দেশজুড়ে
‘হেই মিয়া আমরার কিয়ের ঈদ?’
নেত্রকোনা প্রতিনিধি:
‘হেই (এই) মিয়া আমরার কিয়ের (কিসের) ঈদ? সারাবছরে পেডে ( পেটে) দুই বেলা ঠিকঠাক দিতারি না (দিতে পারি না); আপনে আইছইন (এসেছেন) ঈদ লইয়া (নিয়ে)। আমরার (আমাদের) কোন ঈদটিদ নাই।’
রাগে দুঃখে আর নিজের প্রতি নিজের জমানো ক্ষোভ থেকে কথাগুলো বলছিলেন নেত্রকোনা বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের লামাপাড়া গ্রামের মো. ঈসমাইল মিয়া (৭০)।
একই গ্রামের ৬ কন্যা সন্তানের জনক মো. সজল মিয়া (৪৫) বলেন, শহরের বড়লোহের (ধনীব্যক্তি) সন্তানের এক জোড়া স্যান্ডেল কিনতেই ৫-১০ হাজার ট্যাহা খরচ করে আর আমরা ঈদে নিজের সন্তানের লাইগ্গা (জন্য) ৫ ট্যাহার সামাই ( সেমাই) কিনতারি না। এই হইলো আমরার ঈদ।
ফেরদৌসি বেগম (৩৫) বলেন, বছর বছর এহেক (এক-এক) জনরে ভোট দিয়া গেরামের চেয়ারম্যান আর মেম্বার বানাই কিন্তু তারা চেয়ারডা পাইলে আমরার কথা আর মনে রাহে (রাখে) না। পুলাপানডি (বাচ্চারা) কানতাছে ঈদের কাপড়চোপড় আর সামাই কিননের লাইগ্গা। জনপ্রতিনিধি হিসাবে হেদের (তাদের) কি আমরার (আমাদের) উপর কোন দায়িত্ব কর্তব্য নেই?
ছোট্ট শিশু শিরিন আক্তার (৯) ঈদ সম্পর্কে প্রশ্নের মুখে বলে, ঈদ মানে সারাদিন খেলাধুলা। অপর শিশু সুমাইয়া জাহান (৭) বলে, ঈদ মানে হাতে মেহেদী পড়ে সারাদিন গ্রাম ঘুরে বেড়ানো! এই হচ্ছে বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের লামাপাড়া গ্রামের শতাধিক পরিবারের ঈদচিত্র। এখানকার শিশুরা ঈদ উদযাপন করা তো দূরের কথা, ঈদ শব্দের অর্থই খুঁজে পায় না!