দেশজুড়ে
কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চলে বন্যা, পানিবন্দি হাজারও মানুষ
কুড়িগ্রাম : ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমোরসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি কমতে থাকায় বন্যার আশংকা কাটলেও পানি-বন্দি দশা থেকে মুক্তি পায়নি কুড়িগ্রামের চর, দ্বীপ চর ও নিম্নাঞ্চলের মানুষ। ফলে প্রায় দেড় সপ্তাহ ধরে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সংকটসহ নানা সমস্যায় দিন কাটাচ্ছেন কয়েক হাজার মানুষ। জেলা ত্রাণ ভাণ্ডারের মজুদ থেকে চাল বরাদ্দ দেয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল, এমনটাই বলছেন জনপ্রতিনিধিরা।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের চর ভগবতীপুর গ্রাম। এখানে বাড়িঘর থেকে বন্যার পানি সরে গেছে। কিন্তু বাড়ির চারদিক তলিয়ে আছে। ফলে পানি-বন্দি দশা থেকে মুক্তি পাননি এখানকার দু’শতাধিক পরিবার। নৌকায় চড়ে এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে যেতে হচ্ছে।
পাশাপাশি, দিন এনে দিন খাওয়া মানুষগুলো প্রায় দেড় সপ্তাহ কাজে যেতে পারেননি। ফলে খাদ্যের পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছেন। চরম এ দুর্ভোগে তাদের ভাগ্যে জোটেনি কোন ত্রাণ সহায়তা।
এ অবস্থায় বন্যা কবলিত ১৬ গ্রামের পানি-বন্দি ৩ হাজার পরিবারের মধ্যে মাত্র ৩শ’ ৮৫টি পরিবারের জন্য ১০ কেজি করে চালের বরাদ্দ এসেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।
কুড়িগ্রাম সদর যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল গফুর বলেন, ‘যে পরিমাণের চাল আসছে তা তুলনামূলক ভাবে খুবই কম। যারা ত্রাণ পাচ্ছে না তারা সব সময় আমাদের কাছে আসছে কিন্তু আমরা দিতে পারছি না।’ তিনি আরো বলেন, ‘সরকারের কাছে আমাদের আকুল আবেদন যেন এখানে ত্রাণ সামগ্রী দেয়া হোক। ’
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তরের কর্মকর্তা জানালেন, বন্যার্তদের সহায়তায় জেলা ত্রাণ ভাণ্ডারের মজুদ থেকে ৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মোত্তালেব মোল্লা বলেন, ‘২শ’ মেট্রিক টন এর চাল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার অধীনে প্রেরণ করা হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে যারা পায়নি তাদের মাঝে বিতরণ করা হবে।’
আকস্মিক এ বন্যায় জেলার ৬ উপজেলার ৩০টি ইউনিয়নের দ্বীপচর, চর ও নিম্নাঞ্চলের দেড় শতাধিক গ্রামের প্রায় ৭৬ হাজার মানুষ পানি-বন্দি হয়েছে।