আন্তর্জাতিক
নাইজেরিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল দেশ নাইজেরিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় শনিবার। এই নির্বাচনে ১৪ জন প্রার্থী রয়েছেন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা মূলত ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট গুডলাক জোনাথন ও সাবেক সামরিক শাসক ও প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা মুহাম্মাদু বুহারির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ নির্বাচনকে ১৯৯৯ সালে সামরিক শাসন অবসানের পর দেশটির প্রথমবারের মতো সত্যিকার গণতান্ত্রিক নির্বাচন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। নির্বাচনকে ঘিরে নৃগোষ্ঠীগত, আঞ্চলিক ও কোথাও কোথাও সম্প্রদায়গত বিভক্তি দেখা দেয়ায় তীব্র উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সাবেক প্রাণীবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট জোনাথনের জন্য এ নির্বাচন একটি পরীক্ষা। দুর্নীতি ও নিরাপত্তা ব্যর্থতার জন্য তার সরকারের বিরুদ্ধে ভোটাররা অসন্তুষ্ট। এ কারণে নির্বাচনটি প্রায় গণভোটের (হ্যাঁ/না) রূপ নিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। দেশব্যাপী ১,১৯,৯৭৩টি ভোট কেন্দ্রে ৫ কোটি ৬৭ লাখ ভোটারের ভোট দেয়ার কথা রয়েছে। আনুষ্ঠানিক ভোট গ্রহণ সকাল ৮টায় শুরু হলেও প্রথমে ভোটারদের বৈধতা নিশ্চিত করা হবে। দুপুর দেড়টা থেকে বৈধ ভোটাররা ভোট দেয়া শুরু করবেন। শেষ ভোটারের ভোট দেয়া পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। এতে ভোটগ্রহণ পরবর্তী দিন (রোববার) পর্যন্ত গড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একটি স্বচ্ছ, শান্তিপূর্ণ ও দৃষ্টান্তস্থাপানকারী নির্বাচন আফ্রিকার সবচেয়ে বড় অর্থনীতির এ দেশটির জন্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। স্বেচ্ছাচারিত, বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন, সামরিক অভ্যুত্থান ইত্যাদি পরিস্থিতি পাড়ি দেয়ার পর ৬ বছর ধরে বোকো হারামের বিদ্রোহী তৎপরতা মোকাবিলা করছে দেশটি। দেশটির উত্তরাঞ্চলে শরিয়াভিত্তিক একটি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্যাপক সহিংস তৎপরতা চালাচ্ছে জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম। এরফলে ৬ বছরে দেশটির কয়েক হাজার নাগরিক নিহত হয়েছেন। গোষ্ঠীটির তৎপরতার কারণে নির্বাচন পেছাতেও বাধ্য হয় দেশটির কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনায় পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে আছে। নির্বাচনের আগেই কোথাও কোথাও সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে কোনো সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা বিরাজ করছে। এরআগে ২০১১ সালের নির্বাচনে উত্তরাঞ্চলীয় মুসলিম প্রার্থী বুহারি দক্ষিণাঞ্চলীয় খ্রিস্টান প্রার্থী জোনাথনের কাছে পরাজিত হলে দেশটিতে দাঙ্গা শুরু হয়। প্রধানত দেশটির উত্তরাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া ওই দাঙ্গায় ৮০০ জন নিহত ও ৬৫,০০০ মানুষ গৃহহীন হয়েছিলেন।