স্থল অভিযানের প্রস্তুতি: ইয়েমেনে মিশর-সৌদি যুদ্ধজাহাজ
ইয়েমেন উপকুলের বাব-এল-মান্দাব প্রণালীতে সৌদি আরব এবং মিশর যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। ইয়েমেনে স্থল অভিযানের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এসব যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আরব সাগর থেকে একমাত্র সুয়েজ খাল দিয়ে এ প্রণালীতে ঢোকা যায়। এ পথে মিশর ও সৌদি আরব বেশ কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে। এ সব জাহাজ এরই মধ্যে বাব-এল-মান্দাবের কাছে পৌঁছে গেছে বলে সেনাসূত্রগুলো জানিয়েছে। ইয়েমেনের ক্ষমতাচ্যুত ও পলাতক প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মানসুর হাদির মন্ত্রিসভার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রিয়াদ ইয়াসিন।
এদিকে ইয়েমেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহ’র ‘যুদ্ধবিরতি’ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দেশটির শিয়াপন্থি হুথি বিদ্রোহীদের দমনে অভিযান অব্যাহত রেখেছে সৌদি আরব। হুথিদের পাশাপাশি নিজেদের অবস্থান থেকে ইয়েমেনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বু মনসুর হাদীর সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছে সালেহ’র সমর্থকরাও। তাই তার এ যুদ্ধবিরতির আহ্বান আমলে না নিয়ে সৌদি সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, হাদী ও তার সরকারকে বিরোধীদের হাত থেকে রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ রয়েছে সৌদি আরব। সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর যৌথ অভিযান ‘ডিসিসিভ স্টর্ম’ শুরুর পরপরই শুক্রবার (২৭ মার্চ) হাদী ইয়েমেনের বন্দরনগরী আদেন থেকে রিয়াদে পাড়ি জমান। রিয়াদ থেকেই তিনি কায়রোতে যাচ্ছেন। ইয়েমেন সরকারের দাবি, ইরানি মদতপুষ্ট শিয়াপন্থি হুথি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা দখলে নিলে দেশত্যাগ করেন হাদী। রিয়াদে পৌঁছেই এক বিবৃতিতে তিনি দাবি করেন, জোরপূর্বক তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। অবশ্য, সানা থেকে আদেন চলে যাওয়ার কিছুদিন আগে প্রেসিডেন্ট হাদী স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডার আব্দুল হাফেজ আল সাক্কাফকে অপসারণের নির্দেশ দেন। কিন্তু সে নির্দেশ কার্যকর হওয়ার আগেই তাকে আদেন চলে যেতে হয়। আব্দুল হাফেজ আল সাক্কাফ সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহ ও হুথিদের প্রতি অনুগত বলে মনে করে হাদীর সরকার। অবশ্য মনে করার কারণটি হাদী আদেন চলে যাওয়ার পরই স্পষ্ট হয়ে পড়ে। তিনি রাজধানী থেকে পালানোর পরপরই সাক্কাফ তার বাহিনী নিয়ে আদেনে প্রেসিডেন্টকে ধাওয়া করেন। সেই সঙ্গে হুথি ও সালেহ’র সমর্থকরাও আদেনে হামলা চালায়। এদিকে, হুথি ও হাদীবিরোধী বিদ্রোহীদের পেছন থেকে ইরান সরকার মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে সৌদি আরবও। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুক্রবার (২৭ মার্চ) সৌদি বাদশাহ সালমানের সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। চলমান অভিযানে সৌদি আরবের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন রয়েছেন বলে কথা বলার সময় জানান তিনি। হোয়াইট হাউস থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ইয়েমেনে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে বলে দুই নেতা এক মত হয়েছেন।