Connect with us

ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহের মহেশপুর ১১ মাসের শিশুর ১৮ ঘন্টা হাজতবাস

Published

on

Jhenidah Arrest Photo-18-09-15

মনিরুজ্জামান সুমন, ঝিনাইদহ: ১১ মাস বয়সের শিশু রয়েলের পিতা রাজু আহম্মদকে আটক করতে যান পুলিশ। রাজুকে না পেয়ে মায়ের সঙ্গে শিশুটিকে আটক করে থানায় আনেন। মায়ের সঙ্গে ১৮ঘন্টা আটকে রাখেন থানা হাজতে। বুধবার রাত ৮ টায় আটক করে মা-ছেলেকে, আর বৃহস্পতিবার ৩ টায় মুক্তিপান তারা। ঘটনাটি ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার।  পরিবারের দাবি পুলিশকে ৪২ হাজার টাকা দিয়ে মুক্তি পেতে হয়েছে। অবশ্য পুলিশ এ ব্যাপরে স্পষ্ট কিছুই বলছেন না। শুধু এইটুকু বলছে বিষয়টি নিয়ে পরে কথা হবে।

ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার ভালাইপুর গ্রামের আজব আলীর পুত্র রাজু আহম্মদ জানান, তার নামে ইতিপূর্বে একটি মামলা ছিল। যে মামলায় তিনি আদালত থেকে জামিন নিয়ে ১৬ দিন পূর্বে বাড়িতে এসেছেন। বর্তমানে তার নামে কোনো মামলা নেই। তারপরও পুলিশ তাকে আটক করতে যায়। বুধবার রাতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে একই উপজেলার লাটিমা গ্রামে আব্দুল আজিজ নামের এক আত্মিয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। সেসময় রাত ৮ টার দিকে ওই বাড়িতে পুলিশ আসে। পুলিশ তার নাম ধরে খোজ করতে থাকলে তিনি অবস্থা বুঝে দৌড়ে পালিয়ে যান। মহেশপুর থানার টিএসআই আমির হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাকে তাড়া করে আটক করতে না পেরে তার স্ত্রী আর ১১ মাসের শিশুকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। আটকের সময় তার স্ত্রীকে মারপিট করা হয়েছে। কোনো নারী পুলিশ না থাকায় পুরুষ পুলিশরা তাকে মারপিট করেছে। এরপর তাদের টেনেহেচড়ে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যায়। বুধবার সারা রাত ওই শিশুটিকে তার মায়ের সাথে থানা হাজতে আটকে রাখা হয়।

রাজু আহম্মদ আরো জানান, বুধবার রাতে হাজতে আটকে রেখে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয় টাকার দাবি। পুলিশের ওই কর্মকর্তা মা-ছেলেকে ছাড়তে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এই টাকা না দিতে পারায় দুপুর পর্যন্ত তাদের আটকে রাখেন। এক পর্যায়ে ৪২ হাজার টাকা দিয়ে বেলা ৩ টার দিকে তাদের মুক্ত করেন। তিনি জানান, ধারদেনা করে টাকার জোগাড় করে তার চাচা আব্দুল আজিজ এর হাত দিয়ে এই টাকা পৌছে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আব্দুল আজিজ জানান, তিনি বৌমাকে ছাড়াতে থানায় গেলে পুলিশ টাকার প্রস্তাব দেন। রাজু মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে পুলিশ কর্মকর্তার সাথে টাকার চুক্তি করেন। পরে টাকার জোগাড় করে তার হাতে দিলে তিনি রাতে আটক করতে যাওয়া ওই কর্মকর্তার হাতে তুলে দেন।

এ ব্যপারে টিএসআই আমির হোসেন জানান, রাজু আহম্মদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। যে কারনে তাকে আটক করতে যান। পুলিশ দেখে রাজু পালিয়ে যায়। এরপর তার স্ত্রীকে একা অন্যের বাড়িতে রেখে আসলে ক্যামন হয় তাই নিরাপত্তার জন্য থানায় নিয়ে আসেন। হাজতে রাখার বিষয়ে বলেন নিরাপত্তার জন্যই রাখা হয়েছে। আর ৪২ হাজার টাকা দিয়ে মুক্তি পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে জানান। বার বার প্রশ্ন করলেও তিনি ব্যস্ততার অজুহাতে এড়িয়ে যান।

অবশ্য মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিদুল ইসলাম শাহিন জানিয়েছেন তারা স্বামী-স্ত্রী ওই বাড়িতে অবস্থানকালে এলাকার লোকজন খারাপ ধারনা করে আটক করেন। তারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ সেখানে গিয়ে দেখেন ছেলেটি পালিয়ে গেছে। মেয়েটিকে থানায় নিয়ে আসেন। পরে তারা স্বামী-স্ত্রী জানতে পেরে ছেড়ে দেন। এখানে টাকা পয়সার কোনো লেন-দেন নেই বলে তিনি দাবি করেছেন।

বাংলাদেশেরপত্র.কম/এডি/আর

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *