Connect with us

চট্রগ্রাম

ধসের আশঙ্কায় পাহাড় থেকে সরানো হলো ৯২ পরিবার

Published

on

নিউজ ডেস্ক:
চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় নগরীর খুলশী ও বায়েজিদ এলাকা থেকে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী ৯২ পরিবারকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এ সময় ২০টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে বিষয়টি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক।

জানা যায়, ভূমিধসে হতাহতের আশঙ্কায় নগরীর বাটালি হিল, মতিঝর্ণা, আকবরশাহ, হিল-১, হিল-২ এবং বায়েজিদ লিংক রোড সংলগ্ন পাহাড়ে অভিযান চালায় জেলা প্রশাসনের টিম। সেখান থেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত ৩১০ জনকে সরিয়ে চারটি আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো হচ্ছে- বায়েজিদের আল হেরা মাদ্রাসা, রউফাবাদ রশিদিয়া মাদ্রাসা, ফিরোজ শাহ কলোনি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং লালখান বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে ৯২টি পরিবারের ৩১০ সদস্যকে সরিয়ে নিয়ে এসেছি। তাদের জন্য খাবারসহ সব সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অভিযান এখনও চলমান আছে। আমরা বিভিন্ন পাহাড় পরিদর্শন করে দেখছি, কারা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছেন, সবাইকে আমরা সরিয়ে নেব।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান জানান, আশ্রয়কেন্দ্রে আনা পরিবারগুলোকে খাদ্য সহায়তা ও প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বুধবার দুপুরে তাদের ভুনা খিচুড়ি ও ডিম সরবরাহ করা হয়। রাতের খাবারও দেয়া হবে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরতদের পাহাড় থেকে সরে যেতে এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।

পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির তথ্যমতে, চট্টগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় রয়েছে ২৫টি। এসব পাহাড়ে কম-বেশি ঝুঁকিতে বসবাসকারী লোকজনের সংখ্যা লাখের ওপরে। তারা বেশিরভাগই নিম্নআয়ের। এর মধ্যে ১৮টি পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের তালিকা করেছে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি। বাকি পাহাড়গুলোর তালিকা এখনও শেষ হয়নি।

পাহাড় ধসে গত ১৫ বছরে তিন শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের প্রায় সবাই ছিলেন পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাসকারী হতদরিদ্র লোকজন। বসবাসকারীদের মতে, শহর অঞ্চলে পাহাড়ের পাদদেশে তৈরি করা ঝুঁকিপূর্ণ বস্তিঘরে কম টাকায় থাকতে পারে শ্রমজীবী লোকজন। গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগও মেলে সহজেই।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ১১ জুন স্মরণকালের ভয়াবহ পাহাড় ধসে চট্টগ্রামে ১২৭ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। ২০০৮ সালের ১৮ আগস্ট লালখানবাজারের মতিঝর্ণা এলাকায় পাহাড় ধসে মারা যান ১১ জন। ২০০৯ ও ২০১০ সালে নগরীর পাহাড়তলী, সিআরবি, ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে মারা যান আরো ১৫ জন।

২০১১ সালের ১ জুলাই পাহাড় ধসে একই পরিবারের ৮ জনসহ বাটালি পাহাড়ের রিটেইনিং দেয়াল ধসে ১৭ জন মারা যান। ২০১২ সালে ১৭ জুন নগরীর ফিরোজ শাহ কলোনিসহ বিভিন্ন এলাকায় ২৩ জন মারা গেছেন। ২০১৩ সালে পাহাড় ও দেয়াল ধসে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। ২০১৪ সালে ১ জন। ২০১৫ সালের ১৮ জুলাই বায়েজিদ এলাকার আমিন কলোনিতে ৩ জন এবং ২১ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ থানার মাঝিরঘোনা এলাকায় মা-মেয়ে মারা যান।

এছাড়া ২০১৬ সালে নগরীতে কেউ মারা না গেলেও সে বছরের ১৩ জুন রাঙ্গুনিয়া ও চন্দনাইশে ২৫ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৭ সালের ১২-১৩ জুন রাঙামাটিসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের ৫ জেলায় প্রাণ হারান ১৫৮ জন। ২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর চট্টগ্রামের আকবরশাহের ফিরোজশাহ কলোনিতে ৪ জন মারা যান।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *