Connect with us

বিশেষ নিবন্ধ

ইসলামের কোনো নীতি মানেনি কথিত জেহাদিরা

Published

on

এস.এম. সামসুল হুদা
আমি ইসলামের যুদ্ধনীতির আলোকে বলতে চাই, যুদ্ধ ঘোষণার অধিকার কেবল রাষ্ট্রের থাকে, কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের থাকে না। আল্লাহর রসুল (সা.) রাষ্ট্রনায়ক হওয়ার পূর্বে কোনো সামরিক কর্মকান্ড করেন নি। প্রত্যেক রাষ্ট্রেরই সামরিক বাহিনী থাকে, যুদ্ধ-সন্ধি ইত্যাদি কাজ থাকে। কিন্তু ব্যক্তি বা দল পর্যায়ে শত নির্যাতন সত্ত্বেও তিনি প্রত্যাঘাত করেন নি, কেবল সত্যের পক্ষে ঐক্যের ডাক দিয়ে গেছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের যোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধ করাই বিধেয়, কিন্তু রাতের বেলায় খেতে আসা কিছু নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষ কেবল বিদেশি হওয়ার অপরাধে তাদেরকে মেরে ফেলতে হবে এটা কোন যুদ্ধনীতি। এর সঙ্গে ইসলামের কোনো ছিঁটেফোটাও সম্পর্ক নেই।
একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। যুদ্ধাপরাধী ইহুদি গোত্র বনু কুরায়যার যুদ্ধাপরাধের শাস্তি হিসেবে ওই গোত্রের সকল যুদ্ধক্ষম পুরুষদেরকে ইহুদি ধর্মের বিধান মোতাবেক মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু নারীদেরকে শাস্তি দেওয়া তো দূরের কথা, তাদের গায়ে একটা ফুলের টোকাও দেওয়া হয় নি। যে একজন মহিলাকে মাত্র মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছিল তার যুদ্ধাপরাধ ছাড়াও আরও গুরুতর অপরাধ ছিল। ওই মহিলা নিজ হাতে যাঁতা নিক্ষেপ করে রসুলের (সা.) এক সাহাবী খাল্লাদ ইবনে সুয়াইদকে (রা.) হত্যা করেছিল। একজন খুনীকে দন্ড-বিধি মোতাবেক শাস্তি দেওয়ার বিধান সকল আইনেই আছে। উপরন্তু রাষ্ট্রীয়ভাবে বিচার করে তাদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেছিলেন রসুল (সা.)।
প্রশ্ন হলো- আল্লাহর রসুল নিজে যেখানে যুদ্ধাপরাধী গোত্রের নারীদেরকে পর্যন্ত কোনো শাস্তি না দিয়ে ক্ষমা করে দেন, সেখানে কথিত জেহাদীরা কোন অপরাধে, কোন যুক্তিতে, কীসের ভিত্তিতে দশজন নিরস্ত্র নারীকে বিনা উস্কানিতে নৃশংসভাবে জবাই করে হত্যা করে? এরা কোন ইসলামে বিশ্বাসী?
প্রকৃতপক্ষে এরা ইসলাম কী তা বোঝে না, ইসলাম কেন তাও জানে না। কোর’আন, আল্লাহর রসুল, হাদীস কোনো সব কিছুরই উদ্দেশ্যমূলক ব্যাখ্যা তাদেরকে শিক্ষা দেওয়া হয়। আল্লাহ তাদেরকে প্রকৃত ইসলাম বোঝার তওফিক দান করুন। আমাদের দেশের আলেমগণ কথায় কথায় বিভিন্ন শ্রেণিকে কাফের, নাস্তিক, মুরতাদ বলে ফতোয়া দিয়ে থাকেন। তারা কিন্তু জঙ্গিবাদীদের বিষয়ে প্রায়ই নিশ্চুপ। কেউ যদি বলেনও যে জঙ্গিবাদ ইসলামে নেই, কিন্তু জঙ্গিদেরকে কাফের, মুরতাদ ইত্যাদি ফতোয়া তারা প্রদান করেন না। তওহিদী জনতার রাজনীতি আমাদের দেশে নতুন নয়, আলেম ওলামাদের বড় একটি অস্ত্র এই তওহিদী জনতাকে ক্ষিপ্ত করে তোলা। এই তওহিদি জনতাকে এক করে তাদেরকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জেহাদে ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা তো তাদেরকে বলতে শুনি না। লেখক: প্রকাশক ও সম্পাদক, দৈনিক বজ্রশক্তি ও মুখপাত্র, হেযবুত তওহীদ।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *