ঠাকুরগাঁও
ময়নাতদন্তকারীর দাবি বানোয়াট: আফসানার পরিবার
রবিবার সকালে ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তা ও ঢাকা মেডিক্যালের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবুল খায়ের মো. সফিউজ্জামান আফসানার মৃত্যু আপাতদৃষ্টিতে আত্মহত্যা বলে গণমাধ্যমকে জানালে পরিবারের সদস্যরা বলেন, আমরা হতভম্ভ।
আফসানার ভাই ফজলে রাব্বী বলেন, ”আমরা হতভম্ভ। এলাকাবাসী যখন বলছে ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার শুনতে পেয়েছে তখন কীভাবে ময়নাতদন্তকারী এটাকে আত্মহত্যা বলতে পারলেন? আমি বিশ্বাস করি না আমার বোন আত্মহত্যা করেছে। ঘটনার পর তার বন্ধু হাবিবুর রহমান রবিন যে আচরণ করেছে এবং সমঝোতার চেষ্টা করেছে সেটার পর আত্মহত্যা ভাবার কোনো কারণ দেখি না।” যে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে সেটাকে ‘বানোয়াট’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ”ঘটনা তনুর হত্যাকাণ্ডের মতোই ঘটতে চলেছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে। আমরা এ প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করছি। শুরু থেকেই বলছিলাম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেখার পর আমরা হত্যা মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নেব। আশা করছি আজকের মধ্যে মামলা দায়ের করা সম্ভব হবে।”
এদিকে, আফসানা ফেরদৌস নিহত হওয়ার পর থেকেই ছাত্রলীগের তেজগাঁও কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান রবিন লাপাত্তা। গত শনিবার থেকেই কলেজে আসছেন না দাবি করেছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আর কলেজে সক্রিয় নেতা রবিনকে এখন আর নিজেদের কেউ বলে স্বীকারও করছে না ছাত্রলীগ। পরবর্তীতে জানা যায়, আফসানার রবিনের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন চলছিল। আফসানা সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসতে চাইছিলেন বলেও পরিবারের কাছে তথ্য ছিল। আফসানার মা বলেন, তাদের মধ্যে কোনো একটা বিষয়ে ঝামেলা চলছিল যা বন্ধুরা মিলে ঠিক করে দেয় কিছুদিন আগে। তারপরও কিছু ঝামেলা চলছিল বলে আমরা শুনেছিলাম। তবে আফসানা নিহত হওয়ার পর তার মানিকদির বাসার প্রতিবেশীরা জানান, আফসানা ও রবিন স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়েছিল। যদিও এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
গত ১৩ আগস্ট বিকেলে দুই যুবক সিএনজিতে করে আফসানাকে নিয়ে হাসপাতালের আসে। তবে জরুরি বিভাগে রোগী ভর্তির জন্য স্ট্রেচার নিয়ে আসতে বলে তারা সিএনজির ভাড়া মেটাতে যাচ্ছে বলে সরে পড়ে। কর্তব্যরত চিকিৎসক বলছেন, হাসপাতালে আনার আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার নিহত অবস্থায় পাওয়ার পর থেকে তার পরিবারের কাছে টেলিফোনে সমঝোতার প্রস্তাব যায় তেজগাঁও কলেজের সাংগাঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান রবিনের পক্ষ থেকে। এরপরই আফসানার পরিবারের শঙ্কা জানিয়েছিল, ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের নেতা হওয়ায় বিভিন্ন রিপোর্ট ও তদন্তে হস্তক্ষেপ করতে পারেন রবিন।