দেশজুড়ে
বায়েজিদ ত্রিরতœ বৌদ্ধ বিহার তালাবদ্ধ
বায়েজিদ প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানার ৩৩নং গ্রীন ভিউ হাউজিং সোসাইটির ত্রিরতœ বৌদ্ধ বিহারের ভূমি বিক্রেতা কর্তৃক তালাবদ্ধ করার ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে সৃষ্ট বিরোধ নিষ্পত্তিকল্পে আয়োজিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তালাবদ্ধই রাখা হয়েছে উপাসনালয়।
শনিবার বিকেল ৪টায় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ্ব মো. শফিকুল ইসলামের বাসভবনে উভয়পক্ষের অংশগ্রহণে উক্ত বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
বৈঠকে কাউন্সিলর বিহারের লাগানো তালা ঐদিন সন্ধ্যায় খুলে দেওয়ার জন্য বিবাদী পক্ষ মকসুদ আহম্মদকে মৌখিক আদেশ দেন এবং ধর্মীয় কার্যাদি সম্পাদনের জন্য উভয়পক্ষকে জানিয়ে দেন। বিষয়টির সুষ্ঠু সুরাহার জন্য উভয়পক্ষকে আগামী শনিবার ১৪ মার্চ বিকেল ৪টায় তার বাসভবনে পুনরায় উপস্থিত থাকার জন্য বলেন।
উল্লেখ্য, গত ২০১৪ সালের মে মাসে উক্ত বিহারের জন্য মকসুদ আহম্মদ, পিতা মৃত হাজি মো. ইসলাম, সাং-২৩নং গ্রীনভিউ হাউজিং সোসাইটি, অক্সিজেন, বায়েজিদ, চট্টগ্রাম এর কাছ থেকে ১১ী৩২=৩৫২ বর্গফুট এর টিনসেটের ঘরটি বায়েনামা মূলে বিহার কমিটির পক্ষে বাবু রতন কুমার বড়–য়া ক্রয় করেন। তার বায়েনামা মূলে জমির মালিককে ৮০% টাকা ইতোমধ্যে পরিশোধ করার পর বিক্রেতা মকসুদ আহম্মদ কর্তৃক জমির মালিকানা ও দখলীয় জমি ক্রেতার নিকট বুঝিয়ে দেন। ইতোমধ্যে বিহার পরিচালনা কমিটির প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বিহারের দ্বিতল ভবনের নির্মাণ কাজ ৯০% শেষ করেন। কিন্তু বিক্রেতা মকসুদ আহম্মদ উক্ত জমির রেজিস্ট্রারি দিতে নানান অজুহাত দেখিয়ে গড়িমসি করেন এবং জমি রেজিস্ট্রারি ছাড়া বাকি টাকা জমির ক্রেতা রতন কুমার বড়–য়ার কাছ থেকে পরিশোধ করার জন্য দাবি করছেন। এদিকে জমির ক্রেতা রতন কুমার বড়–য়া জানান যে, বাকি টাকা পরিশোধ করার সময়ে বিক্রেতা কর্তৃক জমির রেজিস্ট্রারি কার্য সম্পাদন করতে হবে। কিন্তু জমি বিক্রেতা মকসুদ আহম্মদ এতে রাজি না হয়ে গত ২৫ ফেব্র“য়ারি গভীর রাতে উক্ত বিহারের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে গভীর উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা দেখা দেয় এবং নিজ ধর্মীয় কাজে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় তারা মর্মাহত হয়ে পড়েন।
বৈঠক চলাকালে উক্ত বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি রতন কুমার বড়–য়া, সহ সভাপতি মৃণাল কান্তি বড়–য়া, সাধারণ সম্পাদক মানিক চন্দ্র বড়–য়া, সাংবাদিক সমীরণ বড়–য়া, বোধিপাল বড়–য়া, অধ্যাপক ডাক্তার পরিতোষ বড়–য়া, অধ্যাপক সুদত্ত মুৎসুদ্ধী, জিনানসু বড়–য়া, প্রকৌশলী তুষার কান্তি বড়–য়া, বিশ্ব প্রতাপ বড়–য়া, রঞ্জিত বড়–য়াসহ দেড়শতাধিক বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অতি আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে বৈঠকের সিদ্ধান্ত ও কাউন্সিলরের আদেশ উপেক্ষা করে নির্ধারিত সময়ে বিহারের তালা খোলা হয় নি। এমনকি এ রিপোর্ট লেখার পূর্ব মুহূর্ত অর্থাৎ গত কাল ৯ মার্চ বেলা ২টা পর্যন্ত বিহার তালাবদ্ধ ছিল। এ ঘটনাটি সবাইকে হতাশ করেছে। ধর্মাবলম্বীদের উপাসনায় ব্যাঘাত ঘটায় তাদের মাঝে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।