বলিউড
যে ছবি দেখে অঝোরে কাঁদলেন হৃতিক-আমির

৫ই সেপ্টেম্বর ১৯৮৬ সালে ৩৬১ জন যাত্রী ও ১৯জন ক্রু নিয়ে প্যান অ্যাম বিমানটি হাইজ্যাক করে চারজন সশস্ত্র যাত্রী। (নীরজা ছবির একটি দৃশ্য)
বিনোদন ডেস্ক: সালটা ১৯৮৬, তারিখ ৫ই সেপ্টেম্বর। পাকিস্তানের করাচি বিমানবন্দরে মুম্বাই থেকে সবে এসে নেমেছে প্যান অ্যামের ফ্লাইট ৭৩, একটু বাদেই তা রওনা দেবে ফ্রাঙ্কফুর্ট হয়ে নিউ ইয়র্কের পথে। ঠিক সেই সময়ই ৩৬১জন যাত্রী আর ১৯জন ক্রু সদস্যকে নিয়ে সেই বিমানটিকে হাইজ্যাক করে চারজন সশস্ত্র জঙ্গী।
লিবিয়ার মদতপুষ্ট আবু নিদাল অর্গানাইজেশনের সদস্য সেই জঙ্গীরা চেয়েছিল সেটিকে ইসরায়েলে উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে কোনও উঁচু ভবনের সঙ্গে ধাক্কা মেরে বিরাট এক আঘাত হানতে।
ওই বিমানের ফ্লাইট পার্সার, অর্থাৎ প্রধান ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট ছিলেন নীরজা ভানোত, যার ওপর ছিল বিমানের সব আরোহীর দেখাশোনা আর তাদের যাত্রাকে আরামদায়ক করে তোলার প্রধান দায়িত্ব।
ভারতের চন্ডীগড়ে জন্মানো নীরজা তখন তার তেইশতম জন্মদিন থেকে মাত্র কয়েক ঘন্টা দূরে – মডেলিং আর প্যান অ্যাম এয়ারলাইন্সের চাকরি সামলে কেরিয়ারে তরতর করে উন্নতি করছেন।
ছিনতাই হওয়া বিমানটিতে জঙ্গীদের প্রথম নিশানা ছিলেন মার্কিন নাগরিকরা। মোট ৪১জন মার্কিন নাগরিক ছিলেন সেই বিমানে।
কিন্তু নীরজা ও তার সঙ্গী অ্যাটেনডেন্টরা মিলে প্রথমেই কৌশলে সেই মার্কিন নাগরিকদের পাসপোর্টগুলো লুকিয়ে ফেলেন – যাতে জঙ্গীরা তাদের আলাদা করতে না পারে।
করাচি এয়ারপোর্টে ১৭ ঘন্টা ধরে হাইজ্যাক করে রাখার পর বিমানের ভেতর জঙ্গীরা গুলি চালাতে ও বিস্ফোরক প্রয়োগ করতে শুরু করে – তখনই মরিয়া নীরজা ভানোত বিমানের ইমার্জেন্সি ডোর খুলে একে একে যাত্রীদের বাইরে বের করতে থাকেন।
ইমার্জেন্সি ডোর খোলার পর নীরজা নিজেই প্রথমে বাইরে বেরোতে পারতেন, কিন্তু তা না-করে তিনি আগে সব যাত্রীকে বেরোতে সাহায্য করেন।
কিন্তু তিনটি বাচ্চাকে অসম সাহসিকতায় জঙ্গীদের বুলেটবৃষ্টি থেকে রক্ষা করতে গিয়ে নীরজা নিজের প্রাণ আর বাঁচাতে পারেননি, বিমানের ভেতরই গুলিতে লুটিয়ে পড়ে তার নিথর দেহ।
শেষ পর্যন্ত ৪১জন মার্কিন যাত্রীর মধ্যে মারা যান মাত্র দুজন। ভারত, পাকিস্তান, আমেরিকা ছাড়াও ইউরোপ ও এশিয়ার নানা দেশের যাত্রীরা ছিলেন ওই বিমানে – নিজের প্রাণ দিয়ে তাদের এক রকম জীবন উপহার দিয়ে যান নীরজা ভানোত।
আজ থেকে প্রায় তিরিশ বছর আগে নীরজার সেই অসম সাহসিকতা আর মানবিকতা আজ প্রায় রূপকথার মতো শোনাতে পারে – তবে ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই কিন্তু তাকে অসীম শ্রদ্ধায় কুর্নিশ জানিয়েছিল। নীরজা ভানোতকে ভারত সরকার মরণোত্তরভাবে সর্বোচ্চ বেসামরিক সাহসিকতা সম্মান অশোক চক্রে ভূষিত করেছিল। ২০০৪ সালে ভারতের পোস্টাল সার্ভিস তার সম্মানে একটি ডাকটিকিটও প্রকাশ করে।
যে দেশের মাটিতে নীরজা ভানোত অসীম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন, সেই পাকিস্তান সরকারও তাকে ‘তামঘা-ই-ইনসানিয়াত’ খেতাবে ভূষিত করেছিল, যা সে দেশে মানবিকতার শ্রেষ্ঠ স্বীকৃতি।
একজন মানুষ ভারত ও পাকিস্তান, উভয় দেশেই তার সাহস ও মানবিকতার জন্য সেরা সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন – নীরজা ভানোত ছাড়া এমন দৃষ্টান্ত বোধহয় আর একটিও নেই। নীরজা ভানোতের জীবনের এই অসাধারণ কাহিনি নিয়েই শুক্রবার ভারতে মুক্তি পাচ্ছে একটি সিনেমা – নীরজা নামে যে ছবিটির পরিচালক হলেন রাম মাধবানি। অবিশ্বাস্য একটা পারফরম্যান্স! কোন্ ছবি দেখে শেষবার এত কেঁদেছি, মনে করতে পারলাম না।
এই জীবনী-ভিত্তিক ছবি বা বায়োপিকে নীরজার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বলিউড অভিনেত্রী সোনম কাপুর। ভারতের চলচ্চিত্র জগতের দিকপালরা প্রায় সবাই মুক্তির আগে এই ছবিটির প্রিভিউ প্রিমিয়ার দেখে উচ্ছ্বসিত – তাদের প্রত্যেকে টুইটারে বা সোশ্যাল মিডিয়াতে নীরজা ছবির প্রশংসায় ফেটে পড়েছেন। বলিউড তারকা হৃতিক রোশন টুইট করেছেন ‘অবিশ্বাস্য একটা পারফরম্যান্স! কোন্ ছবি দেখে শেষবার এত কেঁদেছি, মনে করতে পারলাম না!’
আর এক তারকা আমির খানও নীরজা দেখে একই রকম উচ্ছ্বসিত ও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন। তিনিও বলেছেন সকলের এই ছবিটা দেখা উচিত। মুম্বাইয়ে সিনেমা-জগতের ছোটবড় প্রায় সব অভিনেতাই নীরজা নিয়ে একই রকম ভাললাগা ব্যক্ত করেছেন। নীরজার জীবনের এই গল্প বলার জন্য তার পরিবার এই ছবির নির্মাতাদের কাছে একটি পয়সাও রয়্যালটি দাবি করেননি।
-
আন্তর্জাতিক8 years ago
গ্রিস প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘোষণা
-
আন্তর্জাতিক8 years ago
যুক্তরাষ্ট্রে দুটি বিমানের সংঘর্ষে ৪ জনের মৃত্যু
-
স্বাস্থ্য8 years ago
গলা ব্যথার কারণ ও চিকিৎসা
-
দেশজুড়ে9 years ago
আজ চন্দ্র গ্রহন সন্ধা ৬টা ১২ মিনিট থেকে রাত ৮ টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত
-
বিবিধ9 years ago
আর অটো রিক্সা নয় এবার অবিশ্বাস্য কম দামের গাড়ি!
-
জাতীয়8 years ago
আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ
-
জাতীয়9 years ago
স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমি ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা
-
ফিচার8 years ago
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার নামকরণের ইতিহাস