Connect with us

খেলাধুলা

দ্বিতীয় ম্যাচে জয় দিয়ে বিশ্বকাপে ফিরল লংকানরা

Published

on

স্পোর্টস ডেস্ক:
মাহেলা জয়ার্বধনের সেঞ্চুরি আর শেষ দিকে থিসেরা পেরেরার অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্যে স্বস্তির জয় পেল বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়া শ্রীলংকা। নিউজিল্যান্ডের ডানেডিনে পুল এ’র ম্যাচে আফগানিস্তানকে চার উইকেটে হারিয়েছে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।গত কাল স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হওয়া ম্যাচে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তান ৪৯.৪ ওভারে ২৩২ রানে অলআউট হয়ে যায়। জবাবে বেশ কয়েকবার শঙ্কায় ভুগেও ৪৮.২ ওভারে ছয় উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় শ্রীলংকা। গ্র“প পর্বের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে ১০৫ রানের বিশাল ব্যবধানের হারার পর ভাবা হয়েছিল লংকানদের সামনে দাঁড়াতেই পারবে না বিশ্বকাপের নবাগত দলটি। কিন্তু উল্টো মোহাম্মদ নবীর দলই ঘাম ঝরিয়ে দেয় অ্যাঞ্জেলা ম্যাথুসের দলের।
দিনের দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিংয়ে ভালো পারফর্মেন্স করা আফগানরা ব্যাটিংয়েও শুভ সূচনাই করেছিল। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে জাভেদ আহমাদি এবং নওরোজ মঙ্গল প্রথম উইকেটে ৩৪ রান যোগ করেন। তবে দলীয় ৩৪ রানের মাথায় নওরোজ মঙ্গল এবং এর কিছুক্ষণ পরে জাভেদ আহমাদি আউট হয়ে গেলে আফগানদের স্কোর দাঁড়ায় দুই উইকেটে ৪০ রান। আসগার স্ত্যানিকযায় এবং সামিউল্লাহ শেনওয়ারির তৃতীয় উইকেটে ৮৮ রানের পার্টনারশিপে বড় সংগ্রহের ইঙ্গিত পাচ্ছিল আফগানরা। দুই ব্যাটসম্যানই বেশ সহজেই খেলছিলেন লংকান বোলারদের। আফগানদের বড় রান সংগ্রহের ইঙ্গিতে আসগার স্ত্যানিকযায়ির উইকেট তুলে নিয়ে লংকানদের ব্রেক থ্রু এনে সেন বাহাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ। স্ত্যানিকযায় ৫৭ বলে ৫৪ রান করে হেরাথের বলে মেন্ডিজের হাতে ধরা পড়লে ১২৮ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় আফগানিস্তান। স্ত্যানিকযায় আউট হওয়ার পর দলীয় ১৫৮ রানের মাথায় সামিউল্লাহ শেনওয়ারি ৩৮ রানে করে আউট হলে বড় ধাক্কায় খায় আফগানরা। এরপর মোহাম্মদ নবী ২১ রান করে আউট হলে আফগানিস্তানের স্কোর দাঁড়ায় পাঁচ উইকেটে ১৬৯ রান। এরপর অবশ্য শেষ দিকে মিরওয়াস আসরাফ ২৮ রানের ইনিংস ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যান লংকান বোলারদের সামনে দাঁড়াতে পারেননি।
২৩৩ রান খুব একটা বড় টার্গেট নয় শ্রীলংকার জন্যে। কিন্তু সেই টার্গেট তাড়া করতে নেমেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়লো লংকান টপঅর্ডার। প্রথম ওভারেই থিরিমান্নিকে এলবিডব্লিউ করে আফগানদের প্রথম ব্রেক-থ্রু এনে দেন দৌলত জাদরান। দ্বিতীয় ওভার দ্বিতীয় বলে শাপুর জাদরানের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিলকারতেœ দিলশানও। তখন লংকানদের স্কোর দুই উইকেটে দুই রান। দলীয় ১৮ রানে কুমারা সাঙ্গাকারাকে বোল্ড করে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু এনে দেন হামিদ হাসান। এরপর দলীয় ৫১ রানের মাথায় দিমুথ করুণারতেœ হামিদ হাসানের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হলে শ্রীলংকার স্কোর দাঁড়ায় চার উইকেটে ৫১ রান। লংকানদের বিপদে ঘুরে দাঁড়ালেন অভিজ্ঞ মাহেলা জয়াবর্ধনে। আর এসময়ে তার যোগ্য সঙ্গী হয়ে ওঠেন অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলা ম্যাথুস। এই দু’জন পঞ্চম উইকেটে ১২৬ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন। ম্যাথুস ৮১ বলে ৪৪ রান করে দলীয় ১৭৭ রানের মাথায় আউট হলে পঞ্চম উইকেট খোয়ায় শ্রীলংকা। ইনিংসের ৪১তম ওভারের শেষ বলে ক্যারিয়ারের ১৯তম সেঞ্চুরি তুলে নেন মাহেলা জয়াবর্ধনে। এই ইনিংস খেলার পথে মাহেলার ব্যাট থেকে আসে আট চার এবং একটি ছয়ের মার। কিন্তু দলীয় ১৭৮ রানের মাথায় হামিদ হাসানের বলে থার্ড ম্যানে নওরোজ মঙ্গলের হাতে মাহেলা ক্যাচ দিলে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে পূণর্বার বিপদে পড়ে যায় লংকানরা। মাহেলা জয়াবর্ধনের বিদায়ের পর পরাজয়ের শঙ্কা ঘিরে ধরে শ্রীলংকাকে। কিন্তু সপ্তম উইকেটে থিসেরা পেরেরা এবং জীবন মেন্ডিসের ৬০ রানের দুরন্ত পার্টনারশিপে শেষ পর্যন্ত ১৪ বল বাকি স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লংকানরা। থিসেরা পেরারা ৪৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। ব্যক্তিগত ১০০ রান ও নিজের ১৯তম সেঞ্চুরি করে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন মাহেলা জয়াবর্ধনে।এই ম্যাচে জয়লাভ করলেও দুই ম্যাচ খেলে গ্র“পে চতুর্থ অবস্থানেই আছে শ্রীলংকা। আর আফগানিস্তান আছে তাদের পরের স্থানেই। যথারীতি প্রথম ম্যাচে জয় ও দ্বিতীয় ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় পুল এ’র তৃতীয় স্থানে আছে বাংলাদেশ। গ্র“পের শীর্ষে যথারীতি স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ৪৯.৪ ওভারে ২৩২ (আহমাদি ২৪, নওরোজ ১০, আসগর ৫৪, সামিউল্লাহ ৩৮, নবি ২১, নাজিবুল্লাহ ১০, আফসার ১৯, আশরাফ ২৮, দৌলত ৪, হাসান ০, শাপুর ১*; মালিঙ্গা ৩/৪১, ম্যাথিউস ৩/৪১, লাকমাল ২/৩৬, হেরাথ ১/৪১, থিসারা ১/৫৪)।
শ্রীলঙ্কা: ৪৮.২ ওভারে ২৩৬/৬ (থিরিমান্নে ০, দিলশান ০, সাঙ্গাকারা ৭, করুনারতেœ ২৩, জয়াবর্ধনে ১০০, ম্যাথিউস ৪৪, মেন্ডিস ৯*, থিসারা ৪৭*; হামিদ ৩/৪৫, দৌলত ১/৪৪, শাপুর ১/৪৮)।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *