Connect with us

দেশজুড়ে

সড়ক দুর্ঘটনায় সকাল হলোনা লালমনিরহাটের মজনু মিয়ার!

Published

on

বাংলাদেশেরপত্র ডেস্ক: ভোর তিনটায় ফোন করে মাকে বললেন, আমি বগুড়া চলে এসেছি, সেহেরী করো, সকালে(শনিবার) দেখা হচ্ছে মা। আমারা এক সাথে ইফতার করবো। বাড়ীর বড় মুরগীটা রান্না করিও । মায়ের সাথে সর্বশেষ কথা বলেন মজনু মিয়া(২২)। শনিবার ভোরে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার কলাবাগান কালিবাড়ি এলাকায় ট্রাক উল্টো ১৭ জনের মধ্যে মজনু’র করুণ মৃত্যু ঘটে। নিহত মজনুর বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার উত্তর বত্রিশ হাজারী গ্রামে। তার বাবার নাম জাহাঙ্গীর আলম।
জাহাঙ্গীর আলম জানান, মজনুর দেশী মুরগীর মাংস বেশ পছন্দ। তাই ছেলে ছুটি পেয়েছে শুনে বাড়ি বড় মুরগীটা রান্না করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যার আগে বাড়ি পৌছার কথা ছিল মজনুদের। কিন্তু যানজটের কারনে তাদের ট্রাকটি সেহরী করায় সিরাজগঞ্জে। বগুড়ায় পৌছে সর্বশেষ মোবাইলে কথা হয় বাবা ছেলে ও মায়ের সাথে। ওই ট্রাকের যাত্রী ছিল মজনুর চাচাত বোন বন্যা(৮)। সেও মৃত্যু’র মিছিলে সামিল হয়েছে মজনুর সাথে। আহত রয়েছে মজনুর চাচা ঝন্টু মিয়া, চাচি জামিনাসহ অনেকেই।
সরেজমিনে মজনুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মজনুর মা মাহফুজা বেগম ছেলের মৃত্যুর খবরে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। জেগে উঠলেও সাথে সাথে সজ্ঞা হারিয়ে ফেলছেন তিনি। একই গ্রামের কোহিনুর ইসলাম(৪২) ৬ বছর ধরে ঢাকায় কাজ করেন। একমাত্র মেয়ে কুলসুমের বিয়ের সময় করার ঋণ পরিশোধ করতেই ঢাকায় কাজ শুরু করেন এ দিনমজুর। সর্বশেষ রমযানের শুরুতে বাড়ি এসেছিলেন। আবারও চলে যান ঢাকায় ঈদের খরচ যোগাতে। বাসের টিকিট সোনার হরিন তাই মিলাতে ব্যর্থ হয়ে ঝুকি নিয়ে গ্রামের অন্যদের সাথে ট্রাকে উঠেন কোহিনুর ইসলাম। বাড়ি ফেরার সংবাদ একমাত্র ছেলে রুবেলের মোবাইলে জানান তিনি।
এ সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ১৬ জনের করুণ মৃত্যু ঘটে। ট্রাকের যাত্রী মজনু ও শিশু বন্যা ও কোহিনুরসহ নিহতদের মধ্যে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার বালাপাড়া, উত্তর বাত্রিশ হাজারী ও লতাবড় গ্রামে ১০জন ও আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নে ২জন রয়েছে। তাদের মধ্যে অধিকাংশ গার্মেন্টস ও নির্মাণ শ্রমিক। এখন এ গ্রামগুলোতে চলছে শোকের মাতম। পরিবারের সাথে ঈদ করতে আসছিল তারা। তবে তারা ঠিকই বাড়িতে ফিরল কিন্তু লাশ হয়ে ।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *