি।
মনেরাখি, ফার্মের ডিমের মতো পৃথিবীটা গোলাকার।
আর সেখানে কমলালেবুর সংজ্ঞাটা
প্রমানিত রাজনীতির মতো!

বিডিপত্র/সাহিত্য

Continue Reading

কবিতা

স্বীকারোক্তি -সঞ্জয় কুমার মল্লিক।

Avatar photo

Published

on

স্বীকারোক্তি
সঞ্জয় কুমার মল্লিক।

আমি আামাতে বিস্তৃত
সহজ সরল এক আবেগী
দায়িত্বের দ্বারে দাড়ানো
রামের ভ্রাতার মতন।

আমি হৃদয় উজাড় করে
সবটুকু দিতে পারা এক
ভালবাসার সৈনিক,
আমি মরুর বালুকারাশি,
সূর্যের তাপে উত্তপ্ত
হতে পারি দৈনিক।

আমি আমার মাঝে
জ্বলতে জানি,
অন্যেরে নিভাই,
আমি পথ ভুলতে জানি –
অন্যেরে পথ দেখাই।

আমি পিতা আমি পুত্র,
আমি প্রেমিকজন
আমি ভ্রাতা বন্ধু সজন ,
আমি সুহৃদ দৌহিত্র।

আমি কেঁদে হাসাতে জানি
আমি দিতে জানি প্রেম,
ভালবাসা স্নেহ মায়য়া মমতা,
করতে পারি লেনদেন।

আমি জ্বলতে জানি
জ্বালতে হৃদয়ে আলো,
আমি আমাতে মহান
সৃষ্টিকর্তার দান –
আমি সবারই চাই ভালো।

বিডিপত্র/সাহিত্য

Continue Reading