Connect with us

জাতীয়

বন্যার্তদের ঘরবাড়ি ও ভূমিহীনদের জমি দেওয়া হবে: প্রধানমন্ত্রী

Published

on

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বন্যায় যারা বাড়ি-ঘর হারিয়েছে তাদের ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে। এছাড়া ভূমিহীনদের জমি দেওয়া হবে। দেশের ২১টি জেলার ফসল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্যা পরবর্তী কৃষি পুনর্বাসনের জন্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রত্যেককে এক বিঘা জমির চারা বিতরণ করা হবে। বীজ, কীটনাশক, সারসহ অন্যান্য উপকরণও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। বন্যায় যেসব কৃষকের ফসল নষ্ট হয়েছে তাদের পর্যাপ্ত কৃষি ঋণ প্রদান করা হবে। ওইসব এলাকায় কোন ধরনের ব্যাংক ঋণের সুদ আদায় করা হবে না। যারা পূর্বে ঋণ নিয়েছিল তাদেরকেও নতুন করে ঋণ দেওয়া হবে। বন্যা কবলিত এলাকায় কৃষির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিনা জামানতে সুদমুক্ত ঋণ দেওয়া হবে।

শনিবার (২৬ আগস্ট) বেলা পৌনে ১১টার দিকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ও কৃষকদের মাঝে আমন ধানের চারা বিতরণকালে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার সব ধরনের বিপদে মানুষজনের পাশে আছে এবং থাকবে। কিন্তু বিএনপি নেতা খালেদা জিয়া বন্যার্তদের পাশে না দাঁড়িয়ে আয়েশি জীবনযাপন করছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সরকার ৩ মাস পর্যন্ত সবধরনের সহায়তা দেবে। এক কোটি দরিদ্র মানুষকে ১০ টাকা কেজিতে চাল দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা পর্যন্ত আপনারা কোনো চিন্তা করবেন না। আপনাদের ভাগ্যের উন্নয়ন ও পুনর্বাসনে আমি আন্তরিকভাবে সক্রিয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মত আমিও জনগণের জন্য আমার জীবনকে উৎসর্গ করার অঙ্গীকার করেছি। আওয়ামী লীগ দুঃখী মানুষের দল। তাই আপনাদের পাশে বন্ধু হিসেবে, স্বজন হিসেবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের দুর্ভোগ ও কষ্ট লাঘবে ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি নানান কর্মসূচি গ্রহণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বন্যার পর পর্যাপ্ত ওষুধ ও চিকিৎসা সেবা প্রদানের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা-ঘাট, পুল-কালভার্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মেরামত ও নির্মাণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে সকল শিক্ষার্থীর বই-খাতা বন্যার পানিতে নষ্ট হয়েছে তা আবার সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হওয়ায় মানুষ যেন অভুক্ত না থাকে সে জন্য বিদেশ থেকে খাদ্য শস্য আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী এনজিও’র উদ্দেশে বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের উপর জুলুম করবেন না। এখন কোন ধরনের ঋণের কিস্তি আদায়ের চেষ্টা করবেন না।

প্রধানমন্ত্রী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩ হাজার পরিবারকে ত্রাণ সামগ্রী ও ৯০ কৃষককে ধানের চারা বিতরণ করে। ত্রাণ বিতরণ শেষে স্থানীয় উপজেলা পরিষদ হল রুমে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুধী সমাজ ও বন্যা ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করবেন। এসময় গাইবান্ধা-৪ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ এর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, খাদ্য মন্ত্রী কামরুল ইসলাম, পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক,খালেদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, হুইপ মাহবুব আরা বেগম গিনি এমপি, সংসদ সদস্য ডা, ইউনুস আলী সরকার, সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাড. শামসুল আলম হিরু, সাধারন সম্পাদক আবু ব্ক্কর সিদ্দিক প্রমূখ।

এরআগে বন্যা দুর্গত বানভাসীদের ত্রাণ ও খোঁজ নিতে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বোয়ালিয়ায় হেলিপ্যাডে হেলিকপ্টারযোগে শনিবার (২৬ আগষ্ট) সকাল সোয়া ১০টায় অবতরণ করেন। এসময় রাজনৈতিক ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এরপর তিনি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরের ঈদগাহ মাঠে বানভাসীদের খোঁজ, ত্রাণ বিতরণ ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ধানের চারা বিতরণ করার জন্য রওনা হন।

গোবিন্দগঞ্জে যোহরের নামাজ ও মধ্যাহ্ন বিরতীর পর বেলা ২টায় বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার বন্যা দুর্গত মানুষদের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ও তাদের খোঁজ নিতে এখান থেকে হেলিকপ্টারযোগে রওনা হবেন।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *