Connect with us

আন্তর্জাতিক

নেপালে আন্তর্জাতিক উদ্ধার ও ত্রাণ সহায়তা জোরদার

Published

on

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:  

নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর রোববার আন্তর্জাতিক উদ্ধার ও ত্রাণ সহায়তা জোরদার করা হয়েছে। কিন্তু বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ভূমিধসের কারণে ত্রাণ প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে।

নেপালে শনিবারের ভূমিকম্পে দু’হাজারের মতো লোক নিহত হয়েছে বলে আশংকা করা হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ জীবিতদের উদ্ধারে জরুরি সহায়তা দল পাঠিয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব দ্য রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (আইএফআরসি) এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক জাগান চাপাগেইন বলেন, ভূমিধসের কারণে সড়কসমূহ হয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে না হয় বন্ধ হয়ে গেছে এবং যোগযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার কারণে রেডক্রসের স্থানীয় অফিসে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সঠিক তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে না।

আইএফআরসি বলছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের কাছের গ্রামগুলো নিয়ে তারা বেশি উদ্বিগ্ন। কারণ কিছু গ্রাম রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।  চাপাগেইন বলেন, আমরা আশংকা করছি ওইসব জায়গায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য ত্রাণ সংস্থাও পুরো দেশজুড়ে ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির ওপর ভিত্তি করে কি পরিমাণ সহায়তা প্রয়োজন তা নিরূপনে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

নেপালে কারিতাস অস্ট্রেলিয়ার প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর ইলিয়ানর ত্রিনেচারা বলেন, ধ্বংসযজ্ঞের ভয়াবহ রূপ আমরা দেখেছি। হাসপাতালগুলো থেকে রোগী সরিয়ে এনে বাইরে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বাড়িঘর ধসে গেছে। কিছু সড়কে বড়ো বড়ো ফাটল দেখা দিয়েছে।

এদিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় পানি সমস্যা আরো জটিল রূপ নেবে বলে ত্রাণ গ্রুপগুলো বলছে। একইসঙ্গে চিকিৎসা সরঞ্জামও ফুরিয়ে আসছে। ভূমিকম্পের পর যারা বেঁচে আছেন তারা ঠান্ডা উপেক্ষা করে রাতভর খোলা আকাশের নীচে ছিলেন। ভূমিকম্পে নড়বড়ে হয়ে পড়া ভবনগুলো ধসে যেতে পারে এ আশংকায় তারা বাইরে রাত কাটান।

৭.৮ তীব্রতার এ ভূমিকম্পে অফিস আদালতসহ শত শত ভবন এমনকি বিখ্যাত নয়তলা টাওয়ারও একেবারে মাটির সাথে মিশে গেছে। এদিকে ভূমিকম্পের পর মাউন্ট এভারেস্টের হিমবাহের কারণে অন্তত ১৭ জন মারা গেছে। হিমবাহের কারণে এভারেস্ট বেস ক্যাম্পের আংশিক ধসে গেছে।
নেপালের এই ধ্বংসযজ্ঞে আন্তর্জাতিক মহল গভীরভাবে সমব্যাথী। যুক্তরাষ্ট্রের দুর্যোগ মোকাবেলা দল ইতোমধ্যে নেপালের পথে যাত্রা শুরু করেছে। এছাড়া ওয়াশিংটন জরুরি প্রয়োজন মোকাবেলায় প্রাথমিকভাবে ১০ লাখ ডলার অনুমোদন করেছে। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড যৌথভাবে ৪৫ লাখ ডলারেরও বেশি ত্রাণ সহায়তা দেয়ার অঙ্গীকার করেছে। ভারত ইতোমধ্যে দু’টি সামরিক পরিবহন বিমান পাঠিয়েছে। শ্রীলংকা, পাকিস্তান ও তাইওয়ানও একই ধরনের সহায়তার প্রস্তাব করেছে। চীন বলছে, ¯œাইপার ডগসহ তাদের ৬২ সদস্যবিশিষ্ট উদ্ধারকারী দল ইতোমধ্যে নেপাল পৌঁছেছে। এছাড়া চীনের একটি চিকিৎসক দল শিগগিরই নেপাল পৌঁছাবে এবং জরুরি ত্রাণ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করবে। দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া এ কথা জানায়। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে, তিব্বতে ভূমিকম্পের কারণে ১৭ জন প্রাণ হারিয়েছে।

এদিকে সিঙ্গাপুরের একটি উদ্ধারকারী দলও নেপালের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। দেশটির সরকারি সূত্রে এ কথা বলা হয়েছে। জাপান নিশ্চিত করেছে তাদের ৭০ সদস্যবিশিষ্ট জরুরি সহায়তা দল রোববার নেপালের উদ্দেশে যাত্রা করেছে। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও তার মানবিক বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা দুর্যোগপীড়িত নেপালের উদ্দেশে যাত্রা করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণ মাত্রা সম্পর্কে এখনও জানা যায়নি। তবে ধ্বংসযজ্ঞ যে ভয়াবহ সেটি অনুমান করা যাচ্ছে।

এদিকে জার্মানি, ব্রিটেন ও স্পেনও সমর্থন ও সহায়তা দেয়ার অঙ্গীকার করেছে। নরওয়ে ৩৯ লাখ মার্কিন ডলার সহায়তার অঙ্গীকার করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেন, ভূমিকম্পের খবরটি খুবই শোকাবহ। তিনি মানবিক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ দল দ্রুতই নেপালে পাঠানোর অঙ্গীকার করেন।

ইসরাইল বলছে, তারা নেপালে একটি ত্রাণ সহায়তা দল পাঠাচ্ছে। এ দলে প্যারামেডিক ও ডাক্তারও রয়েছে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *