দেশজুড়ে
লক্ষ্মীপুরের শত পরিবারের স্বপ্ন মেঘনায় বিলীন
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরে উপকূলীয় মেঘনা নদীর তীরে শত শত পরিবারের স্বপ্ন মেঘনায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নদী ভাঙ্গনের ফলে কেউ বা হারাচ্ছে ঘর-বাড়ি, বসত-ভিটা, ফসলের মাঠ, গাছ-পালা, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাবা-মা এমনকি পূর্বপুরুষের শেষ ঠিকানা (কবর) টুকুও। কোথাও একটু মাথা গোঁজাবার ঠাঁই নেই সর্বহারা মানুষগুলোর।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কমলনগর উপজেলার চর ফলকন ইউনিয়নের লুদুয়া বাজার নদীমাতৃক এলাকার এমন এক করুণ দৃশ্য। প্রবল জোয়ারের স্রোতে অসংখ্য ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাটসহ পাড় ভেঙ্গে নদী গর্বে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই কিছু না কিছু ভূখণ্ড বিলীন হয়ে স্মৃতিতে স্থান করে নিচ্ছে। মেঘনাপাড়ে এসব করুণ দৃশ্য স্বচোখে উপলব্ধি করতে গিয়ে হঠাৎ দেখা মিলে ৭৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ শফিকুল ইসলামের সাথে। নদী ভাঙ্গন সম্পর্কে কথা তুলতেই তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, এ রাক্ষসী মেঘনা নদী এ পর্যন্ত ৭ বার আমার ঘর-বাড়ি ও জায়গা-জমি তলিয়ে নিলো। আমার পূর্বপূরুষ বাবা-মা, এমনকি স্ত্রী ছাহেদা বেগমের কবরটাও এ মেঘনা গ্রাস করেছে। আজ আমার অন্যের জমিতে ঘর তুলে থাকতে হয়। যেকোন মুহূর্তে এ রাক্ষসী মেঘনা আবার আমার থাকা এ ঘরটুকু কেড়ে নিতে পারে। এসব কথা বলতে গিয়ে তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
চর ফলকন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ এন এন আশরাফ উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তাব্যক্তিদের নজরদারির অভাবে আজ আমার ইউনিয়ন নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আমার এলাকার নদী ভাঙ্গনের বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত ও মৌখিকভাবে অনেকবার বললেও এখন পর্যন্ত কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয় নি।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়ারুল হাসানের সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি চর ফলকন ইউনিয়নের লুদুয়াবাজার মেঘনা নদী ভাঙ্গনের বিষয়টি আমার জানা নেই বলে তিনি এড়িয়ে যান এবং সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
রামগতি-কমলনগর আসনের সংসদ সদস্য আবদুল্যা আল মামুন এমপি চর ফলকন ইউনিয়নের লুদুয়াবাজার মেঘনা নদী ভাঙ্গন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে লুদুয়া বাজার এলাকার নদী ভাঙ্গন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান করবো।