দেশজুড়ে
৬৮ বছর পর বন্দি জীবনের অবসান ছিটমহলবাসীর
৬৮ বছরের গ্লানি মুছে প্রায় সাড়ে ৪৪ হাজার মানুষ পেল স্বাধীন দেশের নাগরিকত্ব। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৬২টি ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে দু’দেশের মানচিত্রও পেল স্থায়ী রেখা। সেই সঙ্গে কালের গহবরে চিরতরের জন্য হারিয়ে গেল ছিটমহল শব্দটি। সেই মাহেন্দ্রক্ষণে বাংলাদেশের ভিতরে থাকা ভারতের ১১১টি ছিটমহলের ১৭ হাজার ১৬০ একর জমি চিরতরের জন্য হয়ে গেল বাংলাদেশের। সেখানে উড়বে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অভ্যন্তরের দাসিয়ারছড়া ছিটমহলে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় পতাকা নামিয়ে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে ছিটবাসীরা।
এর আগে বিশেষ এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর বিশেষ মোনাজাত ও মিলাদ মাহফিল এবং সুবিধামত সময়ে মন্দিরে প্রার্থনার মধ্যে দিয়ে উৎসব আয়োজন শুরু হয়। এরপর ধারাবাহিকভাবে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে নৌকাবাইস, ঘোড়-দৌড়, লাঠি খেলা। সূর্যাস্তের সাথে সাথে ছিটমহলগুলোতে শুরু হয় আলোকসজ্জ্বা, রাস্তায় রাস্তায় মশাল প্রজ্জ্বলন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বাংলাদেশের মূল ভূখন্ডের মানচিত্রে যুক্ত হয়েছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় দাসিয়ারছড়া ছিটমহলের ১৯শত ৪৩ একর জমি এবং জনগনণা অনুযায়ী প্রায় ৭ হাজার ৬৯ জন ছিটবাসী। এছাড়া ভুরুঙ্গামারীর ১০টি ছিটমহলের প্রায় ৩শত ২৩একর জমির সাথে যুক্ত হয়েছে ১ হাজার ৫১৩ জন মানুষ। জেলা সদরের ডাকুয়ারকুটি ছিটমহলের জনবসতি না থাকলেও ১৩ দশমিক ৪৮ একর জমি জেলার মানচিত্রে যুক্ত হয়েছে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১১১টি ছিটমহলে যৌথ জনগনণা অনুযায়ী জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ৪৪৯ জন। সেই ছিটমহল থেকে ভারতের মূল ভূখন্ডে যেতে নিবন্ধিত হয়েছে ৯৭৯ জন ছিটবাসী। এর মধ্যে কুড়িগ্রামের ১০টি ছিটমহলের ৩১৭ জন। শুধু দাসিয়ার ছড়ারই ২৮৪ জন। কুড়িগ্রামে ১০টি ছিটমহল থেকে ১৫৮ জন হিন্দু এবং ১৫৯ জন মুসলমান পরিবারের সদস্য ভারতে যাওয়ার জন্য নিবন্ধিত হয়। অপরদিকে ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশি ৫১টি ছিটমহলের প্রায় ১৪ হাজার মানুষের কেউ বাংলাদেশে আসেনি।
বাংলাদেশেরপত্র/এডি/এ