ঢাকা বিভাগ
প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ ॥ শিক্ষক সংগঠনের আন্দোলনের হুমকি
মাদারীপুর জেলার শিবচর নন্দকুমার মডেল ইনস্টিউশনে প্রধানশিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্র্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির হাতে থাকায় কমিটি ও ডিজির প্রতিনিধি এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অদক্ষ ব্যক্তিকে অনিয়ম দুর্র্নীতি ও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে শিবচরের শিক্ষক সংগঠন আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ জানুয়ারী শিবচর নন্দকুমার মডেল ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
নিয়োগ পরীক্ষার খাতায় নিয়োগ কমিটির সদস্য উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার, ডিজির প্রতিনিধি ও নন্দকুমার মডেল ইনস্টিটিউশনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনিয়মের মাধ্যমে ঐ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. হারুণ-অর-রশিদ প্রধান শিক্ষক পদে আবেদন করায় তাকে বেশী নম্বর দেয়।
অপর নিয়োগপ্রার্থী প্রশান্ত কুমার রাহাকে কম নম্বর দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনাটি টের পেলে নিয়োগ কমিটির অপর সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। পরে নিয়োগ পরীক্ষায় নিকটতম দুই প্রার্থীর খাতা যাচাই বাচাইয়ে নম্বর বন্টনে ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়ে।
মৌখিক পরীক্ষায় প্রশান্ত কুমার রাহাকে সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়ার পরেও নিয়োগ কমিটির তিন সদস্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, ডিজির প্রতিনিধি ও বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাকে কম নম্বর দেন।
অপরপ্রার্থী মো. হারুণ-অর-রশিদকে মৌখিক পরীক্ষায় স্বজনপ্রীতি করে বেশি নম্বর দেওয়া হয়। এনিয়ে নিয়োগ বোর্ডের অপর সদস্যদের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দেয়।
প্রধান শিক্ষক প্রার্থী প্রশান্ত কুমার রাহা বলেন, “আমি লিখিত পরীক্ষা খুব ভাল দেওয়ার পরেও আমাকে কম নম্বর দেওয়া হয়েছে। অপর প্রার্থীকে বেশি নম্বর দিয়ে কৃত্রিমভাবে প্রথম দেখানো হয়েছে। এছাড়াও মৌখিক পরীক্ষায় সকল প্রশ্নের উত্তর সঠিক দিয়েছি, কিন্তু উক্ত নিয়োগ কমিটির তিন সদস্য আমাকে নামমাত্র নম্বর প্রদান করেছেন।
শিবচর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ কে মাসুদুর রহমান খান বলেন, উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে হারুণ-অর- রশিদকে অনিয়ম ও কারচুপির মাধ্যমে বেশী নম্বর দেওয়া হয়েছে। এতবড় জালিয়াতি হয়েছে যে কারণে শিক্ষকরা আন্দোলনে নামতে পারে।
শিবচর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবদুল ওহাব মিয়া বলেন, “অনিয়ম হয়েছে তবে বিষয়টি আমাদের এমপি এর নলেজে গেছে। তিনি যা ভাল মনে করেন তাই করবেন, এখানে আমাদেরই বা কি করণীয় আছে?”
নিয়োগ কমিটির একজন সদস্য ও শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. সেলিম মিয়া বলেন, “বিতর্ক কিছু হয়েছে, আপনারা খোজ খবর নিয়ে দেখেন। পরে আমাকে বলবেন।”
শিবচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরান আহমেদ বলেন, “আমি তো নিয়োগ কমিটির কেউ নই, তাছাড়া বিষয়টি আমার জানা নেই।”
এ ব্যাপারে জানার জন্য শিবচর নন্দকুমার ইনস্টিউটিউশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির ও প্রধানশিক্ষক প্রার্থী মো. হারুণ-অর-রশিদকে একাধিক বার মোবাইলে ফোন দেয়া হলে তারা ফোন রিভিস করেননি। তাই তাদের বক্তব্য দেওয়া গেল না।