দেশজুড়ে
অপহৃত ৪ বছরের শিশু উদ্ধার অপহরণকারী মামা আটক
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
২০ এপ্রিল রাত আনুমানিক সাড়ে আটটার সময় শাহিন আক্তার (২৬) বাকলিয়া থানায় অভিযোগ করেন যে, তার চার বছরের শিশু মো. রাইদ বিন কামাল, পিতা- কামাল হোসেনকে অজ্ঞাতনামা অপহরণকারীরা অপহরণ করে ছয় লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে। উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে বাকলিয়া থানায় শিশু অপহরণের অভিযোগে একটি মামলা রুজু করা হয়।
সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপারেশন ও ক্রাইম) বনজ কুমার মজুমদার, পিপিএম এর নির্দেশে সিএমপি’র ডিবি এবং বাকলিয়া থানা একাধিক টিম গঠনপূর্বক গোয়েন্দা বিভাগের অতি. উপ-পুলিশ কমিশনার এসএম তানভীর আরাফাত, পিপিএম এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ ও বাকলিয়া থানা পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধারে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। ঘটনার এক পর্যায়ে শিশুটিকে তার আপন মামা খোরশেদ আলম (২০) অপহরণ করেছে বলে জানা যায়।
মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের এসআই আফতাব হোসেন, এসআই রাজেশ বড়–য়া, এএসআই আজমীর শরিফ এবং বাকলিয়া থানার এসআই মো. রাসেল, এসআই আব্দুর রউফ সঙ্গীয় ফোর্সসহ পৃথক দু’টি টিম গঠন করে চট্টগ্রাম মহানগরী এবং চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রাম জেলাধীন ফটিকছড়ি থানার আদর্শগ্রাম এলাকা থেকে অপহৃত শিশুটিকে ২১ এপ্রিল রাত ১১ টার দিকে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামী খোরশেদ আলমকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, শিশুটির বাবা সৌদি প্রবাসী হওয়ায় বোন ভাগ্নের নিরাপত্তার জন্য মামা খোরশেদ আলম তার বোনের বাসায় থেকে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক্যালে লেখাপড়া করতো। তার টাকার প্রয়োজন হওয়ায় ৫/৬ দিন পূর্বে তিন বন্ধুর সাথে তার ভাগিনাকে অপহরণ করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক খোরশেদ আলম তার ভাগিনাকে গত ২০এপ্রিল বেলা একটার দিকে চকলেট কিনে দেওয়ার কথা বলে বোনের বাসা থেকে কালামিয়া বাজারে নিয়ে আসে। পূর্ব পরিকল্পনা মতে তার বন্ধু প্রাইভেটকার নিয়ে কালামিয়া বাজারে অবস্থান করছিল। খোরশেদ আলম ও তার অপর বন্ধু ভিকটিমকে নিয়ে উক্ত প্রাইভেটকারে উঠে জুসের সাথে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে ভিকটিমকে খাওয়ায় এবং প্রাইভেটকারে করে অক্সিজেনে নিয়ে যায়। সেখানে পূর্ব হতে অপেক্ষমাণ খোরশেদ আলমের আরেক বন্ধু অজ্ঞাতনামা এক মহিলাকেসহ অবস্থান করছিল। খোরশেদ ও তার বন্ধু ভিকটিমকে অক্সিজেনে অবস্থানরত বন্ধুর কাছে বুঝিয়ে দেয়। পরে ঐ বন্ধু ও অজ্ঞাত মহিলাসহ ভিকটিমকে নিয়ে একটি সিএনজিযোগে ফটিকছড়ি চলে যায়। খোরশেদ ও তার বন্ধু জোবায়ের চট্টগ্রাম নিউ মার্কেটের দিকে যাওয়ার পথে ভিকটিমের মা শাহিনা আক্তার মোবাইলে তার ভাইকে ফোন করে জানায় যে, রাইদ এখনো বাসায় আসে নি। খোরশেদ দ্রুত বাসায় আসে। সবকিছু গোপন করে সেও সকলের সাথে ভিকটিমকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে এবং এলাকায় মাইকিং করে। প্রাথমিক তদন্তকালে খোরশেদ পুলিশের সঙ্গে থেকে কৌশলে তার সহযোগী অপহরণকারীদের পুলিশের অভিযানের তথ্যাদি পাচার করছিল বলে স্বীকার করে।
এই ঘটনায় জড়িত অপরাপর আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।