Connect with us

খেলাধুলা

ক্রিকেট বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো এশিয়ার চারটি দল নকআউট পর্বে উত্তীর্ণ হওয়ার রেকর্ড

Published

on

s-7স্পোর্টস ডেস্ক:
চলতি বিশ্বকাপেও এশিয়ার আধিপত্য বেশ সুস্পষ্ট। আইরিশদের হারিয়ে শেষ আটে নাম লিখিয়েছে পাকিস্তান। এর আগে কোয়ার্টারের টিকিট পেয়েছে ভারত, শ্রীলংকা ও বাংলাদেশ। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো এশিয়ার চারটি দল নকআউট পর্বে উত্তীর্ণ হওয়ার রেকর্ড হলো এই প্রথম। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপে এশিয়ার সাফল্য চোখে পড়ার মতো। ১৯৮৩ বিশ্বকাপ থেকে ২০১১- বিশ্বকাপের গেল ৮ আসরের ৭টিতেই ফাইনালে এশিয়ার কোনো না কোনো দল খেলেছে। সর্বশেষ ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালে তো ছিল অল এশিয়ান। যেখানে শ্রীলংকাকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল ভারত। গত বিশ্বকাপে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকা- এই তিনটি দেশ সেমিফাইনালে উত্তীর্ণ হয়ে এশিয়ার আধিপত্য বজায় রাখে। এবার পেছন ফিরে তাকানো যাক। ১৯৭৫ ও ১৯৭৯ বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। দুই আসরে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই দুই আসরে এশিয়ার কোনো দল ফাইনালে খেলতে না পারলেও ১৯৭৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তান সেমিফাইনালে খেলে। যদিও ৪৩ রানে হেরে ফাইনালে যাওয়া হয়নি আসিফ ইকবালের দলের। ১৯৮৩ বিশ্বকাপে কপিল দেবের হাত ধরে ভারতের শিরোপা জেতার মধ্য দিয়ে এশিয়ার আধিপত্যের শুরু। সেবারও পাকিস্তান সেমিফাইনালে খেলে।
এরপর ১৯৮৭ বিশ্বকাপে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকা এশিয়াকে হতাশ করে। ফাইনালে এশিয়ার কোনো প্রতিনিধি না থাকলেও ভারত ও পাকিস্তান সেমিফাইনালে উত্তীর্ণ হয়ে এশিয়ার সম্মান কিছুটা টিকিয়ে রেখেছিল। ভারত ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৩৫ রানে হেরে ও পাকিস্তান অস্ট্রেলিয়ার কাছে ১৮ রানে হেরে ফাইনালে উঠার স্বপ্ন বিসর্জন দেয়। এরপর ৯২’র বিশ্বকাপে ইমরান খানের পাকিস্তান শিরোপা জিতে গোটা বিশ্বকে চমকে দেয়। এশিয়ার আধিপত্য অব্যাহত থাকে পরের বিশ্বকাপেও। ১৯৯৬ এর বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে শ্রীলংকা ও ভারত এশিয়া থেকে উত্তীর্ণ হয়। ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে যাওয়া অর্জুনা রানাতুঙ্গের শ্রীলংকা অস্ট্রেলিয়াকে তুলোধুনো করে শিরোপা জিতে। এরপর ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় ১৯৯৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে এশিয়া থেকে উত্তীর্ণ হয় পাকিস্তান। যদিও অস্ট্রেলিয়ার কাছে বড় ব্যবধানে হারের লজ্জা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ওয়াসিম আকরামের দলকে। দুর্দান্ত খেলে ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে সৌরভ গাঙ্গুলির ভারত। তবে জোহানেসবার্গের ফাইনালে রিকি পন্টিং ও ডেমিয়েন মার্টিনের অনবদ্য ব্যাটিংয়ের সুবাদে ১২৫ রানের বড় পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে শচীন-সৌরভরা। এরপর আসে ২০০৭ বিশ্বকাপ। ক্যারিয়ান দীপপুঞ্জে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে এশিয়ার দলগুলোকে চরম হতাশ করে সমর্থকদের।
পাকিস্তান ও ভারত তো প্রথম পর্বের বাধাই অতিক্রম করতে পারেনি। বাংলাদেশের কাছে হেরে ভারত ও আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরে পাকিস্তান প্রথম রাউন্ড থেকেই ধরে দেশের বিমান। বাংলাদেশ দ্বিতীয় রাউন্ডে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দেশকে হারিয়ে কিছুটা চমক সৃষ্টি করে। তবে ভারত-পাকিস্তান লজ্জাজনকভাবে বিদায় নিলেও ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়ে শ্রীলংকা এশিয়ার সম্মান রক্ষা করে। এবার গিলক্রিস্টের দানবীয় ব্যাটিংয়ের কারণে বৃষ্টিবৃঘিœত ম্যাচে ৫৩ রানের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় মাহেলা জয়াবর্ধনের দলকে। এরপর আসে ২০১১ বিশ্বকাপ। এবার প্রথমবারের মতো ভারত ও শ্রীলংকা এশিয়ার এই দুটি দল ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়। ফাইনালে মাহেলা জয়াবর্ধনের হার না মানা ৮৮ বলে ১০৩ রানের কল্যাণে ২৭৪ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করাতে সক্ষম হয় লংকানরা। তবে গৌতম গাম্ভীর ও অধিনায়ক মাহেন্দ্র সিং ধোনির দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের সুবাদে ৬ উইকেটের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত। এবারের বিশ্বকাপে এশিয়ার চারটি দল কোয়ার্টার ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়ে এশিয়ান আধিপত্য অব্যাহত রাখার সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলে। কোয়ার্টারে বাংলাদেশ ও ভারত মুখোমুখি হবে। অতএব সেমিফাইনালে আমরা এশিয়া একটি দেশকে যে পাচ্ছি সেটি নিশ্চিত। অন্য দুই ম্যাচে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া এবং শ্রীলংকার প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *