দেশজুড়ে
নিয়ামতপুরে টানা তিনবার কালবৈশাখীতে বিধ্বস্ত হাজার হাজার কৃষক পরিবার, পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি
নিয়ামতপুর প্রতিনিধি, নওগাঁ:
নওগাঁর নিয়ামতপুরে টানা তিনবার কাল বৈশাখীতে বিধ্বস্ত হয়েছে হাজার হাজার কৃষক পরিবার। আর পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ১৮ এপ্রিল শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় প্রচণ্ড কাল বৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
বাংলা নববর্ষের পরে ১৪২২ সালে এ পর্যন্ত তিনবার কাল বৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে নিয়ামতপুর উপজেলাবাসী। এতে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে উপজেলার হাজার হাজার কৃষক পরিবার। গত ৫ এপ্রিল রবিবার বিকেল ৫ টায় প্রথম কাল বৈশাখীর কবলে পড়ে নিয়ামতপুরবাসী, এরপর ১৭ এপ্রিল বেলা ২টায়, সর্বশেষ গত ১৮ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায়।
উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছেন, কাল বৈশাখী ঝড়ে পাকা ধান সম্পূর্ণভাবে মাটিতে পড়ে গেছে, তার উপর শিলা বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাদের ধান ও রবি শস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বিশেষ করে হাজিনগর ইউপির শিবপুর, কুশমইল, চৌপুকুরিয়া, ফতেপুর, শালবাড়ী, চন্দননগর ইউপির বামইন, ছাতড়া, চন্দননগর, রামনগর, গরাই, ভাবিচা ইউপির সিদাইন, আমইল, ঠকঠকি, নিয়ামতপুর ইউপির তেঘরিয়া, নিয়ামতপুর, রসুলপুর ইউপির নিমদীঘি, অমৃতপুর, রসুলপুর, মল্লিকপুর, পাড়ইল ইউপির বীরজোয়ান, আরমাননগর, শ্রীমন্তপুর ইউপির বটতলী, হরিপুর, রাজাপুর, দর্গাপাড়া, সৈয়দপুর, রামনগর, রামকুড়া, বাহাদুরপুর ইউপির গুজিশহর, ছাতমা, বালাতৈড়, রামগাঁ সাহাপুর, বাহাদুরপুর, গ্রামের প্রায় পাকা ধান মাটিতে পড়ে গেছে । ঘর-বাড়ি সবারই কম-বেশি ক্ষতি হয়েছে। এতো ক্ষতির পরেও থেমে নেই বিভিন্ন এনজিও ও বেসরকারি সংগঠনের ঋণ কার্যক্রম। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আশা, গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক, টিএমএসএস, ঘাসফুল, আশ্রয় লাখ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে গ্রাম অঞ্চলে। নিয়ামতপুর উপজেলায় এবার বোরো আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২২ হাজার ১০০ হেক্টর, কিন্তু আবাদ হয়েছে ২২ হাজার ২শ’ ৫০ হেক্টর। ফলনও বাম্পার হয়েছিল। কিন্তু দফায় দফায় কাল বৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে গড়ে প্রায় ৫০% পাকা ধানের ক্ষতি হয়েছে।
হাজার হাজার কৃষক পরিবার সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে। ঝড়ে শত শত রাস্তার গাছ পড়ে গেছে, ঘরের টিনের চাল উড়ে গেছে। নিয়ামতপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিল ছাতড়া বিল, এই বিলে প্রতি বছর শত শত হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়। শনিবারের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার কারণে অনেক পাকা ধান ডুবে গেছে। এতে ৫০% এর বেশি ফলন কম হওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ।