সৌদি আরবের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ খামেনির
ইয়েমেনে শিয়া হুতি বিদ্রোহী-যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের বিমান হামলায় নিহতের ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। বিবিসি বলছে, এই লড়াইয়ে সৌদি আরব জয়ী হবে না বলে হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন খামেনি। সৌদি আরবের বিপুলমাত্রার আগ্রাসী হামলায় ইয়েমেনের সাধারণ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এটি ওই অঞ্চলে নেতিবাচক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করবে। এক টেলিভিশন ভাষণে খামেনি এসব কথা বলেন। ভাষণে খামেনি অভিযোগ উত্থাপন করেন, সৌদি আরবের কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মতো। দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরব অভিযোগ জানিয়ে আসছে, ইয়েমেনের শিয়া হুতি বিদ্রোহী-যোদ্ধাদের অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে মদদ দিচ্ছে ইরান। ইয়েমেনের সানা ও এডেনে হুতি যোদ্ধারা কয়েক সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিকভাবে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে এগিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় প্রেসিডেন্ট আব্দুরাব্বু মনসুর হাদি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। সুন্নি প্রেসিডেন্ট হাদিকে পুনরায় ক্ষমতায় নিয়ে আসার জন্য সৌদি আরব তার আঞ্চলিক আরবমিত্রদের নিয়ে ইয়েমেনে হুদি বিদ্রোহীদের অগ্রযাত্রা রুখতে বিমান হামলা শুরু করে। ইয়েমেনের এই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘ বৈরী দুই রাষ্ট্র সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যকার সম্পর্কের আরো অবনতি হতে পারে। এই পরিস্থিতিতেই ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা সৌদি আরবের সামরিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে এসব কথা বললেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও) জানিয়েছে, ১৯ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত ইয়েমেনে ৬৪৩ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছে ২২২৬ জন। পাশাপাশি ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। এরআগে বৃহস্পতিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এ বিমান হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে সঙ্কট সমাধানে আঞ্চলিক দেশগুলোকে একযোগে কাজ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন। ইয়েমেনে বিমান হামলাকে দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ আখ্যা দিয়ে এ পদক্ষেপ ভুল বলেও সৌদি আরব ও এর মিত্রজোটকে সতর্ক করেছেন রুহানি। হামলা না চালিয়ে বরং সঙ্কট সমাধানে ইয়েমেনিদেরকে আলোচনার টেবিলে বসানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের হুমকির মুখে থাকা যে কোনো দেশকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দেবে। তাছাড়া, ইরান ওই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুললে যুক্তরাষ্ট্র চুপ করে বসে থাকবে না।