Connect with us

দেশজুড়ে

লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যায় উন্নতীকরণ ১১ মাস ফাইলবন্দি

Published

on

Narail-03

নড়াইল ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট: নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যায় উন্নতীকরণ কার্যক্রম ১১মাস ধরে ফাইলবন্দি হয়ে আছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিতভাবে জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি। এছাড়া চিকিৎসক, সেবিকাসহ (নার্স) অন্যান্য জনবলও সংকট রয়েছে। এ কারণে যথাযথ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রায় তিন লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত লোহাগড়া উপজেলাবাসী। কবে চালু হবে তাও জানে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যার উন্নতীকরণের লক্ষ্যে প্রায় ১০ বছর আগে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিনতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ শুর” হয়। ৭ কোটি ১৭ লাখ ৩৪১ টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত ভবনটি ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এরপর ৫০ শয্যার কার্যক্রম চালু করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে লিখিতভাবে জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি। ৫০ শয্যার জন্য অনুমোদন দেয়া হয়নি চিকিৎসক, সেবিকা, শয্যা (বেড), খাবারসহ অন্যান্য বরাদ্দ। এ কারণে তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে আছে নবনির্মিত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।

এদিকে, ৫০ শয্যার কার্যক্রম চালু না হওয়ায় কাঙ্খিত চিকিৎসাসেবা দিতে পারছেন না চিকিৎসক ও সেবিকারা। এমনকি ভর্তিকৃত রোগিদের ঠিকমতো খাবারও দেয়া সম্ভব হচ্ছে। রাতে নিরাপত্তারও অভাব রয়েছে। এদিকে, ৩১ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসকের নয়টি পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন চারজন। প্রায় সাতমাস যাবত আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পদ শূণ্য রয়েছে। নেই কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। বর্তমানে চারজন চিকিৎসক, দু’জন সেবিকা পরিদর্শক (নার্সিং সুপারভাইজার), নয়জন জৈষ্ঠ্য সেবিকা (সিনিয়র নার্স) জর”রি বিভাগ, বহিঃর্বিভাগ, অস্ত্রোপচারসহ (অপারেশান থিয়েটার) ভর্তিকৃত রোগিদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন সবাই। প্রতিদিন সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শত রোগির চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন তারা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ নাজমুন নাহার জানান, এখানে চিকিৎসকদের সহকারীসহ দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। রাতের বেলা নিজস্ব বিদ্যুৎ ব্যবস্থার অভাবে এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় রাতের বেলায় নারী চিকিৎসকদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সহকারী সার্জন ডাঃ শেখ আবুল হাসনাত বলেন, চিকিৎসক সংকটের কারণে লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক হওয়া সত্ত্বেও আমাকে এখানে (লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স) দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। আমাদের প্রতিদিন সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শত রোগি দেখতে হয়।

জৈষ্ঠ্য সেবিকা বিজলী রানী পাইক জানান, বর্তমানে ৩১ শয্যার কার্যক্রম চালু থাকলেও প্রায়ই ১০০ রোগি ভর্তি হন। জরুরী বিভাগ ও অস্ত্রোপচারের রোগিসহ অন্যান্য চিকিৎসাসেবা নয়জন সেবিকার পক্ষে কঠিন হয়ে যায়। এ কারণে একজন সেবিকাকে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়। এখানে ওয়ার্ডবয়সহ পরিচ্ছন্নকর্মী দরকার।

সেবিকা পরিদর্শক রাজিয়া খানম বলেন, জনবল সংকট থাকায় একদিকে সেবিকা থাকলে, অন্যদিকে থাকতে পারেন না। রাতে দায়িত্ব পালনের পর আবার তাকে সকালে আসতে হয়। তিনজন সুইপার থাকায় ঈদের সময়ও তাদের ছুটি দিতে পারি না। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ইউনুস মোল্যা বলেন, জনবল সংকট থাকায় আমরা চিকিৎসকদের ঠিকমত সহযোগিতা করতে পারছি না। ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ লুৎফুন নাহার বলেন, রোগির খাবার নিয়ে খুব সমস্যা হচ্ছে। কারণ, এখানে ৩১ শয্যার বেশি খাবার বরাদ্দ না দেয়ায় ভর্তিকৃত সব রোগিকে খাবার দিতে পারছি না। এতে খাবার বঞ্চিত রোগিদের প্রতিনিয়ত প্রশ্ন শুনতে হচ্ছে-আমাকে (রোগি) কেন খাবার দেয়া হয় না? খাবারের বিষয়টি তাদের বোঝাতে গিয়ে এবং প্রতিদিন রোগির অনেক চাপ থাকায় চিকিৎসা দিতে গিয়ে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। সিভিল সার্জন ডা: সুব্রত কুমার সাহা বলেন, চিকিৎসকসহ অন্যান্য জনবল মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন না দেয়ায় আমরা এটি চালু করতে পারছি না। এতে করে প্রতিনিয়ত রোগির চাপ থাকছে। তাদের (রোগি) ঠিকমত খাবার ও শয্যা দিতে পারছি না। আমি মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছি। লিখিত ভাবে জানিয়েছি। এখন মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদনের ব্যাপার।

বাংলাদেশেরপত্র/এডি/আর

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *