দেশজুড়ে
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দায়েরকৃত মামলা নিষ্পত্তিকরণের নির্দেশ মেয়রের
চট্টগ্রাম ব্যুরো:
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন ৬ জুন শনিবার সকালে থিয়েটার ইনস্টিটিউটে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের স্বার্থ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়েরকৃত বিভিন্ন মামলা নিষ্পত্তি করার লক্ষ্যে এক বৈঠক করেন। বৈঠকে সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন একটি একটি করে ২৩টি মামলার বিষয়ে বাদী ও বিবাদীদের মতামত ধৈর্য সহকারে শুনেন। তিনি প্রত্যেকের দাবিকৃত সুবিধাসমূহ আইনের বিধি বিধান, নিয়োগ বিধি ও বিদ্যমান জনবল কাঠামোর আওতায় মীমাংসার সিদ্ধান্ত জানান। মামলার সকল বাদীগণ সিটি মেয়রের সুচিন্তিত মতামত ও সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে তাদের দায়েরকৃত মামলাসমূহ আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে তুলে নিতে একমত পোষণ করেন। এ ক্ষেত্রে আইনের বিধানগুলোকে অনুসরণ করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ শফিউল আলম বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে ভারপ্রাপ্ত মেয়র লায়ন মোহাম্মদ হোসেন, সচিব রশিদ আহমদ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজিয়া শিরিন, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, আইন কর্মকর্তা সরওয়ার ই আলম, প্যানেল আইনজীবী এ্যাডভোকেট মুকবুল আহমদসহ বিভিন্ন মামলার সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারী, কাউন্সিলর ও মেয়র সমন্বয়ে আমরা একটা পরিবার। পরিবারের বিরোধ, চাওয়া-পাওয়া যন্ত্রণা থাকতেই পারে। বিগত সময়ে সিটি কর্পোরেশন কোন ধরনের নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা করে নি। অনিয়মকে নিয়মে, বেআইনকে আইনে পরিণত করে যা-ইচ্ছা তাই করেছে। তিনি বলেন, এখন থেকে সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে সুষ্ঠু পরিকল্পনা, নিয়ম-নীতির আলোকে স্বচ্ছতা ও জবাবদেহিতার ভিত্তিতে সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত হবে। সিটি মেয়র বলেন, ঠিকাদারদের কাজ বন্ধ থাকতে পারবে না। তাদের কাজ নির্দিষ্ট সময়ে সমাপ্ত করতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের তালিকাভুক্তি বাতিলসহ কালো তালিকাভুক্ত করার মত শাস্তির আওতায় আনা হবে। তিনি ঠিকাদারদের সাথে বৈঠক করে ডড়ৎশ ঙৎফবৎ এর ভিত্তিতে তাদের সকল কর্মকাণ্ড সমাপ্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন। এ সময় মেয়র ঠিকাদারদের না পাওনার হিসাব চূড়ান্ত করে পেশ করারও নির্দেশ দেন। মেয়র শিক্ষা বিভাগের মাসিক আয়-ব্যয়, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন ভাতাসহ যাবতীয় বিষয়ে তথ্য উপাত্ত মেয়র বরাবরে পেশ করতে বলেন।
সিটি মেয়র ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে এক হাজার ৫শ’ কোটি টাকার কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য প্রকৌশলীদের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, বর্ষা শুরুর পূর্বে খাল ও নালাগুলো পরিষ্কার করতে হবে। মেয়র প্রকৌশল বিভাগের ৫টি ডিভিশনকে খালের সঠিক চিত্র তৈরি করে কর্মপকিল্পনা পেশ করার নির্দেশ দেন। বৈঠকে মেয়র বিলবোর্ডের নীতিমালাকে সঠিকভাবে অনুসরণ করে নতুন করে বিলবোর্ড নীতিমালা প্রণয়ন করার নির্দেশনা দেন। তিনি বিলবোর্ড সংক্রান্ত মামলাসমূহ দ্রুত নিষ্পত্তি করে ফেলা, শিক্ষকদের টাইমস্কেলসহ বিধি বিধানের আওতায় প্রাপ্য সুবিধাসমূহ নিষ্পত্তি করারও নির্দেশনা দেন। মেয়র বলেন, রাতের বেলায় আবর্জনা অপসারণ করা নাগরিকদের দাবি। এ লক্ষ্যে রাত ৮টা থেকে ১২টায় ময়লা আবর্জনা নির্ধারিত ডাস্টবিনে ফেলা এবং রাত ১টা থেকে ৫টার মধ্যে আবর্জনা অপসারণের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশ দেন। আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ভবন নির্মাণের সময় পাইলিং এর পানি মিশ্রিত মাটি নালায় খালে ছেড়ে দেয়ার ফলে খাল ও নালা ভরাট হয়ে যায়। তিনি পাইলিং এর পানি মিশ্রিত মাটি কেউ যেন নালায় বা খালে ফেলতে না পারে সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেন এবং বিধি বিধান আরোপ করে শাস্তির আওতায় আনার পরামর্শ দেন।