জাতীয়
যেভাবে হত্যা করা হয় ব্লগার নিলয়কে
রাজধানীর খিলগাঁওয়ের গোড়ান এলাকায় নিলয়কে হত্যা করা হয়। শুক্রবার দুপুরে ভাড়াটিয়া বেশে বাসায় ঢুকে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
ঘটনার পূর্বসূত্র জানাতে গিয়ে নিলয়ের স্ত্রী আশামনি বলেন, ‘মাসখানেক আগে আমার স্বামীর মোবাইলে কল করে হত্যার হুমকি দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। ব্লগার অনন্ত হত্যায় জড়িতদের বিচার দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে ফেরার পথেও তাকে দুই ব্যক্তি ফলো করেছিল।’
এক প্রশ্নের জবাবে যুবমৈত্রীর কেন্দ্রীয় কমিটির এ সদস্য জানান, ‘তিনি থানায় জিডি করতে গিয়েছিলেন। তবে পুলিশ জিডি নিয়েছিলো কিনা তা আমি জানি না।’
আজকের হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে নিলয়ের স্ত্রী বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘দুপুর ১২টার দিকে আমার স্বামী বাজার থেকে ফিরে ড্রয়িংরুমে ল্যাপটপ নিয়ে বসেন। এসময় আমি ছাড়াও আমার ছোটবোন তন্বী ছিলাম বাসায়।
তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে ২০-২১ বছর বয়সী জিন্সের প্যান্ট পরা এক যুবক দরজা খুলতেই বাসায় ঢোকেন। তিনি বাসা ভাড়া নেবেন বলে নিজ থেকেই দু’বার পুরো ফ্ল্যাট ঘুরে দেখেন। তখন আমি বলি, ‘আমরা তো বাসা ছাড়ছি না, বাসা ভাড়া নেবেন কীভাবে? বাড়িওয়ালাকেও তো এ বিষয়ে কিছু বলিনি।’
আশামনি বলেন, ‘এ সময় ওই যুবক বলেন- বাড়িওয়ালাই আমাকে দেখে যেতে বলেছেন বলে হাতে মোবাইলেও যেন কী যেন করছিলেন। আমি বিষয়টি ড্রয়িংরুমে আমার স্বামীকে জানাতে যাই।’
এইমধ্যে আরো তিন যুবক বাসায় ঢোকেন। এরমধ্যে একজনের মুখে দাঁড়িও ছিল। তারা ভেতরে ঢুকেই দরজা বন্ধ করে দেন। তিনজন যুবকের হাতে রামদা ও একজনের হাতে পিস্তল ছিল।
নিলয়ের স্ত্রী বলেন, ‘আমি ওই যুবককে চলে যেতে বললে সে পিস্তল বের করে আমাকে ভয় দেখায়। এরপর আমি নিলয়কে ঘটনাটি বললে সে এগিয়ে আসে। নিলয় বেরিয়ে যেতে বলতেই তারা তাকে দেখামাত্রই ওই চারজন রামদা দিয়ে কোপাতে শুরু করে। এ সময় তারা নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার স্লোগান দিচ্ছিল।’
তিনি বলেন, ‘একজন আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বারান্দায় রেখে ভেতর থেকে দরজা লক করে দেয়। একইভাবে অন্য রুম থেকে তন্বীকেও এখানে নিয়ে আসে। পরে এক সঙ্গে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে আমার স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করে চলে যায় তারা।’
আশামনি বলেন, ‘বারান্দায় আমি বারবার বাঁচাও, বাঁচাও বলে চিৎকার দিলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।’
স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে তিনি বলেন, ‘অতীতেও এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, কিন্তু বিচার হতে দেখিনি। বিচার হলে আজ আমার স্বামীকে হারাতে হতো না।’
বাংলাদেশেরপত্র/এডি/এ