জাতীয়
গাজীপুরে নিহত ৩ জঙ্গির পরিচয় মিলেছে
পরিচয় জানা তিনজনের মধ্যে রয়েছেন ঢাকার বংশাল এলাকার ইব্রাহিম। তিনি প্রায় দুই মাস নিখোঁজ ছিলেন। দ্বিতীয়জন সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সাইফুল ইসলাম। এ ছাড়া নব্য জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) ঢাকা বিভাগীয় কমান্ডার সিরাজগঞ্জের ফরিদুল ইসলাম আকাশ। তার পরিচয় আগেই জানা গেছে।
পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘সাত জঙ্গির ছবি ঢাকা মহানগর পুলিশ প্রকাশ করার পর অভিভাবকরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আগের ছবির সঙ্গে মিলিয়ে দেখেছেন। আমরা তিনজনের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে লাশ স্বজনদের দেওয়া হবে।’
গত ৮ অক্টোবর গাজীপুরের পাতারটেক এলাকায় একটি বাড়িতে পুলিশের জঙ্গিবিরোধী অভিযানে সাতজন এবং হাড়িনাল এলাকায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) অভিযানে দুই জঙ্গি নিহত হন। একই দিন গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নয় মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। গুলিতে সবাই নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। পরে তাদের লাশ ঢাকার কুর্মিটোলা হাসাপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় র্যাব ও পুলিশ বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় পৃথক দুটি মামলা করেছে। জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার রেজাউল হাসান রেজা বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে মামলাটি করেন।
এ ছাড়া হাড়িনালে দুই জঙ্গি নিহতের ঘটনায় র্যাবের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে অপর মামলাটি করেন। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় নিহত দুই জঙ্গিসহ অজ্ঞাতপরিচয় চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এ ঘটনায় ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। জঙ্গিদের গুলিতে দুই পুলিশ নিহত হন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালালে হামলাকারী ৫ জঙ্গি ও বেকারির একজন শেফ নিহত হন। এরপর ঈদের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদের নামাজে জঙ্গিরা হামলা চালায়। এ ঘটনায় দুই পুলিশসহ চারজন নিহত হন।
এরপর বেশ কয়েকটি ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযান চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যে গত ২৬ জুলাই রাজধানীর কল্যাণপুরের পাঁচ নম্বর সড়কের তাজ মঞ্জিলে পুলিশের অভিযানে নয় জঙ্গি নিহত হয়। নিহতরা জেএমবির সদস্য বলে জানায় পুলিশ।
গত ২৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় পুলিশ। সেখানে নব্য জেএমবির অন্যতম সমন্বয়ক ও গুলশান হামলার হোতা তামিম চৌধুরীসহ দুই সহযোগীসহ নিহত হয়। অল্পের জন্য পালিয়ে যায় জাহাঙ্গীর ওরফে মুরাদ ও আকরাম সালাহউদ্দিন।
গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকা একটি বাড়িতে পুলিশের অভিযানে নিহত হয় জাহিদুল ওরফে মুরাদ ওরফে জাহাঙ্গীর। সে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সামরিক শাখার কমান্ডার ছিল বলে জানায় পুলিশ।
গত ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার পর রাজধানীর আজিমপুরে জঙ্গিদের অবস্থান জানতে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অভিযানে এক জঙ্গি নিহত হয় এবং আহত তিন নারী জঙ্গিকে আটক করা হয়।