Connect with us

জাতীয়

নাসিরনগরের ডায়েরি: ‘মনে হয় না আমরা এদেশে টিকতে পারবো’

Published

on

 

bdঅনলাইন ডেস্ক: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে প্রথম হামলার পর যখন সেখানে গিয়েছিলাম, তখন দেখা হয়েছিল এই পরিবারটির সঙ্গে। আক্রান্ত হয়েছিল তাদের বাড়ি। ভেঙ্গে তছনছ করা হয়েছিল বাড়ির সামনের পুজামন্ডপ। পরিবারটি অবস্থাপন্ন। এলাকার অনেকেই তাদের একনামে চেনে। এরকম একটি হামলার পর পরিবারের কর্তা ছিলেন মানসিকভাবে ভীষণ বিপর্যস্ত। তাঁর আশংকা ছিল, আবারও হামলা হতে পারে। তার আশংকা সত্য হয়েছে। নাসিরনগরে আবারও হামলা হয়েছে কয়েকটি বাড়িতে। তবে দ্বিতীয় দফা হামলা থেকে রেহাই পেয়েছে এই পরিবারটি।
এবার টেলিফোনে কথা হয় এই পরিবারের একটি ছেলের সঙ্গে। নিরাপত্তার কারণে ছেলেটি বার বার অনুরোধ করেছে তার বা তার পরিবারের পরিচয় যেন প্রকাশ করা না হয়। টেলিফোনে দেয়া সাক্ষাৎকারে ছেলেটি বর্ণনা করেছে নাসিরনগরের এখনকার পরিস্থিতি:
“সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনলাম গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় আগুন লাগছে।
গিয়ে দেখলাম, সবার বাড়ি বাড়ি আগুন। প্রত্যেক বাড়িতেই অন্তত একটা ঘর আগুনে পুড়ছে। আগের ঘটনার পর সবাই একটু সজাগ ছিল। তাই আগুন বেশি ছড়াতে পারেনি।
সবার বাড়িতে ভালোই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেকের পুরো ঘরই পুড়ে গেছে। একটা পুরাতন মন্দির ছিল। ঐ মন্দির পুরোটাই পুড়ে গেছে।
আজকে আমাদের মানববন্ধন করার কথা ছিল। কিন্তু আমাদের এমপি গতকালই নিষেধ করেছে, মানববন্ধন করা যাবে না। তারপরও আমরা কয়েকজন মিলে মানববন্ধন করেছি।
আমাদের এখানে এত নিরাপত্তার মাঝেও যদি এরকম ঘটনা ঘটে, তাহলে আমরা কি করবো? প্রশাসন তো আমাদের জন্য কিছুই করতেছে না।
আমরা কোথায় যাবো? এখন তো মনে হচ্ছে আমরা এদেশের নাগরিক না। নাগরিক হলে অন্তত একটু নিরাপত্তা তো পেতাম।
যখন নিরাপত্তা উঠে যাবে, তখন কি হবে? আমার তো মনে হয় না, আমরা এদেশে টিকতে পারবো। আমরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়ছি। আমরা কোথায় যাবো?
প্রশাসন যদি নিরাপত্তা দিত, তাহলে কালকে আটটা বাড়িতে আগুন লাগে না। মন্দির পুড়ে না।
কারা কি করছে আমরা কিছুই বলতে পারছি না। সবগুলোই অজ্ঞাত। আমরা কাউকেই চিনি না।
এখন ঘরেও তো থাকতে পারছি না। রাতের অন্ধকারে কখন এসে আগুন দেয়। আমরা তো বলতে পারছি না, আমরা বাঁচবো, নাকি মরবো।”

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *