Connect with us

Highlights

চীনা গোয়েন্দা কর্মকর্তার বর্ণনায় ‘উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতন’

Avatar photo

Published

on

নিউজ ডেস্ক:
চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের বাসিন্দা আব্দুওয়ালি আইয়ুপ (৪৮) পেশায় একজন স্কুলশিক্ষক। নিজের একটি কিন্ডারগার্টেনে ছোট বাচ্চাদের উইঘুর ভাষা শিক্ষা দেন তিনি। আইয়ুপের অভিযোগ, ২০১৩ সালের ১৯ আগস্ট স্কুলের সামনে থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। আটকের পর কাশগর শহরের একটি ডিটেনশন সেন্টারে তার প্রথম রাত কাটে। এই স্কুলশিক্ষকের অভিযোগ, সেখানে কারারক্ষীদের নির্দেশে ১২ জন বন্দী তাকে গণহারে বলাৎকার করেছেন। নির্যাতনে বমি ও পায়খানা-প্রস্রাব করে দিলেও সারারাত ধরেই তার ওপর এমন পাশবিক নির্যাতন চলে।

‘আইয়ুপ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থজোগান দিচ্ছেন’, এমন স্বীকারোক্তি আদায়ে তার ওপর দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন চালানো হয়। অবশেষে ২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর বিশেষ শর্তে মুক্তি পান তিনি। এত বছর পরেও সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনো তাড়া করে বেড়ায় এই স্কুলশিক্ষককে।

এদিকে বর্তমানে নেদারল্যান্ডসে বসবাস করছেন ওমির বেখিল। যার বাবা একজন কাজাখ এবং মা উইঘুর সম্প্রদায়ের। সন্ত্রাসবাদে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগে গত ২৬ মার্চ ২০১৭ সালে তাকে আটক করে চীনের নিরাপত্তা বাহিনী। স্বীকারোক্তি আদায়ে ক্যারামে সিটির একটি পুলিশ বেজমেন্টে তার ওপর টানা চারদিন নির্যাতন চালানো হয়।

uighur 1

নিজের নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে সিএএনকে সাক্ষাৎকার দেন এই চীনা গোয়ান্দা কর্মকর্তা। ছবি : সংগৃহীত

নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে বেখিল বলেন, এক ধরনের চেয়ারে (টাইগার চেয়ার) বসিয়ে তাদের পেটানো হতো। পা উপরে বেঁধে, মাথা নিচে ঝুলিয়ে দিয়ে উরু-নিতম্বে পিটিয়ে থেঁতলে দেওয়া হতো। পায়ে সবসময় পরিয়ে রাখা হতো মোটা ও ভারী শেকল। সেই সঙ্গে দুইহাত পেছনে একত্রিত করে আরেকটি শেকল দিয়ে বেঁধে সেভাবেই ঘুমাতে বাধ্য করা হতো। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বন্দীদের প্রায় কয়েকদিন ঘুমাতেও দেওয়া হতো না।

উইঘুর সম্প্রদায়ের এই মুসলিম ব্যবসায়ী বলেন, নির্যাতন ও দীর্ঘ আট মাস কারাভোগের ফলে তার শরীর কঙ্কালসার হয়ে যায়। নির্যাতনে পরিচিত কয়েকজনকে মারা যেতেও দেখেছেন তিনি। নিজে নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন জানিয়ে বেখিল বলেন, ‘আমি একজন ধর্মভীরু মানুষ। এমন নির্যাতনের মধ্যেও আল্লাহর ওপর বিশ্বাসের জোরেই আমি বেঁচে ফিরেছি। আর সেই বিশ্বাসই ছিলো আমার একমাত্র শক্তি’।

আইয়ুপ ও বেখিল মাত্র দুটি চরিত্র, যারা জিনজিয়াংয়ে চীনা প্রশাসনের পদ্ধতিগত নির্যাতনের শিকার। প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা অন্তত ১৫ লাখেরও বেশি। যাদের মধ্যে কাউকে স্বেচ্ছাশ্রমে বাধ্য করা হচ্ছে, আবার কারো ওপর শারীরিক-মানসিক, এমনকি যৌন নির্যাতনও চালানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বারবার অভিযোগ তোলা হলেও বরাবরই বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে দেশটির কমিউনিস্ট সরকার। তাদের পক্ষ থেকে এটাকে বিচ্ছিন্নতাবাদ থেকে মুক্ত রাখতে পুনঃশিক্ষণ কর্মশালা বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে একজন চীনা গোয়ান্দা কর্মকর্তা যিনি নিজে একসময় এ ধরনের নির্যাতনমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন তিনি বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন।

uighur 4

গতবছরের সেপ্টেম্বরে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে নির্যাতনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে একজনকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের দৃশ্য বিশ্ববাসীর নজরে আসে। তবে ভিডিওর সত্যতার বিষয়ে সিএনএন নিশ্চিত হতে না পারলেও নির্যাতনের শিকার মানুষদের বর্ণনা ওই ভিডিওর সঙ্গে মিলে যায়। ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া প্রায় তিনঘণ্টার এক সাক্ষাৎকারে তিনি চীনের গোপন এই কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস করে দিয়েছেন। বর্তমানে ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা ইউরোপের একটি দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। চীনে তার পরিবারের বাকি সদস্যরা থাকায় তিনি তার নাম-পরিচয় গোপন রাখার অনুরোধ করেছেন। তবে, তার নাম-পরিচয় এবং পদবি সম্পর্কে সিএএন তথ্য সংগ্রহ করে তার পরিচয়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। প্রয়োজনে তা আদালতে দেখানো যাবে বলেও আশ্বস্ত করেছে সংবাদমাধ্যমটি।

তবে পাঠকের বোঝার সুবিধার্থে এখানে তার নাম ‘ঝিয়াং’ হিসেবে ব্যবহার করা হলো। ঝিয়াং বলেন, ‘আমাদের গণহারে আটকের নির্দেশ থাকতো। বিশেষ করে সেটা রাতের বেলায়। কোনো এলাকায় যদি একশজন মানুষ থাকতো, আমাদের ওপর নির্দেশ থাকতে তাদের সবাইকে আটক করা এবং স্বীকারোক্তি আদায় করা। আমরা জানতাম, কোনো এলাকার সবাই বিচ্ছিন্নতাবাদে লিপ্ত হতে পারে না। কিন্তু আমরা কেবল নির্দেশ বাস্তবায়ন করতেম।’

ঝিয়াং আরও জানান, ‘স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য প্রায় প্রতিটি বন্দীকে পেটানো হতো। বৃদ্ধ, নারী এমনকি ১৪ বছরের কিশোররাও এ ক্ষেত্রে বাদ পড়তো না’।

নির্যাতনের ধরন বর্ণনা করতে গিয়ে ঝিয়াং বলেন, ‘স্বীকারোক্তি আদায়ে একেকজন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য একেকটা পন্থা অবলম্বন করতেন। কেউ বন্দীকে পানিতে ডোবাতেন, কেউ ইলেকট্রিক শর্ক দিতেন, কেউ বিবস্ত্র করে পেটাতেন, কেউ যৌন নির্যাতন করতেন, কেউ বা অন্য বন্দীদের দিয়ে বন্দীদের গণধর্ষণ-বলাৎকার করাতেন। এরপর স্বীকারোক্তি আদায় হলে পরবর্তী পর্যায়ে বন্দীদের ডিটেনশন ক্যাম্প বা কারাগারে রাখা হতো। যেখানে তাদের জোরপূর্বক স্বেচ্ছাশ্রমে বাধ্য করা হতো।’

ঝিয়াং জানান, ২০১৪ সালে উইঘুর মুসলিমদের দমনে চীন সরকার মূল ভূখণ্ড থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার পুলিশ সদস্য নিয়ে একটি বিশেষ বাহিনী গঠন করে। অফিসারদের জানিয়ে দেওয়া হয়- উইঘুররা হলো ‘চীনের শত্রু’, তাই তাদের দমন করতে হবে। সেই লক্ষ্যে পূর্ব থেকে একটি তালিকা তৈরি করা থাকতো। তালিকা অনুযায়ী একেকদিন একেক এলাকায় অভিযান চালিয়ে উইঘুরদের আটক করা হতো। এর বাইরে গ্রাম প্রধানের মাধ্যমে আলোচনায় বসার কথা বলেও গণহারে গ্রেপ্তার করা হতো। আর এর ওপরেই নির্ভর করতো পুলিশের প্রমোশন। ঝিয়াং জানান, পুলিশে ১০ বছর চাকরি করেও প্রমোশন না পেলেও উইঘুর দমনে কাজ করায় স্বল্প সময়েই কয়েকবার প্রমোশন পেয়েছেন তিনি।

কিন্তু বর্তমানে ইউরোপে আশ্রয় নেওয়া এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা তার কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনায় পুড়ছেন। তিনি জানান, ‘আমি অনেক নিরপরাধ মানুষকে আটক করেছি, তাদের সীমাহীন নির্যাতন করেছি। অতীতের সেই কৃতকর্ম এখন আমাকে ঘুমাতে দেয় না। আমি দুঃস্বপ্নের কারণে রাতে এক থেকে দুই ঘণ্টার বেশি ঘুমাতে পারি না।’ যাদের নির্যাতন করা হয়েছে তাদের কারো সামনে পড়লে কী করবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ঝিয়াং বলেন, ‘অনুতপ্ত হবো, পালিয়ে যাবো (ক্ষমা চাওয়ারও দুঃসাহস করবেন না) এবং প্রত্যাশা করব, এমনটা যেন আর কারো সঙ্গে না হয়’।

এদিকে আইয়ুপ ও বেখিলও জানিয়েছেন নির্যাতন ও দুঃসহ যন্ত্রণায় তারাও ঘুমাতে পারেন না। কিন্তু যারা তাদের নির্যাতন করেছেন তাদের দোষ দিচ্ছেন না তারা। কারণ, নির্যাতনের শিকার এই মানুষগুলো মনে করেন, পুলিশ ও কারারক্ষীরা কেবল নির্দেশ পালন করছেন। এ ছাড়া তাদের আর কিছুই করার নেই। মূল অপরাধী চীনের কমিউনিস্ট পার্টি এবং এর নীতিনির্ধারকরা। তাদের নির্দেশেই নিরপরাধ মুসলিমদের ওপর এমন বিভৎস নির্যাতন চালানো হচ্ছে।

এদিকে, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান গত জুনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি পুনরাবৃত্তি করতে চাই যে, জিনজিয়াং-এ তথাকথিত গণহত্যার অভিযোগ একটি অপপ্রচার এবং সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ, যা গুজব ছাড়া আর কিছুই নয়’।

সম্প্রতি জিনজিয়াং সরকারের কর্মকর্তারা একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। যেখানে একজন ব্যক্তিকে বন্দী বলে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। যিনি বন্দী শিবিরে কোনো ধরনের নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেন এবং এ ধরনের অভিযোগকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে অভিহিত করেন। তবে তাকে এ ধরনের স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়েছিলো কি না অথবা কেউ যদি ‘নির্যাতন করা হচ্ছে’ এমন স্বীকারোক্তি দিতো তাহলে তাকে সংবাদ সম্মেলনে আনা হতো কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সমালোচকরা।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Highlights

ওরা সওমকে ব্যবসার হাতিয়ারে পরিণত করেছে : হেযবুত তওহীদের এমাম

Avatar photo

Published

on

রাজধানীতে হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে বিশাল আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৬ মার্চ ২০২৪) সকাল সাড়ে ১০ টায় রাজধানীর ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স-আইডিইবি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হেযবুত তওহীদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মো. তসলিম উদ্দীন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম সওমের নিয়ম, উদ্দেশ্য, শিক্ষা এবং দেশ ও সমগ্র বিশ্ব জুড়ে বিদ্যমান সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সংকটময় পরিস্থিতি, মুসলমানদের দুর্দশা এবং এ থেকে উত্তরণের পথ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, সওম মানে আত্মসংযম, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা, বিরত থাকা। রোযা তথা সওমের উদ্দেশ্য এই যে, মো’মেন ব্যক্তি সারাদিন পানাহার ও জৈবিক চাহিদা পূরণ থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন, নিজের আত্মাকে শক্তিশালী করবেন। তিনি অপচয় করবেন না, পশুর ন্যায় উদরপূর্তি করবেন না। তিনি হবেন নিয়ন্ত্রিত, আত্মত্যাগী। বঞ্চিত, ক্ষুধার্ত, দরিদ্র মানুষের দুঃখ অনুভব করে তিনি তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেবেন। আল্লাহর হুকুম মানার ক্ষেত্রে যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবেন অর্থাৎ তিনি হবেন তাকওয়াবান। তার এই চরিত্রের প্রতিফলন ঘটবে সামাজিক ও জাতীয় জীবনে। গড়ে উঠবে এমন এক সমাজ যেখানে সবাই একে অপরের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে উৎসাহী হবে, বিরাজ করবে পরস্পর সহমর্মিতা, সহানুভূতি, ভ্রাতৃত্ব। প্রতিষ্ঠিত হবে শান্তি।

তিনি আরও বলেন, আজকের বাস্তবতা এই যে, বর্তমানে এই মৌলিক শিক্ষা হারিয়ে সওম বা রোযা যেন হয়ে গেছে কেবল না খেয়ে থাকা। দেখা যায়, রমজান আসলেই মুসলিমদের মধ্যে হুলুস্থুল পড়ে যায়। নিত্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে হয়ে ওঠে আকাশছোঁয়া। সংযমের মাস এলেই মুসলিমদের সংযমের সব বাঁধ যেন ভেঙে যায়। আজ রোযাকে ব্যবসার হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। মানুষ বাজারে গিয়ে নিত্য পণ্যের দাম শুনে অসহায় হয়ে পড়ে। সবাই যেন অসাধু ব্যবসায়ীদের হাতে জিম্মি। ধর্মব্যবসাও জমজমাট হয়ে ওঠে এই মাসে। এ জাতীয় অপরাধ ঢাকা দেয়ার জন্য আত্মপ্রচারের আশায় কিছু দান-খয়রাত করতে দেখা যায় মাত্র। কিন্তু রোযা তথা সওমে সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায়ের বোধ অর্থাৎ তাকওয়া সৃষ্টি হয়না, প্রকৃত সিয়ামের সাধনা হয় না মন্তব্য করেন তিনি।

উপস্থিত অতিথি ও শুভানুধ্যায়ীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, রোজার নির্দেশনাটা মূলত মো’মেনদের জন্য। তার মানে মো’মেনরা রোজা পালন করবে। প্রশ্ন হচ্ছে- এই মো’মেন কারা? তারাই মো’মেন যারা আল্লাহ ও রাসুলের উপর ঈমান আনে, কোনো সন্দেহ পোষণ করে না এবং সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করে। এই মো’মেনের জন্যই হলে রোজা, নামাজ, হজ্ব সবকিছু। আমরা হেযবুত তওহীদ আমাদের জীবন ও সম্পদ আল্লার রাস্তায় কোরবান করে দিয়ে প্রকৃত মোমেন হবার চেষ্টা করছি বলেন তিনি।

এর আগে পবিত্র কোরআন থেকে তোলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পবিত্র কোরআন থেকে তোলওয়াত করেন কারি মো. আসাদ। এরপর দলীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের মূল পর্ব শুরু হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি তসলিম উদ্দিন তার শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের প্রধান উপদেষ্টা খাদিজা খাতুন, ঢাকা মহানগর হেযবুত তওহীদের সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজ, হেযবুত তওহীদের তথ্য বিষয়ক সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা প্রমুখ।

এক পর্যায়ে হামদ নাত ও গজল পরিবেশন করেন মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর নিয়মিত শিল্পী শাহীন আলম, রাফে আহমেদ, তাহমিনা আক্তার চাঁদ, তাহী ও ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ। তাদের পরিবেশনায় মুগ্ধ হয় দর্শকরা।

দুপুর ২ টায় অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। তার আগমনে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে যায় অনুষ্ঠানস্থল।

নামাজ শেষে দ্বিতীয় অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। বক্তব্য শেষে তিনি মানবজাতির শান্তি কামনা করে দোয়া করেন। মোনাজাত শেষে মাগরিবের আযান দিলে সবার মাঝে ইফতার বিতরণ করা হয়। অতিথিরা সবাই মিলে একাকার হয়ে ইফতার করেন।

সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি তসলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য শাহ নেওয়াজ খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় নারী বিষয়ক সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, হেযবুত তওহীদের সাহিত্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রিয়াদুল হাসান, মিরপুর শাখার সভাপতি আব্দুল হক বাবুল, হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জাফর আহমেদ, কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক সাইফুর রহমান, ঢাকা জেলার সভাপতি ইউনুস মিয়া, উত্তরা শাখার সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিনসহ ঢাকার বিভিন্ন থানার সভাপতি ও সহস্রাধিক নেতাকর্মী।

Continue Reading

Highlights

দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে জাতীয় ঐক্যের ডাক হেযবুত তওহীদের

Avatar photo

Published

on

হেযবুত তওহীদের গাজীপুর জেলা ও মহানগর শাখার আয়োজনে ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৮ মার্চ ২০২৪) বিকালে গাজীপুর মহানগরের বাসন থানাধীন তেলিপাড়াস্থ সাগর সৈকত কনভেনশন হলে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, রাজতন্ত্রের কবর হয়ে গেছে বহু আগে। ফ্যাসিবাদ মানুষের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। বহু ফ্যাসিস্ট আত্মহত্যা করেছে। সমাজতন্ত্রও ব্যর্থ হয়েছে। গণতন্ত্রও লাইফ সাপোর্টে আছে- মন্তব্য করেন তিনি।

হেযবুত তওহীদের এই নেতা বলেন, গণতন্ত্রের সৌন্দর্য আমরা দেখেছি। প্রতি ৫ বছর পর পর মহা সংকটে পরতে হচ্ছে জাতিকে। একদল ক্ষমতায় গেলে পরের দিন থেকেই শুরু হয় তাকে টেনে নামানোর চেষ্টা। সমানে চলে জ্বালাও পোড়াও। বাসে আগুন দিয়ে নিরপরাধ নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। সাপের মত পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করা হচ্ছে। ক্ষমতায় যাবার লড়াইয়ে হরতাল, অবরোধ, ধর্মঘটের নামে নৃশংসতা মানুষ দেখেছে। এই সিস্টেম আর মানুষ দেখতে চায় না। মানুষের তৈরি সব সিস্টেমই তো আমরা অ্যাপ্লাই করলাম। সবগুলো ব্যর্থ হয়েছে। মানুষের তৈরি তন্ত্রমন্ত্র বাদ দিয়ে আল্লার দেওয়া সিস্টেমে প্রত্যাবর্তন করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, পশ্চিমারা আমাদের ব্যাপারে মাতব্বরি করে আসছে বরাবরই। তারা একে একে ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, আফগানিস্তান ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন তাদের শকুনি দৃষ্টি পড়েছে আমার প্রিয় জন্মভূমির উপর। তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে তাদের কূট চাল চালছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, শকুন যত ভয়ঙ্করই হোক না কেন আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারলে কোনো সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তি আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না। হেযবুত তওহীদ থাকতে তাদের এই দুরাশা কোনো দিন পূর্ণ হবে না। প্রয়োজনে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য জীবন দেব তবুও দেশকে ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান হতে দিব না- বলেন এই নেতা।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য শাহ নেওয়াজ খানের সঞ্চালনায় ও ঢাকা বিভাগীয় সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- হেযবুত তওহীদের আন্তর্জাতিক প্রচারণা বিষয়ক সম্পাদক মো. মশিউর রহমান, হেযবুত তওহীদের সমন্বয়কারী মো. নিজাম উদ্দিন, দৈনিক বজ্রশক্তি পত্রিকার সম্পাদক এসএম সামসুল হুদা, হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান, হেযবুত তওহীদের ঢাকা বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ও গুলশান শাখার সভাপতি মো. ফরিদ উদ্দিন রাব্বানী, ঢাকা বিভাগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুস মিয়া ও মো. তসলিম উদ্দিন এবং হেযবুত তওহীদের গাজীপুর জেলা সভাপতি মো. শাহজাহান প্রধান, মহানগর সভাপতি শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

Continue Reading

Highlights

রাজধানীতে ‘বাংলা ভাষার মান রক্ষায় আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা

Avatar photo

Published

on

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘বাংলা ভাষার মান রক্ষায় আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে পাঁচটায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কচি-কাচার মেলা হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হৃদয়ে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক পরিষদ।

সংগঠনটির উপদেষ্টা শাহ মুহাম্মদ সেলিম রেজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন হেযবুত তওহীদের সর্বোচ্চ নেতা এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘বাংলা ভাষা বিকৃত করার প্রবণতা তরুণদের মধ্যে বেশ লক্ষণীয়। অফিস-আদালত, চলচ্চিত্র, নাটক, বিজ্ঞাপনসহ প্রায় জায়গাতেই চলছে বিদেশি ভাষার ব্যবহার। বিদেশি ভাষার আগ্রাসনে খাঁটি বাংলা ভাষার চর্চা দিন দিন কমে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় আফসোসের বিষয় হলো, আমাদের সমাজে কিছু সুশীল ব্যক্তিবর্গ আছেন যারা বেশি ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করেন। যার প্রভাব পড়ে দর্শক-শ্রোতাদের মধ্যে। তারাও মিশ্র ভাষায় কথা বলতে শেখে। বেসরকারি বেতারগুলোর উপস্থাপকরা তো বাংলা বলেন না বললেই চলে। পৃথিবীর প্রায় ২৮ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে বাংলা ভাষার স্থান সপ্তম। বাংলা ভাষার ঐতিহ্য এবং সাহিত্যসম্ভারও বিপুল। অথচ নতুন প্রজন্ম বাংলা ভাষার প্রতি উৎসাহী ও মনোযোগী নয়। আরেকদিকে ইংলিশ মিডিয়ামের দৌরাত্বে অনেক ছেলেমেয়ে যদিও বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারে কিন্তু লিখতে পারে না। একটু শিক্ষিতরা বাংলার সাথে ইংলিশ শব্দ মিশ্র করে ককটেল বানিয়ে ব্যবহার করে গৌরব করে। অন্যদিকে একজন অশিক্ষিত কৃষক শ্রমিকের কথায় যদি আঞ্চলিকতা প্রকাশ পায় তাকে আমরা ক্ষেত বলে পরিহাস করতে ছাড়ি না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বক্তব্য রাখছেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম

বক্তব্য রাখছেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম

তিনি বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকে ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। কিন্তু আমরা কি বাংলা ভাষাকে সঠিক মর্যাদা দিতে পারছি? আমরা কি বিশুদ্ধ বাংলায় কথা বলতে পারি? আমরা কি বাংলা ভাষার বিকৃতি রোধ করতে পেরেছি? ১৯৪৮ সালে করাচিতে নিখিল পাকিস্তান শিক্ষা সম্মেলনে পাকিস্তানিরা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রয়াসে আরবি হরফে বাংলা লেখার প্রস্তাব করেছিল। আমরা কিন্তু তাদের অযৌক্তিক প্রস্তাব গ্রহণ করিনি। হয়েছে প্রতিবাদ, আন্দোলন। কিন্তু এখন তরুণ প্রজন্মের বড় অংশই ইংরেজি অক্ষরে বাংলা লিখছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু কোনো মহল থেকেই এর কোনো প্রতিবাদ উঠছে না -বলেন এই বক্তা।

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলা ভাষার শুদ্ধ ও সঠিক ব্যবহারের প্রতি অনেকের আগ্রহ কমছে বলে মনে হয়। বিশেষ করে আমাদের শিশু ও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ভাষার প্রতি মমত্ব ও আগ্রহ নিয়ে উদাসীনতা মোটেও ভালো কিছু নয়। শিশু ও তরুণদের একাংশ বাংলার চেয়ে ইংরেজি ভাষা ব্যবহারে বেশি আগ্রহী। এর জন্য আমাদের বিদ্যমান পরিস্থিতিও অনেকাংশে দায়ী। ইংরেজি ভাষা শিক্ষা নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু নিজের ভাষাকে অবহেলা করার পক্ষেও আমি নইÑ বলেন হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।

তিনি বলেন, ‘বিমা-ব্যাংকে গেলে বাংলার ব্যবহার প্রায় অদৃশ্য। অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানেও ইংরেজিতে প্রতিষ্ঠানের নাম লেখা হয়; এমনকি কর্মরতদের নাম, পদবিও থাকে ইংরেজিতে। ব্রিটিশরা আমাদের মনে পরনির্ভরতা ও বিদেশি ভাষার প্রতি যে অনুরাগ তৈরি করে গেছে, সেটি বদলাতে হবে। বিদেশি শব্দ ও ভাবধারার প্রতি আমাদের দুর্বলতা দূর করতে হবে। পৃথিবীর অনেক দেশ সরকারিভাবে তাদের নিজস্ব ভাষা ব্যবহারে সাফল্য দেখিয়েছে; তাহলে আমরা কেন পারব না?”

সবশেষে তিনি বলেন, মানবজাতি এক জাতি। ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ ইসলামের নিষিদ্ধ। সব ভাষাই আল্লাহর দেওয়া। প্রকৃতির বৈচিত্র্য যেমন স্বাভাবিক তেমনি ভাষার বৈচিত্র্যও স্বাভাবিক। ইসলাম ভূপ্রকৃতির কারণে জাতীয়তাবাদ এবং ভাষার কারণে বিভিন্নতার কারণে জাতীয়তাবাদ কোনটাকেই স্বীকার করে না। ইসলামের বিধানে সমস্ত মানুষ এক জাতি ভাষার কারণে কোনো জাতি অন্য জাতির উপরে শ্রেষ্ঠ হতে পারে না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দৈনিক দেশেরপত্রের সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, লায়ন কেফায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি সৈয়দ হুমায়ুন কবির, অতিথি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও লায়ন সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ নারী উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রূপা আহমেদ, দৈনিক বজ্রশক্তির সম্পাদক এসএম সামসুল হুদা, মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সহ-সভাপতি রিয়াদুল হাসান প্রমুখ।

বিশেষ অতিথি মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সহ-সভাপতি রিয়াদুল হাসান তার বক্তব্যে বর্তমানের বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভাষা ইংরেজি ভাষার বিভিন্ন দুর্বলতা তুলে ধরে বাংলা ভাষার সমৃদ্ধ সুশৃঙ্খল রূপ তুলে ধরেন।

বিশেষ অতিথি দৈনিক বজ্রশক্তির সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা তার বক্তব্যের সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ আদালতে ইংরেজি ভাষার ব্যবহারের নিন্দা জানিয়ে অনতিবিলম্বে এসব দপ্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান।

সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের বিশিষ্ট শিল্পীদের পরিবেশিত ভাষার গানে দেশের গানে মুখরিত হয় মিলনায়তন।

Continue Reading