জাতীয়
প্রস্তাবিত বেতন কাঠামো মন্ত্রিসভায় অনুমোদন
সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে আলোচিত এই বেতন কাঠামো অনুমোদন দেওয়া হয়।
জানা গেছে, মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হলেও বেতন কাঠামো চূড়ান্তে অনেকগুলো ধাপ সম্পন্ন করতে হবে। সেগুলো শেষ হতে আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর পর্যন্ত সময় লেগে যাবে।
মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত বেতন কাঠামো এখন ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। ভেটিং শেষে সেটি আইন মন্ত্রণালয় থেকে আবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠানো হবে।
সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন শেষে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পরই তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। আর এসব প্রক্রিয়া শেষ হতে প্রায় দুই মাস সময় লাগতে পারে বলে জানা গেছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মাদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা ব্রিফিং করে বলেন, ‘বেতন ও চাকরি কমিশন ২০১৩, সশ্রস্ত্রবাহিনী বেতন কমিটি ২০১৩ এ সংক্রান্ত সচিব কমিটির সুপারিশের আলোকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো ও ভাতাদি অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই মাস থেকেই এ বেতন স্কেল কার্যকর হয়েছে। মোট ২০টি গ্রেডের নতুন এ কাঠামো অনুযায়ী সর্বনিম্ন বেতন হবে ৮,২৫০ এবং সর্বোচ্চ ৭৮,০০০ টাকা।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, নতুন বেতন কাঠামোয় সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল থাকছে না। তবে নববর্ষে ভাতা দেওয়া হবে।
এছাড়া এই বেতন চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়বে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গতবছরের ২৪ নভেম্বর ১৭ সদস্যের ‘জাতীয় বেতন ও চাকরি কমিশন-২০১৩’ গঠন করে অর্থ মন্ত্রণালয়। ২১ ডিসেম্বর সরকারি চাকরিজীবীদের শতভাগ বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করে অষ্টম বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন জমা দেন।
এরপর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত কমিশনের প্রতিবেদন পেয়ে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটি চার মাসের বেশি সময় নিয়ে পর্যালোচনা শেষে চূড়ান্ত সুপারিশ পেশ করে।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর সর্বশেষ ২০০৯ সালে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি করে। এ সময় সর্বনিম্ন বেতনক্রম ২,৪০০ টাকা থেকে ৪,৩১০ টাকা এবং ৪,১০০ টাকা হতে ৭,৭৪০ টাকা। সর্বোচ্চ ২৩,০০০ টাকা থেকে ৪০,০০০ টাকা করা হয়।
দেশে বর্তমানে সরকারি চাকরিজীবীর সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ। তবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, উন্নয়ন প্রকল্পে নিয়োজিত চাকরিজীবীরা এ হিসাবের বাইরে।
ফরাসউদ্দিনের কমিটির আগে দেশে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য সবশেষ পে-কমিশন গঠন করা হয় ২০০৭ সালে ড. ফখরুদ্দীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়।