তীব্র যানজট ও জলজটে দুর্ভোগে নগরবাসী
তীব্র যানজট ও জলজটে দুর্ভোগে নগরবাসীমঙ্গলবার রাজধানীতে প্রবল বৃষ্টিতে গতি হারিয়েছে জীবন-যাত্রা। দেখা দিয়েছে জলজট ও যানজট। সড়কগুলোতে বেহাল অবস্থায় পড়েছেন যাত্রীরা। গন্তব্যে পৌঁছাতে নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। সকাল ৯টা থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। তারপর ১০টা থেকে প্রবল বৃষ্টি। ভোগান্তিতে পড়া কয়েকজন জানান, এরকম ভারী বর্ষণ দেখেননি এর আগে। এর মধ্যে একজন বলেন, ধানমণ্ডি থেকে যাবেন গুলশান-পথে আড়াই ঘণ্টা রাস্তায় গাড়িতে বসে কাটাতে হয়েছে।
সারা দেশে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় আরও কয়েক দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাজধানীতেও বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।তীব্র যানজট ও জলজটে দুর্ভোগে নগরবাসী
এদিকে গত দুইদিন থেমে থেমে বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ও নিচু এলাকায় ফের জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। আর নগরীর বেশ কয়েকটি প্রধান সড়কে জলাবদ্ধতার কারণে সৃষ্ট যানজটে নাগরিক জীবনে নেমে এসেছে চরম ভোগান্তি। পাশাপাশি রাস্তা খুঁড়ে ওয়াসার পানির লাইন মেরামতের কাজ চলায়, পথ চলতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে নাগরিকদের।
সরেজমিন দেখা গেছে, সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত রাজধানীর বেশ কিছু সড়কে ছিল তীব্র যানবাহনের জটলা। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষ এবং অফিসগামী ও ফেরত যাত্রীদের। প্রতিটি সড়কে যানবাহন চলতে দেখা গেছে থেমে থেমে। রাস্তায় শত শত লোক ঠায় দাঁড়িয়ে ছিল বাসের অপেক্ষায়। ঘরমুখো যাত্রীদের চাপে বাসগুলোতে ছিল ঠাসাঠাসি ভিড়। যাদের নিজস্ব বাহন রয়েছে তাদেরও যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় গাড়িতে বসে নাকাল হতে হয়েছে। এদিকে গণপরিবহন না পেয়ে বিকেলে অনেকে হেঁটে রওনা দেন নিজ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।
তীব্র যানজট ও জলজটে দুর্ভোগে নগরবাসীrainঅন্যদিকে দিনভর তীব্র যানজটে অনেকেই সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছতে পারেনি। আর নগরীর এই তীব্র যানজট সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেয়েছেন কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরাও। একদিকের সিগন্যাল ছাড়লে অন্যদিকে মুহূর্তেই যানজট লেগে যায়। গতকাল কাকরাইল, শান্তিনগর, মৌচাক, রামপুরা, বাড্ডা, কুড়িল, গুলিস্তান, পল্টন, যাত্রাবাড়ী, শাহবাগ, ফার্মগেইট, পান্থপথ, মগবাজার, মহাখালী, গুলশান, ধানমণ্ডি এলাকার রাস্তায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তীব্র যানজট দেখা গেছে। রাস্তার যেদিকে তাকানো যায় সেদিকে শুধু গাড়ি আর গাড়ি। শত শত প্রাইভেট কার আর বাস ইঞ্জিন বন্ধ করে রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেছে। মুগদা-বাসাবো এলাকার বাসিন্দা মনোজ কুমার জানান, মুগদার অলিগলিতে এত পানি জমেছে যে, ঘর থেকে বেরোনোই মুশকিল। আবার এই পানির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা। এ এলাকার মানুষের দুর্ভোগ ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
শান্তিনগর মোড়ে সুপ্রভাত পরিবহনের চালক আশ্রাফ আলী বলেন, রামপুরা থেকে এ পর্যন্ত আসতে সোয়া ঘণ্টা সময় লেগেছে। এখানেও দাঁড়িয়ে আছি ১৫-২০ মিনিট, এর মধ্যে গাড়ি এক ইঞ্চিও নড়ছে না।
তীব্র যানজট ও জলজটে দুর্ভোগে নগরবাসীমালিবাগ থেকে মতিঝিল অফিসে যেতে ফারুক হোসেন প্রধান রাস্তায় এসে দেখেন হাঁটুপানি। কিন্তু মোড়ে এসে না পায় রিকশা, না পায় বাস। রাস্তা কিংবা ফুটপাত ধরে হাঁটবেন তারও কোনো উপায় নেই। কারণ মালিবাগ থেকে পুরো রাজারবাগজুড়ে অথৈই পানি। আর এর সঙ্গে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে ফ্লাইওভারের কাজ করা রাস্তার খানাখন্দ। আধা ঘণ্টা পর একটা বাস পেলেও তাতে অনেক কষ্টে উঠতে হয়েছে। মালিবাগ থেকে মতিঝিলে বাসটি পৌঁছাতে সময় লেগেছে আধা ঘণ্টারও বেশি সময়। এর একটাই কারণ যানজট ও জলজট।
বাংলাদেশেরপত্র/ এডি/ আর