ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহের ক্লিনিকে ভুল অপারেশনে প্রসুতির মৃত্যু, টাকায় রফা!
রোগীর স্বজনরা জানায়, ১০দিন আগে রুমিকে বৈডাঙ্গা প্রাইভেট ক্লিনিকে সিজারিয়ানের জন্য ভর্তি করা হয়। ক্লিনিকের মালিক কর্মচারীরাই রুমিকে সিজার করেন বলে অভিযোগ। এরপর তার অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়লে রোববার ঝিনাইদহের পরিবর্তে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তির জন্য জোর করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
সাগান্না ইউনিয়নের কাউন্সিলর ও চাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা কামাল হোসেন দিপু খবরের সত্যতা নিশ্চত করে জানান, রোববার রুমি খাতুনের অবস্থা আরো খারাপ হলে তিনি নিজেই ঝিনাইদহ শহরের শামিমা ক্লিনিকে ভর্তি করে দেন। ডাক্তার শামিমা সুলতানা দুই ঘন্টা তার ক্লিনিকে পর্যবেক্ষনে রেখে রোগীর অবস্থা জটিল হওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সোমবার ভোরের দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রুমির মৃত্যু ঘটে। বিষয়টি নিয়ে ডাক্তার শামিমা সুলতানা জানান, অপারেশনের পর রোগীর ডান সাইড পড়ে গেছে।
তিনি আরো জানান, সাধারণ ইনফেকশনের কারণে এমনটি হয়। যন্ত্রপাতি ও অপারেশন থিয়েটার অপরিস্কারের কারণে সিজারের পর রোগীর ইনফেকশন হয়ে থাকে। রুমির ক্ষেত্রে হয়তো তাই হয়েছিল। এদিকে অপচিকিৎসায় রুমির মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে ক্লিনিক মালিকরা দিনমজুর হাসানের হাতে ৪৫ হাজার টাকা ধরিয়ে মাফ চেয়ে চলে আসেন।
টাকা প্রদানের বিষয়টি এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল হোসেন দিপু স্বীকার করে বলেন, বৈডাঙ্গা প্রাইভেট ক্লিনিকে প্রায় এমন ঘটনা ঘটে। তারপরও ক্লিনিক মালিক পার পেয়ে যাচ্ছে।
সাগান্না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন আল আজাদ জানান, রুমি নামে এক গৃহবধূ সিজার করার পর মারা গেছে বলে তিনি শুনেছেন। এ বিষয়ে বৈডাঙ্গা প্রাইভেট ক্লিনিকে মালিক ফারুক হোসেন প্রথমে ঘটনাটি বেমালুম চেপে যান। পরে তিনি স্বীকার করেন, ১০/১৫ দিন আগে তার ক্লিনিকে রুমির অপারেশন হয়। কিন্তু তিনি স্ট্রোকে মারা যান। কোন ডাক্তার অপারেশ করেছেন, জানতে চাইলে ফারুক হোসেন জানান, রেজিষ্টার না দেখে বলা যাবে না।
ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. আব্দুস সালাম জানান, ঘটনাটি আমার জানা নেই। আমি খোজ নিয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নেব। এদিকে এলাকাবাসির অভিযোগ বৈডাঙ্গা প্রাইভেট ক্লিনিকে কোন সার্বক্ষনিক চিকিৎসক নেই। নেই প্রশিক্ষিত নার্স। নোংরা পরিবেশে ক্লিনিকের মালিক কর্মচারীরাই প্রায় সময় অপারেশ করে থাকেন বলে অভিযোগ।