দেশজুড়ে
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য-রেজিস্ট্রারসহ পাঁচ দপ্তরে তালা
বেরোবি প্রতিনিধি:
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন সংক্রান্ত জটিলতায় দ্বিতীয় দিনের মত গতকাল বৃহস্পতিবারও চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। সদ্য বেতন পেতে যাওয়া ৮১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর তালিকার মধ্যে নাম না থাকায় বেশকিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ২য় তলায় উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের দপ্তরসহ ৫টি দপ্তরে তালা লাগায়। ভবনের ২য় তলার দুই পাশের কেঁচি গেইটে তালা ঝুলানোর কারণে উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন, সংস্থাপন এবং ডিসপাচ শাখার কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিস করতে পারেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. শাহীনুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই তালা লাগানো হয়। কারণ হিসাবে তিনি বলেন, গত সিন্ডিকেটে দীর্ঘদিন বেতন না পাওয়া এডহক ও মাস্টাররোলের ১৫২ কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ইউজিসির নির্দেশ অনুযায়ী থাকা জ্যৈষ্ঠতার ভিত্তিতে ৮১ জনকে পূর্বের বকেয়া বেতনাদিসহ বেতন দিতে সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই ৮১ জনের মধ্যে যাদের নাম নেই তাদের মধ্য থেকে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী বেতনের দাবিতে তালা লাগায়। তবে এদিকে একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, যারা এই তালা লাগিয়েছে তারা সবাই বেতনভুক্ত এবং পূর্বে সংঘটিত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপাচার্য অপসারণের দাবিতে আন্দোলনরত তথা বেতনের দাবিতে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া উপাচার্যপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারী। নির্বাচিত ৮১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে নিজেদের সুপারিশ ও পছন্দ অনুযায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম না থাকা তালা লাগানোর প্রধান কারণ বলে জানিয়েছে সূত্রটি। সূত্রে আরো জানা যায়, এই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মোট ১১ জনের একটি নামের তালিকা উপাচার্যকে প্রদান করেছিল। এই ১১ জনের মধ্যে সূত্র মতে ৫ জনের নাম আসলেও বাকী ৬ জনের নাম আসেনি। সমস্যা সমাধান করে তালা খোলার ব্যাপারে কি পদক্ষেপ নেয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে মো. শাহীনুর রহমান জানান, আজ (বৃহস্পতিবার) রাতে উপাচার্য ঢাকা থেকে ফিরে আসলে আগামীকাল (শুক্রবার) সকাল সাড়ে ১০ আন্দোলনকারীদের সাথে বসে আলোচনা করা হবে। ফলে আজ (বৃহস্পতিবার) তালা খোলার কোন সম্ভাবনা নেই।
এ ব্যাপারে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার(ভারপ্রাপ্ত) মোর্শেদ উল আলম রনিকে বেশ কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরবর্তীতে আবারও চেষ্টা করলে তার ফোনের সুইচ অফ পাওয়া যায়। তবে এর আগের দিন বুধবার দুপুর প্রায় ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন কর্মচারী রেজিস্ট্রার দপ্তরে গিয়ে বেতন সংক্রান্ত বিষয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি অতঃপর কিছক্ষণের জন্য রেজিস্ট্রার দপ্তর সহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি কক্ষে তালা লাগানোর ঘটনায় তিনি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু কর্মচারী বেতন সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে আসেন। কিন্তু যে বিষয়ে তারা জানতে এসেছিল সেটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং বলায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এদিকে এই ঘটনা ঘটার পরপরই রেজিস্ট্রার দপ্তরের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ২৫ মাসেরও অধিক সময়ে পূর্বের উপাচার্যের আমলে নিয়োগ পাওয়া ১৫২ কর্মকর্তা-কর্মাচারী বেতন পাননি। গত সিন্ডিকেট মিটিং এ দীর্ঘদিন বেতন না পাওয়া এডহক ও মাস্টাররোলের ১৫২ কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ইউজিসির নির্দেশ অনুযায়ী জ্যৈষ্ঠতার ভিত্তিতে ৮১ জনকে পূর্বের বকেয়া বেতনাদিসহ বেতন দিতে সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ সেই ৮১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন দেয়া হচ্ছে।