দেশজুড়ে
নড়াইল পৌরসভা ও সংশ্লিষ্ট বাজারে সামান্য বৃষ্টিতেই ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল প্রতিনিধি : সামান্য বৃষ্টি হলেই নড়াইল পৌরসভার অন্তর্গত রূপগঞ্জ বাজার মুচিপোল এলাকার হরি মন্দির বটগাছ এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। সামান্যতম বৃষ্টির ছোঁয়া পেয়ে বাজারের গলিপথে ময়লা-আবর্জনা পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে দুর্ভোগে আছেন ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। এ জন্য পরিকল্পিতভাবে নালা (ড্রেন) ব্যবস্থা গড়ে না ওঠা, পর্যাপ্ত নালা না থাকা, নালা পরিষ্কার না করা এবং নিয়মিত ময়লা ফেলার ব্যবস্থা না থাকাকে দুষলেন ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে ব্যবাসায়ী ও ক্রেতাদের মনে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দানা বেধে উঠছে। বিস্তারিত উজ্জ্বল রায়ের রিপোর্টে গত কয়েকদিন ধরে মাঝে মাঝেই বৃষ্টি হচ্ছে। বাজারে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। দোকানে ও গলিপথে এমন ভিড় যেন পা ফেলার জায়গায় নেই। এ অবস্থায় দুর্ভোগ আরো বেড়েছে। কয়েকজন ব্যবসায়ী ও ব্যাংক কর্মকর্তা জানালেন, নড়াইল জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ও বড় লেনদেন হয় রূপগঞ্জ বাজারে। সে বিবেচনায় বাজারটির ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দেওয়া দরকার। সরেজমিনে দেখা গেছে, বাজারে একটিমাত্র দীর্ঘ নালা রয়েছে। এ নালায় পানিপ্রবাহ হচ্ছে না। কারণ এটি ময়লা-আবর্জনায় ঠাসা। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বাজারের প্রতিটি গলিপথে পানি জমেছে। নালায় ও রাস্তার পাশে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা পচে তা বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে গেছে। এতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ফলে গলিপথের নাকাল অবস্থা। রাস্তার পাশের দোকানগুলো পানিবন্দি হয়ে আছে। অনেক দোকানের ভেতরে পানি জমেছে। স্বর্ণপট্টি রোডের ব্যবসায়ী শ্যামল রায় ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘দোকানে পানি ঢুকেছে, দোকানের সামনেও পানি। নিয়মিত কর দেই। কিন্তু কর্তৃপক্ষের এ নিয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই।’ সুব্রত রায়, নয়ন সিংহন ও মারুফ হোসেন বাজারে কেনাকাটা করতে এসেছেন। তাদের কাপড় কাঁদা-পানি ও ময়লায় নষ্ট হয়েছে। তারা ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘এমন নোংরা পরিবেশে দেশের আর কোনো বাজারে আছে কিনা সন্দেহ।’ সন্তোষ মিস্ত্রি, কালাচাঁদ দাস, প্রহর, ইশান বলেন, আমরা বৃষ্টির পানিতে বাসা থেকে বেরোতে পারছিনা। চারপাশে জল ও নোংরা পরিবেশ থাকার কারণেই এ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। বাজারের ব্যবসায়ীদের মত, পরিকল্পিত ও পর্যাপ্ত নালা ব্যবস্থা গড়ে, নিয়মিত নালা সংস্কার ও পরিষ্কার করে এবং গলিপথে ডাস্টবিন তৈরি করে এ অবস্থা থেকে পরিত্রান পাওয়া সম্ভব। রূপগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য সুবীর নন্দী বলেন, ‘খাজনা, ট্রেড লাইসেন্স ও ইজারা বাবদ বাজার থেকে পৌরসভার বছরে আয় প্রায় কোটি টাকা। এর ৪৫ ভাগ অর্থ বাজার ব্যবস্থাপনায় ব্যয় করার বিধান রয়েছে। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষের এ দিকে কোনো খেয়াল নেই। কোনো উদ্যোগ নেই। পৌর কর্তৃপক্ষের পরিকল্পিত উদ্যোগে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে লোহাগড়া পৌরসভার মেয়র নেওয়াজ আহমেদ ঠাকুর বলেন, ‘ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা দুর্ভোগে আছেন ঠিকই, কিন্তু এ জন্য দায়ী ব্যবসায়ীরাই। কারণ ওই ড্রেনেই তাঁরা ময়লা ফেলেন। পরিষ্কার করলেও দুদিন পর দেখা যায় ড্রেন ময়লা-আবর্জনায় ঠাসা। গলিপথে জায়গার অভাবে ডাস্টবিন করা যাচ্ছে না। এ সব বিষয় নিয়ে বাজারের ব্যাসায়ী নেতাদের সঙ্গে কয়েকবার বৈঠক হয়েছে, কিন্তু সমাধান আসেনি।’
বাংলাদেশেরপত্র/এডি/এ