জাতীয়
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে সুন্দরবনের কোন ক্ষতি হবে না : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী আজ বিকেলে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সুন্দরবন ধ্বংস করবে বলে একটি মহলের দাবি নাকচ করে দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সুন্দরবনের সীমানা থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার এবং ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত, একটি গভীর বনের ১০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে কোন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা যাবে না।
প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনকে একটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে ইউনেস্কোর ঘোষণার উল্লেখ করে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে এই স্বীকৃতি অর্জন করা সম্ভব হয়।
শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারে বিএনপি চেয়ারপার্সনের যোগ দেয়ার সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের অবস্থান অনেকটা মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি হওয়ার মতো।
শেখ হাসিনা বলেন, ন্যায্যমূল্যে জনগণের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছাতে এবং ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে দেশে বিভিন্ন অংশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রামপালে প্রস্তাবিত বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এগুলোর একটি।
তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে উন্নয়ন বিরোধী একটি স্বার্থান্বেষী মহল জনগণের মধ্যে নেতিবাচক, ভিত্তিহীন, কল্পকাহিনী ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে।
সর্বশেষ ২৪ আগস্ট বিএনপি চেয়ারপার্সনের এ প্রপাগান্ডায় যোগ দেয়ায় মনে হচ্ছে এর পেছনে এক গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তা না হলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরুর অনেক সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরে তিনি কেনো জনসম্মুখে নেতিবাচক অবস্থান ব্যক্ত করলেন?
শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়া ভেতর থেকে প্ররোচণা দিচ্ছিলেন। গত ২৪ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনিও ওই অপপ্রচারে অংশ নেন।’ শেখ হাসিনা আরো বলেন, সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরোধিতায় বিশেষ মহলের সঙ্গে খালেদা জিয়া জনসম্মুখে আসার পেছনে একটি গভীর ষড়যন্ত্র থাকতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সম্পর্কে বিএনপি নেত্রীর দেয়া সকল তথ্য-উপাত্ত মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর।
তিনি আরো বলেন, জনগণকে বিভ্রান্তি করার জন্যই তিনি মিথ্যা তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী এই কয়লাকে ভবিষ্যত জ্বালানির সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সম্পদ অভিহিত করে বলেন, অদূর ভবিষ্যতে দেশের গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ রাখা সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানী, চীন ও জাপানের মতো উন্নত দেশ এবং প্রতিবেশী ভারত তাদের ৪০ থেকে ৯৮ শতাংশ বিদ্যুৎ চাহিদা মেটায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ থেকে। কিন্তু বাংলাদেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ মাত্র এক শতাংশের সামান্য বেশি।