Connect with us

ঢাকা বিভাগ

মাদারীপুরে রাস্তার পাশে কোটি টাকার গাছ আড়াই লাখ টাকায় বিক্রির অভিযোগ

Published

on

মাদারীপুর প্রতিনিধি ॥madaripur-news-1

মাদারীপুর কালকিনি পৌর এলাকার কাশিমপুর বাজার থেকে উপজেলা পরিষদের পিছনের ফুট ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তার উপর কোটি টাকা মূল্যের ৪০২ টি মেহগিনি গাছ মাত্র ২ লাখ ৬১ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন পৌরসভার মেয়র এনায়েত হোসেন হাওলাদার। জমির মালিকদের না জানিয়ে একক ক্ষমতা বলে এমন টেন্ডার করেছে বলে স্থানীয় ও জমির মালিকরা অভিযোগ করেছেন। এই ঘটনায় তাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা গেছে।
সরেজমিন, পৌরসভা, স্থানীয় ও জমির মালিক হারুন মিয়া, কাঞ্চন হাওলাদার, মজিবুর রহমান হাওলাদার, ইউনুস সরদার গং, দলিল উদ্দিন বেপারী গং, তালু সরদার, এছব বেপারী, সাহাদাদ আকন ও নজরুল চৌকিদারসহ অর্ধশত ব্যক্তির অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে পৌরসভা প্রতিষ্ঠাকালিন সাবেক পৌর প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ যখন গাছ লাগান তখন বলেছিলেন জমির মালিক গাছের শতকরা ৬৫ ভাগ, পৌরসভা ৩০ ভাগ ও দেখাশোনা করার জন্য একটি বেসরকারী সংস্থা (এনজিও) পাবে ৫ ভাগ টাকা।
অথচ পৌরসভার মেয়র এনায়েত হোসেন এলাকার কাউকে না জানিয়ে রাস্তা বড় ও নতুন করে সংস্কারের নামে কোটি টাকার মেহগিনি গাছ নামমাত্র মুল্যে ২ লাখ ৬১ হাজার টাকায় লোক দেখানো টেন্ডারের মাধ্যমে গাছগুলো বিক্রি করে দেন।
অভিযোগ উঠেছে, ঐ গাছগুলো মেয়র তার ভাই মোশারেফ হোসেনের কাছে বিক্রি করেছেন। তবে মেয়র তা অস্বীকার করে বলেন, এই মোশারেফ হোসেন তার ভাই না। গাছ ক্রয় করেছেন পৌরসভার রাজদী এলাকার মোশারেফ হোসেন নামের এক ব্যক্তি।
পরে এ ব্যাপারে কালকিনি রাজদী এলাকার মোশারেফ হোসেনের কাছে গাছ ক্রয়ের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তো সিডিউল ক্রয় করেনি। তাহলে গাছ ক্রয় করলাম কিভাবে।
অপরদিকে গাছ কাটার স্থানে সরেজমিনে গেলে পৌরসভার মেয়র এনায়েত হোসেনের ভাই মোশারেফ হোসেন উপস্থিত না থাকলেও উপজেলা বিএনপি নেতা মো. সালাম ফরাজী বলেন, মেয়রের ভাই মোশারেফ আমাকে দেখার জন্য বলেছেন। তাই আমি দেখা শোনা করছি।
সরেজমিনে দেখা যায়, পরিবেশ বান্ধব সড়কটির ছায়া তলে প্রতিদিন হাজার হাজার লোকের চলাচল, কয়েকশত ছাত্র-ছাত্রী প্রতিদিন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে।
এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী কালকিনি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র আশিক, রিফাত, জসিম, সুমনসহ ২০/২৫ জন ছাত্র জানায়, আমরা প্রতিদিন কয়েকশত ছাত্র-ছাত্রী এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করি। গাছগুলো না থাকলে প্রখর রৌদ্রে আমাদের স্কুলে যাওয়া কষ্ট হয়ে পড়বে।
এলাকাবাসী বলেন, রাস্তাটি সংস্কার ও পাশে যদি একটু বড় করতে গেলেও গাছগুলো কাটতে হবে এমন কোন বিষয় ছিলো না। লুটপাট করে টাকা খাওয়ার জন্যই গাছগুলো বিক্রি করে দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী একজন ঠিকাদার বলেন, আমরা গত ২৭ মার্চ টেন্ডারে অংশগ্রহণ করি ৩ জন। তাতে মেয়র এনায়েত হোসেনের ভাই সিডিউল ক্রয় করেননি। অথচ তাকে কাজটি দেয়া হয়। মেয়র এনায়েত হোসেন তার ক্ষমতা বলে যা খুশি করে বেড়াচ্ছেন কেউ তাকে বাধা দিতে গেলে তাকেই মামলা জড়িয়ে হয়রাণী করেন।
সাবেক পৌর প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি যখন মাটি কেটে রাস্তাটি নতুন নির্মাণ করি তখনি গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেই এবং জমির মালিক, পৌরসভা ও একটি এনজিওকে সাথে নিয়ে গাছ লাগাই এখন মেয়র কিভাবে টেন্ডার করালেন তা আমি জানিনা।
এ ব্যাপারে পৌরসভার মেয়র এনায়েত হোসেন হাওলাদার ও তার ভাই মোশারেফ হোসেনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে বার বার কল দিলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *