দেশজুড়ে
আটোয়ারীতে ৮ ছাত্রীকে নির্মমভাবে পেটানোর দায়ে মাদ্রাসা সুপার অবরুদ্ধ
আটোয়ারী (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি : পঞ্চগড়ের আটোয়ারীর এক মাদ্রাসার সুপার কর্তৃক সামান্য কারনে ওই মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণীর ৮ ছাত্রীকে নির্মমভাবে পেটানোর দায়ে সুপারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল অভিবভাবক সহ এলাকাবাসী। প্রায় ৩ ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর পুলিশ সুপারকে উদ্ধার করে আটোয়ারী থানায় নিয়ে আসে। বুধবার ছাত্রী পেটানো ওই সুপারকে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠায় পুলিশ। নির্মম এ ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার মাদ্রাসা ছুটির এক ঘন্টা পূবে উপজেলার তোড়িয়া নতুন হাট দাখিল মাদ্রাসায়।
শারীরিক নির্যাতনের শিকার ছাত্রীদের মধ্যে শ্রাবনী আক্তার (১৩) নামের এক ছাত্রী শ্রেণীকক্ষেই গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে দ্রুত আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে নিয়ে আসা হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. মওলা বকস্ চৌধুরী অসুস্থ্য শ্রাবনীকে দেখে স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ভর্তি করান। শ্রাবনী তোড়িয়া ডোহাপাড়া গ্রামের জনৈক মমিরুল ইসলামের কন্যা। সুপার কর্তৃক শারীরিক নির্যাতনের শিকার অন্যান্য ছাত্রীরা হল-লাবনী আক্তার, রুখসানা বেগম, সাথী আক্তার, আর্নিকা বেগম, জনি আক্তার, জেনি আক্তার ও সেলীনা বেগম।
একই শ্রেণীতে অধ্যয়নরত শ্রাবনীর বোন লাবনী আক্তার সুপারের শাস্তি দাবী করে সাংবাদিকদের জানায়, ৬ষ্ঠ ঘন্টায় যে স্যার ক্লাশ নেয় তিনি মাদ্রাসায় উপস্থিত না থাকায় তারা কয়েক বান্ধবী কমন রুমে বসে গল্প করছিল। এই অপরাধে সুপার ছাত্রীদের শ্রেণীকক্ষে ডেকে এনে নির্মমভাবে পেটানো শুরু করলে ছাত্রীরা কান্নাকাটি আরম্ভ করে দেয় এবং ঘটনা স্থলেই শ্রাবনী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। মুহুর্তে খবরটি আশে-পাশে ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রীদের অভিভাবক সহ এলাকার কয়েক শত নারী-পুরুষ মাদ্রাসায় ছুঁটে এসে সুপারের শাস্তির দাবীতে তাকে অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে।
আটোয়ারী থানায় সাংবাদিকদের মাদ্রাসা সুপার জানান, ছাত্রী পেটানোর কোন ঘটনা ঘটেনি। এটি সম্পুর্ন মিথ্যা। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি। আটোয়ারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহ আলম মাদ্রাসা সুপার কলিম উদ্দীন কে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তিনি সারারাত থানায় আটক ছিলেন। ভিকটিমের পক্ষ থেকে অভিযোগ দাখিল না করায় বুধবার সকালে আমরা সুপারকে ৫৪ ধারায় জেল-হাজতে প্রেরণ করি। খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু রাফা মোহাম্মদ আরিফ থানায় গিয়ে খোঁজ খবর নেন। এদিকে একটি প্রভাবশালী মহল মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ঘটনাটি মিমাংশা করার পায়তারা চালাচ্ছে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সুপারকে বরখাস্ত সহ দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করেন।
বাংলাদেশেরপত্র/এডি/আর