জাতীয়
চিকিৎসকদের আয়করের খোঁজে এবার এনবিআর
রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
আয়কর রিটার্নে তারা আয় ও সম্পদের যে বিবরণী দিয়েছেন তার সঙ্গে প্রকৃত সম্পদের কোনো তফাৎ আছে কিনা তা যাচাইয়ের জন্য এসব তথ্য চাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এনবিআরের বিভিন্ন কর অঞ্চল থেকে ব্যাংকে চিঠি দিয়ে তাদের তথ্য চাওয়া হয়, যাদের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক চক্ষু বিশেষজ্ঞ দীন মোহাম্মদ নূরুল হকও রয়েছেন।
চিঠিতে ২০০৮ সালের ১ জুলাই থেকে হালনাগাদ এসব চিকিৎসক, তাদের স্ত্রী ও সন্তানের নামে বা যৌথ নামে এফডিআর, এসটিডিসহ যে কোনো ধরনের সঞ্চয়ী হিসাব, মেয়াদি হিসাব, চলতি হিসাব, ঋণ হিসাব, বৈদেশিক মুদ্রা হিসাব, ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড হিসাব, ভল্ট বা সঞ্চয় পত্র বা অন্য কোনো সেভিংস ইনস্ট্রুমেন্ট হিসাবসহ সব তথ্য চাওয়া হয়েছে। ওই চিকিৎসকদের মধ্যে রয়েছেন, অ্যাপোলো হাসপাতালে কর্মরত মো. শাহাব উদ্দিন তালুকদার ও এস এম জাহাঙ্গীর, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক নিশাত বেগম, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক নাসির উদ্দীন, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নাজনীন কবীর ও অধ্যাপক নেকী আখতার, বারডেম হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক নির্মলেন্দু বিকাশ ভৌমিক ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের নিওরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নারায়ণ চন্ত্র কুণ্ডু ও অধ্যাপক মো. জিল্লুর রহমান।
এছাড়া ইউনাইটেড হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জন মো. জাকির হোসেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিভাগের অধ্যাপক জাফর খালেদ, বারডেম জেনারেল হাসপাতালের জাফর আহমেদ লতিফ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হার্ট ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক ফজিলাতুন্নেসা মালিক ও অ্যাপোলে হাসপাতালের গোলশান আরার নাম রয়েছে। এর বাইরে কয়েকজন চিকিৎসকের হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছে বাসার ঠিকানা দিয়ে, হাসপাতালের নাম উল্লেখ করা হয়নি। তারা হলেন- রুকসানা হামিদ, শিরিন আকতার, সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ, জেরিনা বেগম, দীন মোহাম্মদ নূরুল হক, গোলাম নওশের আলী (জি এন আলী), ফাইজুল আলম, নারায়ণ শংকর দাস, সারিয়া তাসনিম। তাদের বাবা-মার নাম জন্ম তারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও টিআইএন নম্বরও দেওয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোতে। ব্যক্তিগত হিসাবের পাশাপাশি কয়েকটি চিকিৎসা ব্যবসা কেন্দ্রের ব্যাংক হিসাবের তথ্যও চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, বনানীর স্ট্যান্ডার্ড ল্যাব, ফরিদপুরের পরিচর্যা হাসপাতাল লিমিটেড, গুলশানের সাউথ অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক কমপ্লেক্স ও মোহাম্মাদপুরের উত্তরা হার্ট সেন্টার। কর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব চিকিৎসক প্রকৃত আয় গোপন করে বড় ধরনের কর ফাঁকি দিচ্ছেন বলে তারা মনে করছেন।