Connect with us

Highlights

আইনের তোয়াক্কা না করেই একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক জাকির আহমেদ খান!

Avatar photo

Published

on

সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার:
সাবেক আমলা ও বর্তমানে সাউথইস্ট ব্যাংকের উপদেষ্টা জাকির আহমেদ খানের বিরুদ্ধে একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পদ কুক্ষিগত করে রাখা, অনিয়ম-দূর্নীতিসহ বিভিন্ন নান অভিযোগ তুলেছেন প্রতিষ্ঠানটির অনেক কর্মকর্তা।  দীর্ঘ সময় উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও ব্যাংক তার কাছ থেকে কিছুই পায়নি বলে অভিযোগ তাদের।  বিষয়টি নিয়ে ভিতরে-বাইরে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।  তারা বলছেন, তিনি না থাকলে ব্যাংক বছরে কমপক্ষে আরও দুই কোটি টাকা বেশি মুনাফা অর্জন করতো। আর এতে করে ব্যাংকের সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা উপকৃত হতো।  তবে ওসব অনিয়ম নিয়ে এতোগুলো বছর ধরে রহস্যজনকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংক আইনের তোয়াক্কা না করে সাবেক আমলা জাকির আহমেদ খান সাউথইস্ট ব্যাংকসহ একাই দখল করে আছেন অনেকগুলো আর্থিক ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পদ। ২০১০ সালে সাউথইস্ট ব্যাংকে উপদেষ্টা হিসেবে যোগদানের পর আজ অবধি দীর্ঘ ১১ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি ব্যাংকের উপদেষ্টা পদে নিয়োজিত রয়েছেন। চলতি মাসেই আবারও সাউথইস্ট ব্যাংকের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নবায়ন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে সাউথইস্ট ব্যাংক সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র।

সূত্র জানায়, বিএনপি-জামায়াতের আশীর্বাদপুষ্ট আমলা হিসেবে বিএনপি শাসনামলে সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন জাকির আহমেদ। সেসময় বিএনপি জামাত চারদলীয় জোটের বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তার কার্যকর ভূমিকা ছিল। ফলে দলীয় আমলা হিসেবে কুখ্যাতি ছিল তার। পরবর্তীতে সরকারি চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণের পর প্রভাব খাটিয়ে আস্তে আস্তে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। প্রথমে ২০১০ সালে উপদেষ্টা হিসেবে যোগদান করেন সাউথইস্ট ব্যাংকে। তখন থেকে আজ অবধি দীর্ঘ ১১ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি ব্যাংকের উপদেষ্টা পদে নিয়োজিত রয়েছেন। ব্যাংকে শুধু উপদেষ্টা হিসাবে থাকলে কোনো সমস্যা ছিল না, তিনি এ সময়ের মধ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে একের পর এক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের স্বতন্ত্র পরিচালকের পদ দখল করে আছেন। মূলত সাউথইস্ট ব্যাংকের উপদেষ্টা পদের প্রভাব খাটিয়ে তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পদ দখল করেন। যেটা স্পষ্টতই বাংলাদেশ ব্যাংক আইনের নিয়ম পরিপন্থী। এক অদৃশ্য খুটির জোরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নাকের ডগায় বসে এতো এতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা ও স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে জাকির আহমেদ খান দিনের পর দিন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন, তা যেন দেখার কেউ নেই।

সূত্র আরও জানায়, জাকির আহমেদ ২০১০ সালে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে টানা দশ বার সাউথইস্ট ব্যাংকের উপদেষ্টা পদে নবায়ন পান। কেবল সাউথ ইস্ট ব্যাংকেই ১১ বছর ধরে উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন বিএনপি জামাত ঘেঁষা সাবেক এই আমলা। আর এই পদকে ব্যবহার করে দিনের পর দিন বেরকারি সেক্টরে করের অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানগুলোয় পরিচালক পদে নিয়োগ পান। যা স্পষ্টতই ব্যাংকের স্বার্থ এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ম বিরুদ্ধ। এরমধ্যে রয়েছে- সাউথইস্ট ব্যাংক গ্রিন ফাউন্ডেশন এর সদস্য, সাউথইস্ট ব্যাংক গ্রীন স্কুলের পরিচালক, সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিসেস লিমিটেড এর সর্বেসর্বা, বে লিজিং এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এ স্বতন্ত্র পরিচালক, বিএলআই ক্যাপিটাল লিমিটেড এর পরিচালক, ন্যাশনাল লাইফ ইন্সু্যুরেন্স এর স্বতন্ত্র পরিচালক, ক্রাউন সিমেন্ট এর স্বতন্ত্র পরিচালক, ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের স্বতন্ত্র পরিচালক, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর সদস্যসহ আরও কিছু পদ। নিজের প্রভাব খাটিয়ে রীতিমতো পদ বিলাস চালিয়ে যাচ্ছেন সাবেক এই আমলা। সবগুলো পদ ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই আর্থিক কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে দখল-বাণিজ্য জড়িত বলেও অভিযোগ রয়েছে।

অপর একটি সূত্র জানায়, গরিব ও মেধাবী ছাত্রছাত্রী বৃত্তি প্রদান কার্যক্রম চালানোর জন্য সাউথইস্ট ব্যাংক গ্রিন ফাউন্ডেশন শুরু করে। যদিও এর মূল কাজ বৃত্তি দেয়া কিন্তু সেই কাজের নিয়ন্ত্রণ জাকির আহমেদ খানের হাতে। তিনি ফাউন্ডেশন এর পরিচালক পদে রয়েছেন। যেহেতু তিনি ব্যাংকের উপদেষ্টা সেহেতু তার এই জনহিতকর ফাউন্ডেশন এ তার পরিচালক পদে থাকার কথা নয়। এই পদে থেকে তিনি মেধা ও অর্থনৈতিক সামর্থ্যরে ভিত্তিতে বৃত্তি কার্যক্রম পরিচালনা না করে নিজের আত্মীয় স্বজন ও পরিচিত ছেলে-মেয়েদের বৃত্তি প্রদান করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার নিজ ইচ্ছা-অনিচ্ছাতেই পরিচালিত হচ্ছে ফাউন্ডেশন। কেউ কোনো প্রতিবাদ করলে তাকে হারাতে হয় চাকুরি।

জানা যায়, সাউথইস্ট ব্যাংক গ্রীন স্কুল প্রতিষ্ঠা হয় ২০১৩ সালে। তখন থেকেই জাকির আহমেদ খান স্কুলের কার্যক্রমের সাথে জড়িত। স্কুলের সকল নিত্য-নৈমিত্তিক বিষয়ে তিনি নাক গলিয়ে স্কুলটিকে নাম সর্বস্ব করে রেখেছেন। এই অল্প সময়ের মধ্যেই স্কুলের বিভিন্ন তহবিল থেকে কয়েক কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। তহবিল তছরুপের দায়ে প্রিন্সিপালের চাকুরি গেলেও বহাল তবিয়তে আছেন জাকির আহমেদ। অথচ তিনিই অর্থ কেলঙ্কারির মূল হোতা। সম্প্রতি স্কুলে নারী বিষয়ক কেলেঙ্কারির অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো তদন্ত পর্যন্তও হয়নি।

এদিকে সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিসেস লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানটিতে অলিখিত সর্বেসর্বা জাকির আহমেদ খান। এই প্রতিষ্ঠানের খাতা-কলমে কোথাও জাকির আহমেদ নেই, কিন্তু সব কিছু তিনিই নিয়ন্ত্রণ করেন। ওই প্রতিষ্ঠানের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন তিনি। সব ধরণের নিয়োগ, প্রমোশন, ইনক্রিমেন্ট, বোনাস সব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত একক ভাবে নেন তিনি। সিন্ডিকেট করে হাতিয়ে নিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের লাখ লাখ টাকা। সাউথ ইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিসেস এর আজকে যে ভঙ্গুর অবস্থা তার পিছনেও জাকির আহমেদ রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

একটি সূত্র জানায়, বে লিজিং এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড সাউথইস্ট ব্যাংকের একটি পরিচালক প্রতিষ্ঠান। অনেকের প্রশ্ন জাকির আহমেদ সাউথইস্ট ব্যাংকের উপদেষ্টা হয়েও কিভাবে বে লিজিংয়ের স্বতন্ত্র পরিচালক হন? স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে এক ব্যক্তি কিভাবে থাকেন? ব্যাংক কোম্পানি আইনের ২৩ এর ‘ক’ ধারা অনুযায়ী “এক ব্যক্তি একই সময়ে একাধিক ব্যাংক কোম্পানি বা একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা একাধিক বীমা কোম্পানির পরিচালক থাকিবেন না।” কিন্তু তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের আইন অমান্য করে এসব প্রতিষ্ঠানে যুক্ত রয়েছেন। যেহেতু জাকির আহমেদ সাউথ ইস্ট ব্যাংকের উপদেষ্টা আবার বে লিজিংয়েরও স্বতন্ত্র পরিচালক তাই এই দুটি প্রতিষ্ঠানের গোপনীয় বিষয়গুলো জাকির আহমেদের কারণে গোপনীয় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি তার প্রভাব খাটিয়ে সাউথইস্ট ব্যাংকের কয়েকশো কোটি টাকা অনেক কম সুদে বে লিজিংএ ডিপোজিট রেখেছেন যা ব্যাংকের জন্য আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সাউথইস্ট ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক গ্রীন স্কুল, বে লিজিং এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ছাড়াও ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, স্বতন্ত্র পরিচালকসহ অনেক পদ কুক্ষিগত করে রেখেছেন জাকির আহমেদ খান। যা দেশের ব্যাংক আইনের পরিপন্থি।

অনেকে অভিযোগ করছেন, তার সমস্ত অপকর্মের মূল আখড়া সাউথইস্ট ব্যাংক। মূলত এই পরিচয়কে কাজে লাগিয়েই বছরের পর বছর এমন দুর্নীতি ও অবৈধ ক্ষমতার চর্চা করে যাচ্ছেন জাকির আহমেদ খান। একই সময়ের মধ্যে ব্যাংকের ৪ জন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পরিবর্তন হলেও উপদেষ্টা হিসেবে তিনি বহাল তবিয়তেই আছেন। শুধু তাই নয়, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রেও তিনি খবরদারি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর বাংলাদেশ ব্যাংক উপদেষ্টার এ সকল কাজের জন্য অডিট আপত্তি দিয়েছিলো। কিন্তু এরপরও বছরে প্রায় ১.৫ কোটি টাকা বেতন, বোনাস, ব্যক্তিগত কর্মচারী, সার্বক্ষণিক গাড়ি, মোবাইল খরচ আর এর উপর তার বিভিন্ন ভ্রমণ খরচ নিয়েই যাচ্ছেন তিনি। কিন্তু এতো বছরে উপদেষ্টা হিসেবে ব্যাংক তার কাছ থেকে কিছুই পায়নি বলে অভিযোগ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট অনেক কর্মকর্তার। তারা বলছেন, তিনি না থাকলে ব্যাংক বছরে কমপক্ষে আরও দুই কোটি টাকা বেশি মুনাফা অর্জন করতো। আর এতে করে ব্যাংকের সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা উপকৃত হতো। এতো অনিয়ম নিয়ে এতোগুলো বছর ধরে রহস্যজনকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা অফিশিয়ালি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। আর্থিক অনিয়ম ও পদ কুক্ষিগত করে রাখার বিষয়ে জাকির আহমেদ খানের সঙ্গে যোগাযোগর চেষ্টা করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় জানার পর আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

এযাবৎকালের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ভয়াবহ স্ক্যামগুলোর চেয়ে এটিও কোনো অংশেই কম নয়। এক ব্যাক্তি উদ্যোক্তা না হয়েও কিভাবে এতোগুলো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিচালকের পদ কুক্ষিগত করে রেখেছেন তা তদন্তসাপেক্ষ একটি বিষয়। সম্প্রতি এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাচাঁতে পদবিলাসী জাকির আহমেদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন একজন মানবাধিকারকর্মী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন পরিচালক জানান, এই অভিযোগটি এর মধ্যেই আমলে নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। শিগগিরেই হয়তো তদন্ত শুরু হবে। “ব্যাংকিং খাতকে এ ধরনের দুর্নীতিপরায়ণ পদবিলাসী আমলার হাত থেকে বাঁচাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের যথোপযুক্ত উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই” বলে মন্তব্য করেন তিনি।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Highlights

How to Choose the Most Effective Essay Writing Service

Avatar photo

Published

on

If you are looking to know what the best online essay writing services are I’ve compiled some guidelines for you. There are many websites on the web that claim to offer quality essay writing assistance, however they’re often frauds. Be aware of the scams to avoid being swindled. Read and study as much information as you can on each website. Check (more…)

Continue Reading

Highlights

অধিকার আদায়ে শেরপুর প্রেসক্লাবে তালা দিয়ে সাংবাদিকদের অবস্থান কর্মসূচি পালন

Avatar photo

Published

on

শেরপুর প্রতিনিধি:

শেরপুর প্রেসক্লাবের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিলসহ ৬ দফা দাবী আদায়ের লক্ষে অধিকার বঞ্চিত জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা শেরপুর প্রেসক্লাবে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান ও প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করেছে। পরে পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধে উভয়পক্ষ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে জেলায় কর্মরত শতাধিক সাংবাদিক প্রথম দিনের অবস্থান কর্মসূচী তুলে নেয়।

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, পেশাজীবী সংগঠন পেশার মান উন্নয়ন, নিপীড়িত কর্মীদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের বিপদে সহযোগিতা এবং পেশায় কর্মরতদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করার কথা। কিন্তু প্রেসক্লাবের মত একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান কিছু ব্যক্তির জন্য কুলুষিত হচ্ছে। যা এই শেরপুরের জন্যেও লজ্জাজনক। দেশের প্রথম সারির মিডিয়াতে কাজ করা কিছু সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হিংসা বসবত হয়ে কালো তালিকার ঘটনাও ঘটিয়েছে। এছাড়াও বিএনপি জামাত নেতৃবৃন্দের হাত থেকে প্রেসক্লাব মুক্ত করার দাবিও জানান তারা।

এসময় দৈনিক ভোরের চেতনা পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও মানবাধিকার সংস্থা আমাদের আইনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক নূরে আলম চঞ্চলের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে যমুনা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার আদিল মাহমুদ উজ্জল, দেশ টিভির জেলা প্রতিনিধি আব্দুর রফিক মজিদ, আনন্দ টিভির জেলা প্রতিনিধি মারুফুর রহমান মারুফ, দেশ রুপান্তর পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শফিউল আলম সম্রাট, দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ইসমাইল হোসেন ও দৈনিক কালবেলা পত্রিকায় জেলা প্রতিনিধি তারিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অপস), শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল সহ উভয়পক্ষের তিনজন প্রতিনিধি নিয়ে বৈঠক হয়। এসময় শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. শরিফুর রহমান, সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জাল, মহিউদ্দিন সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মারুফুর রহমান মারুফ ও বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরে আলম চঞ্চল বৈঠকে বসেন। বৈঠকে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হিসেবে আগামীকাল পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করা হয়। এছাড়াও পরবর্তিতে এ বিষয়ে জেলার শীর্ষ স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকতা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের নিয়ে পরবর্তীতে বৈঠক করে সমাধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানা যায়।

Continue Reading

Highlights

কর্মচারী ‘নয়ন সিন্ডিকেটের’ দাপটে তটস্থ রমেক হাসপাতাল

Avatar photo

Published

on

রংপুর মেডিকেল কলেজ (রকেম) হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনদের হয়রানি নতুন কিছু নয়। বিষয়টি সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবারে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী, রোগীর স্বজন, চাকুরি প্রত্যাশীদের হয়রানি, কথায় কথায় হাসপাতালের নিরীহ কর্মচারীদের নানাভাবে হয়রানি, হাসপাতাল প্রশাসনকে দাপটের সাথে দাবিয়ে রাখাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে ‘নয়ন সিন্ডিকেট’র বিরুদ্ধে।

জানা যায়, নয়ন সিন্ডিকেটের প্রধান নয়ন হাসপাতাল থেকে বরখাস্ত হলেও ‘কর্মচারি ইউনিয়নের সাইনবোর্ড’ এর সাধারণ সম্পাদক এর পদ ব্যবহার করে সব পর্যায়ের কর্মকাণ্ডকে জিম্মি করে রেখেছে। তার বিস্তর অপরাধের কাহিনী এখন ভুক্তভোগীসহ চিকিৎসাসেবীদেরও মুখে মুখে। এদের দৌরাত্মের নিকট অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন স্বয়ং হাসপাতালের বিদায়ী পরিচালক ডা. শরিফুল হাসানও। এক সাক্ষাতকারে এই নয়ন সিন্ডিকেটের কাছে আত্মসমর্পণ করে বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছেন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

সূত্র জানায়, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪০টি ওয়ার্ড রয়েছে। যার প্রতিটি ওয়ার্ডে বহিরাগত লোকবল নিয়োগ দিয়ে তাদের কাছে ওষুধের দালালিসহ সরকারি বরাদ্দকৃত ওষুধ ও সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি চুরি করার মোটা কমিশন হাতিয়ে নেয় নয়ন সিন্ডিকেট। এমন কি নয়নের সিন্ডিকেটের সদস্যরা হাসপাতালের নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে বহিরাগত মাদকসেবীদের দিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডের ডিউটি করান। যেসব মাদকসেবীদের দিয়ে অবৈধভাবে ডিউটি করান দিন শেষে তাদের হাজিরা না দিয়ে উল্টো তাদের কাছ থেকে নেয়া হয় সারাদিনের কু-কর্মের ভাগ বাটোয়ারার হিস্যা।

সেবাগ্রহীতা, স্বজন ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নয়ন ও তার গ্রুপের লোকেরা একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে সেবা নিতে আসা রোগীর স্বজদের সামান্য বিষয় নিয়ে লাঞ্ছিত, রোগী ও চিকিৎসাসেবীদের সাথে দুর্ব্যবহার, ওষুধ-সরঞ্জামাদি চুরি, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ তার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। এছাড়ও হাসপাতাল প্রশাসনকে দাপটের সাথে দাবিয়ে রাখাসহ এমন কোনো অপরাধ নেই যা নয়ন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সংঘঠিত হয় না। বরখাস্ত হওয়া সত্ত্বেও হাসপাতালের কর্মচারি ইউনিয়নের সাইনবোর্ড এর খুঁটির নামে হাসপাতালের সব পর্যায়ের কর্মকাণ্ডকে জিম্মি করে রাখছে তার সিন্ডিকেট। প্রতিনিয়ত এই সিন্ডিকেটের নানামুখি অনৈতিক কর্মকাণ্ডে অসহায় ও উদ্বিগ্ন রমেক কর্তৃপক্ষও। এদের হয়রানি ও অত্যাচারের ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না বলেও জানান অনেক ভুক্তভোগী।

আরও জানা যায়, নয়ন চাঞ্চল্যকর হত্যা ও অস্ত্র মামলার আসামি। হাসপাতালেও অভ্যন্তরে হত্যা, হত্যার উদ্দেশে মারপিট, গুরুত্বর জখম, চুরি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের হোতা ও হুকুমদাতার অপরাধে আসামী নয়নের বিরুদ্ধে রংপুর মেট্রোপলিনের কোতয়ালী থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়াও নানাবিধ ন্যাক্কারজনক অপরাধ অব্যাহতভাবে সংঘটিত করে আসছে এরা। নয়ন সিন্ডিকেটের এমন অপকর্ম রোধে দক্ষ প্রশাসনিক দায়িত্বের কোনো পরিচালক রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে বেশিদিন টিকতে পারেন না বলে একটি কথা এখন কর্মচারীদের মুখে মুখে প্রচলিত হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, সম্প্রতি বদলি হওয়া রমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরিফুল হাসান সরকারের নির্দেশে হাসপাতালে আউর্সোর্সিংয়ের মাধ্যমে কিছুসংখ্যক জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন। বিদায়ী ওই পরিচালককে সেই নিয়োগ নয়ন সিন্ডিকেট মনোনীত ঠিকাদারকে দিতে চাপ প্রয়োগ করেন যা বিধিবহির্ভূত হওয়ায় হাসপাতাল প্রশাসন তা মানেন নি। পরে তাদের মনগড়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে জনবল নিয়োগ বানিজ্যের সুযোগ করে না দেয়ায় সেই সূত্রপাত ধরে তৎকালীন পরিচালকের বিষয়ে নানা মিথ্যা অপবাদ তুলে অযৌক্তিক আন্দোলনের ধোয়া তুললে পরিচালক বদলি হন।

কথা বলতে চাইলে বিদায়ী পরিচালক ডা. শরিফুল হাসান টেলিফোনে জানান, ‘যুদ্ধে আমি পরাজিত সৈনিক। অনেক চেষ্টা করেও রমেক হাসপাতালের দীর্ঘদিন থেকে গড়ে ওঠা দুর্নীতিবাজ অপশক্তি নয়ন সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছি। যতদিন এই সিন্ডিকেটের হাত থেকে হাপাতালকে মুক্ত করা না হবে, ততোদিন উত্তরাঞ্চলের মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্ছিত হতেই থাকবে।’

এদিকে প্রশ্ন উঠেছে বরাদ্দ ছাড়াই সাময়িক বরখাস্ত হওয়া নয়ন একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হয়ে কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্দ রমেক ক্যাম্পাসের ১০নং কোয়ার্টারে থাকেন কিভাবে? এছাড়াও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) সহ গৃহস্থালি নানা রকম ইলেক্ট্রিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে সরকারি বিদ্যুৎ অপচয় করছেন নির্বিঘ্নে। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালে কর্মচারীদের মধ্যেও কানাঘোষা চলছে কিছুদিন ধরে।
এ বিষয়ে রমেক হাপাতালের কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নয়ন এর সাক্ষাতকার নিতে চাইলেও তাদের দেখা মেলেনি। পরে টেলিফোনে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকের পরিচয় পেয়ে অসুস্থতার কথা বলে ফোন কেটে দেন নয়ন। কর্মচারি ইউনিয়নের সভাপতি শাহিনের সাথে রোববার (২৮ মে’ ২৩) তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেনি।

হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইউনুস আলী জানান, দীর্ঘদিন থেকে জিইয়ে রাখা অযুত সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ করছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, সময় ও সবার সহযোগিতা পেলে হাসপাতালের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করবেন বলে তিনি আশাবাদী। তবে সংঘবদ্ধ নয়ন সিন্ডিকেটের ব্যাপারে বলেন, আমি সদ্য যোগ দিয়েছি। এখনও ভালো করে বুঝে উঠতে পারিনি। যথাযথ অভিযোগ পেলে দায়িদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Continue Reading