দেশজুড়ে
টানা অবরোধ-হরতালে আত্রাইয়ে পানির দরে সবজি বিক্রি হচ্ছে
আত্রাই প্রতিনিধি:
টানা অবরোধ-হরতালের কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন আত্রাই উপজেলার সবজিচাষিরা। দেশব্যাপী চলা অনির্দিষ্টকালের অবরোধে কৃষকরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। পণ্য পরিবহনব্যবস্থা না থাকায় চাষিরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের মূল্য পাচ্ছেন না। গত কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রতিটি ফসলের মূল্য অর্ধেকে নেমে এসেছে। এমনকি স্থানীয় হাট-বাজারে ক্রেতা না থাকায় মাঠের ফসল মাঠেই পচে নষ্ট হচ্ছে। কৃষকদের দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। প্রান্তিকচাষিরা তাদের উৎপাদিত ফসলের মূল্য না পেলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যেসব পাইকার ঢাকায় এসব পণ্য নিয়ে যাচ্ছেন তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। পাশাপাশি তাদের পরিবহন ব্যয় দ্বিগুণ দিতে হচ্ছে।
আত্রাই উপজেলার সাহেবগঞ্জ পাইকারি কাঁচা বাজারে কৃষিবান্ধব গুড়নই গ্রামের আদর্শ কৃষক আকবর আলী (বাবু) ও দুলাল আলী ফুলকপি এনেছেন বিক্রির জন্য প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) কপি বিক্রি করেছেন ১০ টাকা মূল্যে যার ১ মণ কপি বেঁচেছেন ৮০ টাকায়। খাজনা পরিবহন (ভ্যান) খরচ ৪০ টাকা বাদ দিয়ে প্রতি মণ কপির মূল্য পেয়েছেন ৪০ টাকা। আত্রাই সাহেবগঞ্জ পাইকারী কাঁচা বাজারের আশপাশের ৩-৪ জেলার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রির জন্য এই বাজারে এসে থাকেন। তারা তাদের পণ্য প্রতিদিন ছোট আকারের ট্রাক, ইঞ্জিনচালিত ভটভটি ও নছিমন-করিমনে করে এই উপজেলার সদরে অবস্থিত দীর্ঘদিনের পুরাতন সাহেবগঞ্জ বাজারে নিয়ে আসে। এখানে বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা কাঁচা সবজি ক্রয় করে ঢাকায় নিয়ে যায়। কিন্তু কোনো পাইকার না আসায় বাজারে সবজির দাম কমে গেছে। গত ২ সপ্তাহ আগে যে ফুলকপি প্রতি মণ ৩৫০ টাকা ছিল সে ফুলকপি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা, বাঁধা কপি প্রতি পিস ৫/৬ টাকা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে। ৩০০ টাকার কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা, ৩০০ টাকার আলু ১৫০ টাকা, ৬০০ টাকার টমেটো ৩৫০ টাকা, ৮০০ টাকার সিম বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা মণ দরে।
মালিপুকুর গ্রামের মোহম্মাদ আলী জানান, সবজির দাম পড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ উঠছে না। ফলে কৃষককে লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ ছাড়া বাজারে আনা অনেক কৃষক জানান, সবজি বেঁচে বোরো আবাদ করবে কিন্তু অবরোধের কারণে সবজির দাম না পাওয়ায় বোরো আবাদ নিয়েও হতাশায় ভুগছেন।