চা শিল্পকে কেন্দ্র করে পর্যটন খাতেও আয়ের সম্ভাবনা
সিলেট প্রতিনিধি:
দু’টি পাতা একটি কুঁড়ির দেশ সিলেট। আর চায়ের রাজধানী হলো শ্রীমঙ্গল। ১৮৫৪ সালে সিলেটে মালনিছড়া চা বাগান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশে চা আবাদের গোড়াপত্তন হয়। এটিই বাংলাদেশের প্রথম চা বাগান যা ১৮৫৭ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে চা উৎপাদন করে আসছে। ১৮৮০ সালে শ্রীমঙ্গলের বালিশিরা উপত্যকায় চা আবাদ শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে চা আবাদ বৃহত্তর সিলেটে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে মোট ১৬২টি চা বাগানের মধ্যে সিলেট বিভাগে রয়েছে ১৩২টি চা বাগান। এর মধ্যে সিলেটে ১৯টি, হবিগঞ্জে ২৩টি এবং মৌলভীবাজারে ৯০টি। বাংলাদেশের অন্যতম অর্থকরী ফসল চা উৎপাদন করে বৃহত্তর সিলেট জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে।
চা বোর্ড সূত্র জানায়, বাংলাদেশের ১৬২টি চা বাগানের মোট আয়তন প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার হেক্টর। এরমধ্যে বৃহত্তর সিলেটের ১৩২টি চা বাগানের মোট আয়তন ৯৮ হাজার হেক্টর। দেশের ১৬২টি চা বাগানে বর্তমানে প্রায় ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে চা আবাদ করা হচ্ছে। এরমধ্যে সিলেট বিভাগেই রয়েছে ৪৮ হাজার হেক্টর। বাংলাদেশ গড়ে বছরে ৬০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন করে থাকে। ৬০ মিলিয়ন কেজি চায়ের সিংহভাগ অর্থাৎ প্রায় ৫৩ মিলিয়ন কেজি চা-ই উৎপাদন হয় সিলেটে। বাংলাদেশে হেক্টর প্রতি গড় উৎপাদন ১২৪৭ কেজি অথচ সিলেটে হেক্টর প্রতি গড় উৎপাদন ১২৩০ কেজি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চা বাগান পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়। এজন্যে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ছুটে আসেন চা বাগান দেখতে। চা বাগানের মনোমুগ্ধকর এবং নয়নভোলানো নৈসর্গিক অপরূপ সৌন্দর্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করে সহজেই। তাই সিলেটের চা বাগানগুলোর ভেতর বিশেষ কিছু জায়গা চা উৎপাদনের সামান্য ক্ষতি না করেও পর্যটকদের মনোলোভা করে গড়ে তোলা সম্ভব। এটিও হতে পারে বাড়তি আয়ের একটি পথ। অনেক চা বাগানেই রয়েছে লেক। যেসব কেবল সেচ ও মৎস্য চাষের কাজে ব্যবহার না করে পর্যটনের কাজেও লাগানো যেতে পারে। গড়ে তোলা যেতে পারে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে। চায়ের সহায়ক শিল্প হিসেবে মাধবপুর চা বাগানের বিশাল কৃত্রিম লেক এবং বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের নিয়ন্ত্রণাধীন বিলাসছড়া পরীক্ষণ চা খামার লেক সামান্য কিছু আকর্ষণীয় আয়োজনে পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে তোলা যেতে পারে যা বাড়তি আয়ের খুব ভালো উৎস হতে পারে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নজর দেওয়া উচিত।