Connect with us

দেশজুড়ে

বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরের কার্যক্রমে স্থবিরতা

Published

on

Benapole_2_6344420661কামাল হোসেন, বেনাপোল: দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে আবারও শুরু হয়েছে বিদ্যুৎ বিপর্যয়। অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না এখানে। ফলে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে কারণে কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
বিদ্যুতের অভাবে মন্থর হয়ে পড়েছে দেশের প্রধান স্থলবন্দর বেনাপোল। থমকে যাচ্ছে সকল কার্যক্রম। নিয়মিত লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এখানকার কাস্টমস হাউজ, বন্দর, চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন, আবাসিক এলাকা, থানা, পাঁচ শতাধিক সিএন্ডএফ এজেন্ট, অসংখ্য সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, দোকানপাটসহ নানা ব্যবসায়ী স¤প্রদায়। আগে শুধুমাত্র সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লোডশেডিং হলেও বর্তমানে ভোর থেকে শুরু হচ্ছে লোডশেডিং। এছাড়াও স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনা ব্যাঘাত ঘটছে। ছাত্রছাত্রীরা প্রচন্দ গরম ও বিদ্যুতের অভাবে পড়াশুনা করতে পারছে না।
এ স্থলবন্দরে প্রতিদিন লোড-আনলোড হয় চার থেকে পাঁচ শ’ ট্রাক পণ্য। কাস্টমস হাউজে প্রতিদিন পণ্য খালাসের জন্য জমা হয় প্রায় দুই থেকে আড়াই শ’টি বিল অব এন্ট্রি। এসব নিয়ন্ত্রিত হয় কম্পিউটারের মাধ্যমে। বিদ্যুত বিভ্রাটের কারণে কম্পিউটার বিভাগ অচল হয়ে পড়ছে। প্রতিদিন ১০ হাজারেরও বেশি কাগজপত্র ফটোকপি করতে হয় আমদানি রফতানি সংক্রান্ত। ফলে আমদানি-রফতানিও ব্যাহত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। সেই সাথে সরকারের রাজস্ব আদায় ব্যাহত হচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে অন্যতম এ স্থলবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম মন্থর হয়ে পড়ছে। এ বন্দরে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে শুধু আমদানি-রফতানি কার্যক্রমই ব্যাহত হবে না, এর নেতিবাচক প্রভাব গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের উপরে পড়বে বলে ব্যবসায়ীরা মনে করছেন। বাংলাদেশের প্রধান স্থলবন্দর বেনাপোল হলেও বন্দরটি অনুন্নত। বিদ্যুতের অভাবে জেনারেটর নির্ভর হয়ে পড়েছে বেনাপোল বন্দর। ১৬০টি জেনারেটর বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর পরেও বিদুতের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে অনেক কাজ।
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর হিসাব অনুযায়ী বেনাপোল বন্দর সাব-স্টেশনের দৈনন্দিন চাহিদা ২০ মেগাওয়াট। সরবরাহ হচ্ছে ৪ থেকে ৬ মেগাওয়াট। তাও দিনে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ দিতে পারছে না পল­ীবিদ্যুৎ। অফিস আওয়ারে বেনাপোল বন্দর বিদ্যুৎ পাচ্ছে ৪-৫ ঘণ্টা। বাকি সময় বিদ্যুৎবিহীন। এ অবস্থা মোকাবেলা করছে বন্দর কর্তৃপক্ষের দুটি ও কাস্টমসের তিনটি জেনারেটর। বন্দর কর্তৃপক্ষের ২টি জেনারেটরে ৪৫০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। তবে জেনারেটরের বিদ্যুৎ দিনের বেলা ব্যবহৃত হয় না। জেনারেটর ব্যবহৃত হয় শুধু রাতে। এর ফলে বিদ্যুতের অভাবে দিনের অনেক কাজ ব্যাহত হয়।
বন্দরের একজন কর্মকর্তা জানান, বন্দরের কাজ কম্পিউটার নির্ভর। বিদ্যুৎ না থাকলে কম্পিউটার বন্ধ থাকে। এতে কাজের জট তৈরি হয়। কাস্টমস কর্তৃপক্ষের জেনারেটর বিদ্যুৎ না থাকলে ব্যবহৃত হয়। এর বাইরে সিএন্ডএফ এজেন্ট ও বাজারের বিভিন্ন দোকানপাট সচল রাখতে ব্যবহৃত হচ্ছে ভাড়া করা জেনারেটর। তাও সরবরাহ করা হচ্ছে সন্ধ্যা থেকে রাতে ১০টা পর্যন্ত। সিএন্ডএফ এজেন্টেরদের অফিসে প্রায় ১৫৫টি জেনারেটর বিদ্যুতের অভাব পূরণ করছে। স্থানীয় সোনালী ব্যাংকে জেনারেটর বসিয়ে কাস্টমস হাউজের ডিউটি সংক্রান্ত চালানসহ ব্যাংকের অন্যান্য কাজ করা হচ্ছে। এতে খরচ বাড়ছে সকলেরই।
শার্শা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মনোয়ারুল ইসলাম জানান, পিডিবির কাছ থেকে ঠিকমত বিদ্যুৎ সাপ্লাই না পাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। বেনাপোলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিকল্পনা সরকারের থাকলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। এর পরেও বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে বেনাপোলকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *