Connect with us

খেলাধুলা

স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে টাইগারদের জয়: সামনে কোয়ার্টার ফাইনালের হাতছানি

Published

on

Bangladesh v Scotland - 2015 ICC Cricket World Cupস্পোর্টস ডেস্ক:

নিউজিল্যান্ডের নেলসনে গত কাল টসে জিতলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি। এবারের বিশ্বকাপে এপর্যন্ত কোনো ম্যাচ না জিতলেও বরাবরই ভাল খেলে আসা স্কটিশরা টাইগারদের বিরুদ্ধেও ৩১৮ রানের লড়াই উপযোগী সংগ্রহ গড়ে তুলতে সক্ষম হন। কিন্তু লক্ষ্যটা ৩১৯ হলেও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিজেদের যোগ্যতার পরিচয় দেন টাইগার সদস্যরা। বিশ্বকাপের সাতাশতম ম্যাচে ১১ বল আর ৬ উইকেট হাতে রেখেই আরও একটি ম্যাচে জয়ের পয়েন্ট নিজেদের করে নেন মাশরাফি বাহিনী।বিশ্বকাপের আসরে ১৬ বছর পর নিউজিল্যান্ডের নেলসনের সেক্সটন ওভালে টাইগাররা আবারও মুখোমুখি হয় স্কটল্যান্ডের। ১৯৯৯ সালে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষেই এসেছিল বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম জয়। ২০০৬ সালে অবশ্য দ্বিপাক্ষীয় সিরিজে বাংলাদেশ-স্কটল্যান্ড দু’বার মুখোমুখি হয়েছিল। দুটি ম্যাচেই সহজ জয় পায় টাইগাররা। ওই সিরিজে খেলা মাশরাফি, সাকিব ও মুশফিক রয়েছেন এবারের বাংলাদেশ শিবিরে।গত কাল টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে স্কটল্যান্ড ৮ উইকেট হারিয়ে ৩১৮ রানের ভাল স্কোর গড়ে তোলে। স্কটিশদের হয়ে ১৫৬ রানের ঝকঝকে একটি ইনিংস খেলেন ওপেনার কোয়েটজার। স্থায়ীভাবে ক্রিজে দাঁড়তে না পারলেও দলের অন্যরা তার সাথে কম বেশী রান যোগ করতে সমর্থ হন।
টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া বাংলাদেশের শুরুটা দারুণ হয়েছিল। ৩৮ রানে স্কটল্যান্ডের দুই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেয় টাইগার বোলাররা। তৃতীয় ওভারেই মাশরাফি বিন মুর্তজার বলে কাভারে মাহমুদুল্লাহর হাতে ধরা পড়েন ক্যালাম ম্যাকলয়েড। দশম ওভারে আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। হ্যামিশ গার্ডিনারকে সৌম্যর ক্যাচে পরিণত করেন এই তরুণ পেসার। ৩৮ রানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া স্কটল্যান্ড প্রতিরোধ গড়ে কোয়েটজার ও ম্যাট মাচানের ব্যাটে। তৃতীয় উইকেটে ৭৮ রানের জুটি গড়েন তারা। প্রথমবারের মতো বল করতে এসেই ১৪.১ ওভার স্থায়ী জুটি ভাঙেন সাব্বির। মাচানের ফিরতি ক্যাচ নিয়ে ওয়ানডেতে নিজের প্রথম উইকেট নেন এই লেগস্পিনার। চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক প্রেস্টন মমসেনের সঙ্গে কোয়েটজারের ১৪১ রানের দারুণ জুটিতে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে যায় স্কটল্যান্ড। ৩৮ বলে ৩৯ রান করে মমসেনকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা নাসির হোসেন। পরে কোয়েটজারকেও ফেরান তিনি। ১৩৪ বলে ১৭টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১৫৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন কোয়েটজার। উদ্বোধনী এই ব্যাটসম্যানের শতকটি বিশ্বকাপের ইতিহাসে স্কটল্যান্ডের কোনো ব্যাটসম্যানের প্রথম। ম্যাথু ক্রসের সঙ্গে অ্যান্ডি বেরিংটনের ৩৯ রানের জুটিতে তিনশ’ রান পার হয় স্কটল্যান্ডের সংগ্রহ। ১৬ বলে ২৬ রান করা বেরিংটনকে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি করে নিজের দ্বিতীয় উইকেট নেন তাসকিন। তাসকিনের সেই ওভারের প্রথম বলে জীবন পেলেও শেষ বলে আর পারেননি ক্রস। সাব্বিরের ক্যাচে পরিণত হয়ে বিদায় নেন তিনি। ৪৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে তাসকিনই বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার।স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১৯ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে বাংলাদেশ দল মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়। বিশ্বমঞ্চে লাল-সবুজদের হয়ে রেকর্ড রান তাড়া করে জয় ছিনিয়ে নেয় মাশরাফি বাহিনী। ১১ বল হাতে রেখেই ৬ উইকেটের জয় পায় টাইগাররা। গ্র“প পর্বের তলানিতে থাকা স্কটিশদের হারিয়ে গ্র“প পর্ব পেরোনোর রাস্তাটা আরও সুগম করলো টাইগাররা। আর টাইগারদের জয়ের বন্দরে নিয়ে যেতে ব্যাট হাতে দারুণ ইনিংস খেলেছেন তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান আর সাব্বির রহমান।
স্কটল্যান্ডের ছুঁড়ে দেওয়া ৩১৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকার। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে জোস ড্যাভের বলে উইকেটের পিছনে ক্রুসের গ্লাভসবন্দি হয়ে ফেরেন সৌম্য। সৌম্য মাত্র দুই রান করে আউট হলেও প্রাথমিক ধাক্কা সামলে তামিম-রিয়াদ জুটি ভালোই এগিয়ে নিচ্ছিলেন দলকে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের রেকর্ড জুটি গড়ে ওয়ার্ডল’র বলে বোল্ড হয়ে রিয়াদ সাজঘরে ফিরলেও, ততক্ষণে বাংলাদেশের দলীয় স্কোর ১৪৪ তে দাঁড়ায়। এ দু’জন মিলে ১৩৯ রানের জুটি গড়েন।
এর আগে ৫ চার ও এক ছক্কায় ক্যারিয়ারের ১২তম অর্ধশতক হাঁকান রিয়াদ। শেষ পর্যন্ত শতভাগ স্ট্রাইক রেটে ৬২ বলে ৬২ রান করে সাজঘরে ফেরেন রিয়াদ। আউট হওয়ার আগে ৬টি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান তিনি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৮তম অর্ধশতক করে বাঁহাতি ওপেনার তামিম ইকবাল ৯৫ রান করে ফেরেন। তামিমের এ ইনিংসটি বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের একক ইনিংস সর্বোচ্চ রান। ড্যাভের বলে এলবি’র ফাঁদে পড়ে আউট হওয়ার আগে তামিম ১০০ বলে ৯টি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান। দলীয় ২০১ রানের মাথায় টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল ফিরে গেলে ব্যাটিংয়ের দায়িত্ব নেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিম। ওয়ার্ডল’র বলে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ২০তম অর্ধশতক তোলা মুশফিক বিদায় নেন ব্যক্তিগত ৬০ করে। ৪২ বলের মুশফিকের এ ইনিংসে ছিল ৬টি চার আর দুটি ছয়। দলকে জয়ের বন্দরে নিতে সাকিব অপরাজিত থাকেন ৫২ রানে। আর সাব্বির ৪২ রান করে সাকিবকে যোগ্য সঙ্গ দেন। পাওয়ার প্লে’র ১০ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় এক উইকেট হারিয়ে ৬২ রান। ২০ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় এক উইকেট হারিয়ে ১২৩ রান। আর ৩০ ওভার শেষে টাইগাররা তোলে দুই উইকেটে ১৯১ রান। ৪০ ওভার শেষে টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে টাইগাররা তোলে ২৫২ রান।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *