পৃথিবীর ভয়ঙ্করতম ৭ টি মৃত্যুদন্ড পদ্ধতি
বিচিত্র ডেস্ক: আধুনিক যুগে ফাঁসি দিয়ে মৃত্যুদন্ড ব্যবস্থাটাই সবদেশে প্রচলিত। কিন্ত প্রাচীনকালে কিছু কিছু দেশে নিয়ম ছিল যতটা সম্ভব কষ্ট দিয়ে মানুষকে মারা যায় তার চেষ্টা করা। এজন্য আবিষ্কৃত হয়েছে মানুষ হত্যার ভয়ংকর সব উপায়।
ব্রাজেন বুল: প্রাচীন গ্রীক যন্ত্রকৌশলীদের আবিষ্কার এই ব্রাজেন বুল। এটি আসলে একটি পিতলের তৈরী ষাড়। এর পেটের দিকটা ফাপা। পিঠের উপর একটা ঢাকনা থাকে। এই ঢাকনা দিয়ে ভিক্টিমকে পেটের ভিতরে ঢুকানো হয়। এরপর ঢাকনা বন্ধ করে পেটের নিচে আগুন দেয়া হয়। আগুনের আচে পিতল উত্তপ্ত হতে থাকে। ভেতরে থাকা মানুষটি উত্তাপে সিদ্ধ হয়ে একসময় মারা যায়।
ব্রাজেন বুলের আরেকটি বৈশিষ্ট্য ছিল। বিশেষ মেকানিজমের কারণে, ভিক্টিমের আর্তনাদ বাইরে বেরোনোর সময় অনেকটা ষাড়ের আওয়াজে পরিণত হত।
প্রাচীণ গ্রীসে খোলা ময়দানে ব্রাজেন বুলে উৎসবমুখরভাবে মানুষ মারা হত। এইদিন অতিথরা ব্রাজেন বুলে ভিক্টিমের আর্তনাদ শুনতে শুনতে ভোজ সভায় অংশ নিতেন।
ইদুর দিয়ে মৃত্যুদন্ড: ১৬ শতকে ডাচ বিদ্রোহের সময় এই পদ্ধতির কার্যকরভাবে ব্যাবহার শুরু হয় ডাচ নেতা দাদরিক সনয় এর হাত ধরে। এই পদ্ধতিতে আসামী বা ভিক্টিমকে উলঙ্গ করে একটা কুঠুরিতে শিকল দিয়ে বেধে রাখা হত। কুঠুরির ভেতরে রুগ্ন ইদুর ছেড়ে দেয়া হত। এক পর্যায়ে ইদুরগুলো ভিক্টিমের মাংস কুরে কুরে খেতে শুরু করত। এক পর্যায়ে মাংসে পচন ধরে বা রক্তপাতে ভিক্টিম মারা যেত। মারা যেতে এক সপ্তাহ থেকে দুই সপ্তাহ সময় লাগত।
বাঁশ দিয়ে মৃত্যুদন্ড: আশ্চর্য শোনালেও প্রাচীন এশিয়া (বিশেষত চীনে) বাশ ঢুকিয়ে মানুষের মৃত্যুদন্ড দেয়া হত। পদ্ধতিটা সহজ কিন্ত ভয়ংকর। বাশ খুব দ্রুত বাড়ে। দিনে প্রায় এক ফুট মত বৃদ্ধি পায় বাশ।
এই পদ্ধতিতে আসামী বা ভিক্টিমকে একটা বর্ধনশীল বাশের উপর বেধে রাখা হয়। বাশ বৃদ্ধি পেতে পেতে একসময় তার শরীর ভেদ করে ঢুকে যায়। রক্তপাতের কারণে একসময় ভিক্টিম মারা যায়।
লিং চি: মৃত্যুদন্ড কার্যকরের একটা ভয়াবহ পদ্ধতি হল “লিং চি”। প্রাচীন চীনে এই পদ্ধতিতে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হত। ১৯০৫ সালের পর এই পদ্ধতি নিষিদ্ধ হয়ে যায়।
লিং চি পদ্ধতিতে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামীকে প্রথমে একটা খুটির সাথে দাড়ানো অবস্থায় বেধে রাখা হত। দুই হাত একসাথে করে মাথার উপর বাধা হত। একইভাবে নিচে পা বাধা হত। এরপর একজন জল্লাদ ছুরি দিয়ে প্রথমে বাম স্তন (পুরুষ মহিলা সবক্ষেত্রেই) এর কিছুক্ষণ পর ডান স্তন কেটে ফেলত।
কিছুসময় পর হাতের বাহু এবং পায়ের উরুতে কেটে দিত। যন্ত্রণা বাড়ানোর জন্য সময় নিয়ে কাটা হত। এভাবে শরীরের বেশ কয়েকজায়গায় কাটা হলে রক্তক্ষরণের কারণে আসামী মারা যেত। এরপর লাশটিকে জনসাধারণের দেখার জন্য ঝুড়িতে করে ফেলেও রাখা হত।
দ্য র্যাক: প্রাচীণ গ্রীসে এর ব্যবহার শুরু হয়েছিল। পরবর্তীতে দাসপ্রথার যুগে দাস এবং নিগ্রো হত্যার জন্য ইউরোপেও এর ব্যবহার ছড়িয়ে পড়েছিল।
দ্য র্যাক আসলে একটি কপিকল সিস্টেম। একটা টেবিলে প্রথমে ভিক্টিমকে শোয়ানো হয়। এরপর হাত এবং পা দড়ি দিয়ে বেধে দেয়া হয়। এরপর দড়িটিকে একটি পুলির সাথে জুড়ে দেয়া হয়। একজন জল্লাদ হাতলে চাপ দিলে দড়ি টান টান হতে থাকে। বিপরীত দিকে হাত এবং পা টানা হতে থাকে। যার ফলে একসময় লিগামেন্ট এবং পেশি ছিড়ে যায়। এক পর্যায়ে ভিক্টিম মারা যায়।
চিরে ফেলা: এই পদ্ধতিতে একটা করাত দিয়ে ভিক্টিমকে কেটে ফেলা হত।
চামড়া ছিলে নেয়া: প্রাচীন ইউরোপে কালো জাদুকর এবং ডাইনিদের এভাবে সাজা দেয়া হত। পা থেকে শুরু করে আস্তে আস্তে পুরো শরীরের চামড়া ছিলে ফেলা হত। প্রচন্ড যন্ত্রণায় এক সময় ভিক্টিম মারা যেত।