Connect with us

দেশজুড়ে

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়: অবশেষে ১৪ শিক্ষকের ২৭টি প্রশাসনিক পদের পদত্যাগপত্র গৃহিত

Published

on

download (10)

 

বেরোবি প্রতিনিধি:

অবশেষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭টি প্রশাসনিক পদ থেকে ১৪ জন শিক্ষকের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার পূর্বহ্নে তাদের পদত্যাগপত্র গৃহিত হয়েছে মর্মে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোর্শেদ উল আলম রনি স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

জানাগেছে, কিছু দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত ৯ থেকে ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে ১৮ জন শিক্ষক মোট ৩৫ টি প্রশাসনিক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরমধ্যে ৪ জন শিক্ষক ৮টি পদে তাঁদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে দায়িত্বে যোগদান করেন। বাকি ১৪ জন শিক্ষক ২৭টি পদে তাদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার না করায় অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁেদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে।

রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জানিয়েছেন, পদত্যাগকারী শিক্ষকদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করার জন্য মৌখিকভাবে বহুবার এবং লিখিতভাবে সময় দিয়ে তিনবার অনুরোধ জানানো হলেও তারা তাদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করেন নি।

রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আরো জানান, পদত্যাগকারী শিক্ষকদের পদত্যাগপত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত হয়নি জানিয়ে তাদের বরাবর পত্রের (স্মারক নং- বেরোবি/রেজিঃ/পত্র/ ২০১৪/১২২৩, তারিখ:০৪-১২-২০১৪ খ্রীঃ) মাধ্যমে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারা উক্ত পত্রের কোন জবাব দেননি এবং তাদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারপূর্বক অর্পিত দায়িত্বে যোগদানও করেন নি। এমতাবস্থায় ১৮ মার্চ ২০১৫ তারিখের মধ্যে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারপূর্বক অর্পিত দায়িত্বে যোগদানের জন্য ২য় পত্রের (বেরোবি/ রেজিঃ/পত্র/ ২০১৫/ ১২৯৬ (১-১৫), তারিখ: ১১-০৩-২০১৫ খ্রীঃ) মাধ্যমে পুনরায় অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু উক্ত সময়ের মধ্যেও তারা তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের নিমিত্তে তাদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করেন নি।

তবে ১৮ মার্চ শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে পদত্যাগকারী শিক্ষকগণের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারপূর্বক অর্পিত দায়িত্ব পালন প্রসঙ্গে জানানো হয় যে, শিক্ষক সমিতির আহুত ২৫ মার্চ ২০১৫ তারিখে সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পদত্যাগকারী শিক্ষকগণ পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করবেন কিনা সে বিষয়ে অবগত করা হবে। কিন্তু ২৫ মার্চ ২০১৫ তারিখে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরে প্রেরিত অপর এক পত্রের মাধ্যমে জানানো হয় যে, ‘অনিবার্য কারণে ২৫ মার্চ ২০১৫ তারিখের সভা স্থগিত হওয়ায় পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত অবগত করা যাচ্ছে না। দ্রুত সময়ে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত অবগত করা হবে।’

এমতাবস্থায়, উক্ত পদের বিপরীতে প্রদত্ত পদত্যাগপত্র আগামী ৩১ মার্চ ২০১৫ তারিখের মধ্যে প্রত্যাহারপূর্বক অর্পিত দায়িত্ব পালনের জন্য ৩য় পত্রের (স্মারক নং-বেরোবি/রেজি:/ পত্র/২০১৫/১৩১০(১-১৪), তারিখ: ২৫-০৩-২০১৫) মাধ্যমে আবার অনুরোধ জানানো হলেও তারা উক্ত সময়ের মধ্যে তাদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করেন নি। এমনকি বুধবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত শিক্ষক সমিতিও লিখিত বা মৌখিকভাবে এ ব্যাপারে কোন কিছুই জানায়নি। ফলে তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে।

যাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে, তারা হলেন, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন, শহীদ মুখতার ইলাহী হলের প্রভোস্ট এবং গণিত, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের পদ (৫টি পদ) থেকে পদত্যাগকারী ড. আর এম হাফিজুর রহমান (সেলিম), কলা অনুষদের ডিন, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট, বাংলা বিভাগের প্রধান ও অর্থ কমিটির পদ (৪টি পদ) থেকে পদত্যাগকারী ড. সাইদুল হক (শিমুল মাহমুদ), পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রধান পদ (৫টি পদ) থেকে পদত্যাগকারী ড. মোরশেদ হোসেন, সিন্ডিকেট সদস্য ও অর্থ কমিটির সদস্য পদ (২টি পদ) থেকে পদত্যাগকারী ড. সরিফা সালোয়া ডিনা, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের প্রধান ও অর্থ কমিটির সদস্য পদ (২টি পদ) থেকে পদত্যাগকারী রফিউল আজম খান (নিশার), ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সহকারী প্রভোস্ট পদ থেকে পদত্যাগকারী তানিয়া তোফাজ, সাইদুর রহমান ও শেখ মাজেদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সহকারী প্রভোস্ট পদ থেকে পদত্যাগকারী ড. শফিকুর রহমান, শরীফুল ইসলাম, কমলেশ চন্দ্র রায় ও আজিজুর রহমান, রসায়ন বিভাগের প্রধান পদ থেকে পদত্যাগকারী এইচ. এম তারিকুল ইসলাম এবং ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান পদ থেকে পদত্যাগকারী আলী রায়হান সরকার।
এদিকে পদত্যাগপত্র গ্রহণ করায় এসব শুন্য পদে তাৎক্ষনিভাবে কাউকে নিয়োগ দেওয়া না হলেও অতিদ্রুত নিয়োগ দেওয়া হবে বলেও জানা গেছে।

এব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম নূর-উন-নবী বলেন, দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও তাদের (পদত্যাগকারী শিক্ষক) কোন সাড়া না পেয়ে ৯০ হাজার শিক্ষার্থীর কথা ভেবে ভর্তিপরীক্ষা গ্রহণ ও ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিবেশ রক্ষার জন্য উপায়হীন হয়েই তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *