দেশজুড়ে
রৌমারীর প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলনকারী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আজিজুল হক জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে
তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রতি মাসে চিকিৎসক ও ওষুধ বাবদ দেড় থেকে দুই লাখ টাকা খরচ হয়। পরিবারের সদস্যরা মনে করেন, উন্নত চিকিৎসা পেলে হয়তো তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আজিজুল হক মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সাপ্তাহিক অগ্রদূত নামের একটি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। পত্রিকাটির কপি বর্তমানে জাতীয় যাদুঘর, বাংলা একাডেমি, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। তিনি কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা সদরে অবস্থিত সবচেয়ে পুরাতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রৌমারী সি জি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘ ৪০ বছর শিক্ষকতা করেছেন। তিনি কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ইং সালে অসুস্থ্য হওয়ার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রৌমারী উপজেলা শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়া অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পেছনে রয়েছে এই গুণী ব্যক্তির প্রত্যক্ষ ভূমিকা।
আজিজুল হকের বড় ছেলে আইনজীবী মো. মাসুম ইকবাল বলেন, বাবা এখন আগের স্মৃতি ঠিকমতো স্মরণ করতে পারেন না এবং কারো কথা বুঝতে পারেন না। আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধে অনেক অবদান রেখেছেন। ছাত্রজীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্বাধীনতা ঘোষণার পর তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। বিভিন্ন সময় মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন। এখন আমার বাবার শরীরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কেউ দেখতেও আসেননি। হয়তো তার মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার দেওয়া হবে। অনেক সম্মানের সঙ্গে তাকে সমাহিত করা হবে। কিন্তু এখন কিছুই করা হচ্ছে না। সরকার এগিয়ে আসলে আমার বাবার উন্নত চিকিৎসা করা সম্ভব হতো এবং তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।
রৌমারী মুক্তাঞ্চল আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। রৌমারীবাসীর সার্থক প্রতিরক্ষা দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তিসংগ্রামের এক শ্রেষ্ঠ কৃতিত্ব, গৌরবের ইতিহাস, বাঙালিজাতির শৌর্যবীর্যের প্রতীক। দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে রৌমারীই ছিল একমাত্র থানা সদর যা কোনো দিনও বর্বর পাকবাহিনীর নরপিশাচদের পদধূলিত কলঙ্কিত হয়নি। যেখানে যুদ্ধকালীন দীর্ঘ সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা সর্বক্ষন স্বগৌরবে উড্ডীন ছিল।